বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নতুন কোচ হিসেবে রাসেল ডমিঙ্গোকেই নির্বাচন করল বিসিবি। আজ সংবাদ সম্মেলনে নতুন কোচ হিসেবে ডমিঙ্গোর নাম জানান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। তাঁর সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেছে বিসিবি। ২১ আগস্ট বাংলাদেশের কোচ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজে যোগ দেবেন ৪৪ বছর বয়সী ডমিঙ্গো। এর আগে বিসিবিতে সাক্ষাৎকার দিতে ঢাকায় এসেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এ কোচ।
সাক্ষাৎকারে ডমিঙ্গো দুই ভাবে তাঁর পরিকল্পনা তুলে ধরেছিলেন বিসিবির পরিচালকদের সামনে। একটি পরিকল্পনা ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে। আরেকটি ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপকে লক্ষ্য রেখে। তাঁর পরিকল্পনা ভালোই লেগেছে বলে তখন জানিয়েছিলেন সাক্ষাৎকার বোর্ডে উপস্থিত বিসিবির এক পরিচালক। শুরুতে অনেকের নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোচ হওয়ার দৌড়ে টিকে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক কোচ মাইক হেসন ও ডমিঙ্গো। দুজনের মধ্যে শুধু ডমিঙ্গোই ঢাকায় এসে সাক্ষাৎকার দিয়ে গেছেন।
বড় পর্যায়ে ক্রিকেট না খেললেও কোচিংয়ের ভালো অভিজ্ঞতা রয়েছে ডমিঙ্গোর। খেলা ছাড়ার পর অর্জন করেন স্পোর্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং মার্কেটিংয়ের ওপর ডিগ্রি। এরপর মাত্র ২৫ বছর বয়সেই দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন প্রভিন্স যুব দলের কোচের দায়িত্ব পেয়ে যান তিনি। পরের ১২ বছরে দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৯ , বি দল ও এ দলের দায়িত্ব পালন করেন ডমিঙ্গো। ২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া দল ওয়ারিয়র্স কোচের দায়িত্বও পান তিনি। ২০১১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ হন গ্যারি কারস্টেন। তখন ডমিঙ্গোকে নিজের সহকারী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। এক বছরের মাথায় সহকারী কোচ থেকে টি-টোয়েন্টি দলের হেড কোচে উন্নীত হন ডমিঙ্গো। ২০১৩ সালে গ্যারি কারস্টেনের বিদায়ের পর তিন সংস্করণেই দক্ষিণ আফ্রিকার প্রধান কোচের দায়িত্ব পান ডমিঙ্গো। তাঁর অধীনে ১৩ টেস্ট সিরিজের ৮টিতে জয়ী হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান থেকে সাতে নেমে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুইয়ে টেনে তুলেছিলেন ডমিঙ্গো।
ডমিঙ্গোর সময়ে ২২ ওয়ানডে সিরিজের ১৪টিতে জয়ী হয়ে ওয়ানডেতে শীর্ষ দল হিসেবে জায়গা করে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপের নকআউট ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র জয়টি আসে তাঁর সময়েই। টি-টোয়েন্টিতে ৪২ ম্যাচের মধ্যে ২৩ জয় এসেছে এ সময়। তাঁর অধীনে ২০১৫ বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০১৭ সালে ওটিস গিবসনের হাতে দায়িত্ব দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দল ছাড়েন ডমিঙ্গো। উপমহাদেশের কোনো দলের সঙ্গে এর আগে কাজ করেননি ডমিঙ্গো। দক্ষিণ আফ্রিকার বাইরেও কোনো দলের সঙ্গে কাজ করেননি তিনি। তাঁর কোচিংয়ে বিশেষ ব্যাপার হলো, ক্রিকেটারদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে মিশে যান, কিন্তু ক্রিকেটাররা যেন তাদের দায়িত্ব পালন করেন সেদিকেও সর্বদা খেয়াল রাখেন।