নবজাতকের টিকা

Author Topic: নবজাতকের টিকা  (Read 2401 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
নবজাতকের টিকা
« on: January 02, 2012, 01:42:42 PM »
একটি টিকা। সে আর এমন কী। দিলেই হবে একসময়। এভাবে মনে করতে করতে হয়তো আপনার নবজাতকটিকে সময় মতো আর টিকা দেওয়া হলো না। কিন্তু এই টিকাগুলোই নবজাতকের জীবন বাঁচাতে যথেষ্ট। ধনুষ্টংকার, হাম, যক্ষ্মার মতো রোগগুলোকে রাখবে দূরে সরিয়ে। আপনার সন্তানকে সুস্থ, স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করবে।
জাতীয় রোগ প্রতিরোধ ও সামাজিক চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানের (নিপসম) রোগতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইকবাল কবীর বলেন, ‘শিশুদের জীবননাশকারী কিছু রোগ আছে। এই রোগগুলোকে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব। এই রোগগুলো থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্যই যথাসময়ে কটি টিকা দেওয়া উচিত।’
এক বছরের মধ্যে মোট সাতটি রোগের টিকা নিতে হবে। সরকারি উদ্যোগে টিকাগুলো দেওয়া হয়। এর জন্য আপনাকে আলাদাভাবে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। টিকার মাধ্যমে প্রতিটি শিশুকে সুরক্ষিত শিশুতে পরিণত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জানালেন ইকবাল কবীর—

বিসিজি টিকা
জন্মের পরপরই যে টিকাটি দেওয়া হয়, তা হলো বিসিজি টিকা। এটি যক্ষ্মা প্রতিরোধ করে। জন্মের ৪২ দিন অর্থাৎ প্রায় দেড় মাসের মধ্যেই এ টিকা দেওয়া উচিত। এই টিকা দেওয়ার পর একটু ফুলে থাকতে পারে, হালকা জ্বরও হতে পারে। এতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।

ডিপিটি টিকা
ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি ও ধনুষ্টংকার (টিটেনাস)—এই তিনটি রোগকে প্রতিরোধ করবে ডিপিটি টিকা। এখানে তিনটি ডোজ দেওয়া হয় প্রথমটি শিশুর দেড় মাস বয়সে। তার পরেরটি আড়াই মাস বয়সে এবং শেষেরটি সাড়ে তিন মাস বয়সে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে টিকাগুলো পরপর নিতে হবে।
ডিপিটির এই তিনটি ডোজের সঙ্গে পোলিও থেকে বাঁচতে প্রতিবার দুই ফোঁটা করে টিকা খাওয়ানো হয়।

হেপাটাইটিস-বি টিকা
ডিপিটি টিকার তিনটি ডোজের সঙ্গে সরকারিভাবে আরও একটি টিকা দেওয়া হয়। এটি হলো হেপাটাইটিস-বি। ডিপিটির সঙ্গে এটিরও পরপর তিনটি ডোজ নিতে হয়।

হামের টিকা
নয় মাস বয়সে হামের টিকা দিতে হবে। এ সময় ‘ভিটামিন এ’ ক্যাপসুল ও পোলিওর চতুর্থ ডোজ দেওয়া হয়।

উপরিউক্ত সাতটি টিকা ছাড়াও সরকারি উদ্যোগে বর্তমানে হেমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা বি (হিব) নামক অষ্টম টিকা দেওয়া হবে সামনে। শিশুর এক বছর হওয়ার পর মামস, মিসেলস, রুবেলা থেকে বাঁচাতে এমএমআর টিকাটি নিতে হবে। এ ছাড়া চিকেন পক্সের টিকা দিয়ে দিন।

টিটেনাসের টিকা
১৫-৪৫ বছর বয়সের নারীদের ধনুষ্টংকার রোধে পাঁচটি টিকা নিতে হবে। এটি ভবিষ্যতের নবজাতকদেরও ধনুষ্টংকার থেকে রক্ষা করবে।
প্রথম ডোজটি দেওয়ার ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজটি দিতে হবে। তৃতীয় ডোজটি নিতে হবে এক বছর পর। চতুর্থ ডোজটি নিতে হবে পরবর্তী দুই থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে। তার ঠিক এক বছর পর নিতে হবে পঞ্চম ডোজটি। এ ছাড়া গর্ভবতী অবস্থায় দুবার এই টিকা নেওয়া যায়।
টিটেনাসের দ্বিতীয় টিকাটি তিন বছরের জন্য সুরক্ষা দেয়। তৃতীয় টিকাটি সুরক্ষা দেবে পাঁচ বছর পর্যন্ত। ১০ বছরের জন্য সুরক্ষিত করবে চতুর্থ টিকাটি। পঞ্চম টিকাটি অর্থাৎ সর্বশেষ টিকাটি ৩০ বছরের জন্য ধনুষ্টংকার থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।

রয়া মুনতাসীর
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ২২, ২০১১