আমাদের দেশে কিডনি রোগী দিন দিন বেড়েই চলছে। এর কারন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার সহ অনেক কারনে। এই রোগের চিকিৎসার জন্য অনেক খরচ হয়ে যায় রোগীদের। চিকিৎসার পাশাপাশি খাবারের অনেক নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয়। মাংশ, ডাল এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে বারন করে থাকেন। এদের মধ্যে
কামরাঙা অন্যতম। এদেশে টক জাতীয় কিছু ফলের মধ্যে কামরাঙা অন্যতম। এই ফলে আছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, সুগার, সোডিয়াম, এসিড ইত্যাদি। এর বৈজ্ঞানিক নাম
Carambola. এই ফলটি বিশেষ করে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভারত, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা অঞ্চলের একধরণের স্থানীয় প্রজাতির উদ্ভিদের ফল ও এই ফল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-প্রশান্ত এবং পূর্ব-এশিয়া অংশে খুব জনপ্রিয়।
কিন্তু জানেন কি সকলের জন্য এই ফল খাওয়া সুবিধাজনক নয়। যাদের যদি কিডনির সমস্যা থাকে তাদেরএই ফল খাওয়া ঠিক হবে না। শুধু কিডনির সমস্যায় ভোগা রোগীরাই নয়, কিডনিকে সার্বিক ভাল রাখতেও এই ফলকে ‘নিষিদ্ধ’ বলে জানালেন ব্রাজিলের সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। তবে সাও পাওলো একা নয়, এর আগে চিন ও মার্কিন অনেক গবেষকও এই একই কথা বলেছেন।
বাংলাদেশের চিকিৎসকরাও এর জন্য প্রচারনা করেছেন। আপনি BIRDEM হাসপাতালে গেলে দেখবেন একটা পোস্টার, যাতে কিডনি সমস্যা আছে এমন রোগীদেরকে কামরাঙা খেতে বারন করা হয়েছে।
কামরাঙায় থাকা নানা উপাদানের মধ্যে এন্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন সি, সাইট্রিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ইত্যাদি উপকারী উপাদান থাকে। কিন্তু রয়েছে ‘ক্যারামবক্সিন’ নামের এক টক্সিনের উপস্থিতিও। মূলত, এই কারণেই কামরাঙাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে চিকিৎসকদের ধারনা।
কিডনির রোগে মুলত কিডনির কার্য্যক্ষমতা নষ্ট হ্যে যায়। ফলে শরীরের বর্জ পদার্থ বেড়ে যেতে থাকে। Serum Creatinine বাড়তে থাকে। রক্তের Electrolyte এ সমস্যা দেকগা দেয়, Pottasium বেড়ে যেতে থাকে যা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ।
কামরাঙা কীভাবে ক্ষতি করে? ক্যারামবক্সিন মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। কামরাঙা খাওয়ার ফলে তা শরীরে প্রবেশ করে। কিডনির শরীরের বর্জ্যের সঙ্গে এই টক্সিনকে বার করে দেয়। কিন্তু কিডনি দুর্বল হলে সেই কাজ সে ঠিক মতো করতে পারে না। ফলে রক্তের মাধ্যমে ওই টক্সিন মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। যাদের আগে থেকেই কিডনির সমস্যা রয়েছে, তারা যদি অল্প পরিমাণ কামরাঙ্গার রস বা কয়েক টুকরা কামরাঙ্গা খান তাহলে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। মাথা যন্ত্রণা থেকে শুরু করে খিঁচুনি, মস্তিষ্ককোষের ক্ষতি হয়ে কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে পারেন। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। রক্তের Pottasium বেড়ে যেতে পারে, এক্ষেত্রে অনেকেরই Dialysis এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।যাদের ক্রনিক কিডনি ডিজিজ বা ক্রনিক কিডনি ফেইলিউর রয়েছে, কামরাঙ্গা খেলে অজ্ঞান পর্যন্ত হয়ে যেতে পারেন। এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। আমাদের অনেকের অল্প অল্প কিডনির সমস্যা থাকে যা আমাদের অজ্ঞতার কারনে অনেক সময় তা জানিনা। তখন এই অল্প সমস্যাটা এই ফল খাবার কারনে কিডনির সমস্যা অনেক বেশি বেড়ে যায়। তাই যাদের কিডনির সমস্যা আছে তারা সচেতন হোন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি এড়িয়ে চলুন। (তথ্যসূত্র ইন্টারনেট)
ডাঃ মুহাম্মাদ আবিদুর রহমান ভূঞা,
লিভার বিশেষজ্ঞ, আর পি মেডিসিন,
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
কিশোরগঞ্জে।
Source :
http://drabedurzimi.com/%e0%a6%af%e0%a7%87-%e0%a6%ab%e0%a6%b2%e0%a6%9f%e0%a6%bf-%e0%a6%96%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a7%87-%e0%a6%86%e0%a6%aa%e0%a6%a8%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a1%e0%a6%a8%e0%a6%bf-%e0%a6%a8/?fbclid=IwAR0L3zPBkLILf1NUu6n-pkj4bpXlYUZ2efUecl389FVXQLhzEicQoMkBH60