রাসূল (সা.) ও খাদিজা (রা.) ঘরে বসে কথা বলছিলেন। ওই সময় দরজার কাছে উপস্থিত হলেন জিবরাইল (আ.)। নবীজিকে সালাম দিলেন। রাসূল (সা.) যথারীতি তার উত্তর দিলেন। খাদিজা (রা.) তো অবাক। কাকে সালাম দিলেন আপনি, রাসূল (সা.) বললেন কেন, এ যে জিবরাইল (আ.) দাঁড়িয়ে আছেন। উনি আমাকে সালাম জানিয়েছেন তারই উত্তর দিলাম। খাদিজা (রা.) কাউকে দেখতে না পেয়ে বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, কই আমি তো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না! মহানবী (সা.) বললেন, আমি দেখতে পাচ্ছি। এবার খাদিজা (রা.) ব্যাপারটা পরখ করে দেখতে চাইলেন। নিজের মাথার ওড়না ফেলে দিয়ে মাথা ও মুখমণ্ডল অনাবৃত করলেন। রাসূল (সা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, এবার কি তাকে দেখতে পাচ্ছেন? রাসূল (সা.) বিস্মিত হলেন, চোখের পলক পড়তে না পড়তেই অন্তর্হিত হলেন জিবরাইল (আ.)। খাদিজা (রা.)কে সবিনয়ে জানালেন- না, জিবরাইল (আ.)কে এখন আর দেখতে পাচ্ছি না। এরপর সবকিছু স্পষ্ট হয়ে উঠল খাদিজা (রা.)-এর কাছে। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা.)। এবার আমি নিশ্চিত যে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যিনি আসেন তিনি আসলেই জিবরাইল ফেরেশতা। রাসূল (সা.) জানতে চাইলেন কীভাবে তা বুঝলে? খাদিজা (রা.) বললেন, তাওরাত ও ইঞ্জিল কিতাবে এ রকম পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। রাসূল (সা.) জানতে চাইলেন, পরীক্ষাটা কি শোনা যাবে? হ্যাঁ, অবশ্যই শোনা যাবে- আপনার কাছে আগন্তুক একজন ফেরেশতা আমি তা নিশ্চিত হয়েছি এ কারণে যে, উনি ফেরেশতা না হয়ে জিন-পরী বা অন্য কিছু হলে আমার ওড়না ছাড়া অনাবৃত মাথা ও মুখমণ্ডল দর্শনে চলে যেতেন না। এখন চিন্তা করে দেখুন। আমাদের হাটবাজার, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যেভাবে মা-বোনেরা খোলা মাথায় বেপর্দায় চলছেন, শয়তান ছাড়া রহমতের ফেরেশতা তাদের সঙ্গে থাকতে পারে কি না? এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের সূরা নুর ও আহজাবের অর্থ পড়লেই সব জানা যাবে। আল্লাহ আমাদের পর্দা ও পরহেজগারি দান করুন।
লেখক : সাবেক কলেজ পরিদর্শক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়