ঘরে থাকার শিক্ষাটা যখন সবার জন্য

Author Topic: ঘরে থাকার শিক্ষাটা যখন সবার জন্য  (Read 774 times)

Offline Shamim Ansary

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 3746
  • Change Yourself, the whole will be changed
    • View Profile
সালাম এবং সহমর্মিতা সবার জন্য!

শিক্ষক হিসেবে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়, কখনো কখনো তা বেড়ে যায় অনেক গুণ।

সময় এখন আলাদা, কঠিন, দুশ্চিন্তার এবং অনেক ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। তাই শিক্ষার্থীদের প্রতি আমাদের যত্নের ধরন হবে গতানুগতিক নিয়মের বাইরে, চিন্তাশীল, ইমোশনাল, ইন্টেলিজেন্ট ও সহানুভূতিশীল।

শিক্ষককে নিজেকে শিক্ষার্থীর জায়গায় সযত্নে কল্পনা করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষকদের ধারণা বা অভিজ্ঞতার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের অবস্থান মেলাবেন না। তারা সত্য গোপন করে, কথা শোনে না, ‘এক্সকিউজ মাস্টার’, যাই করি না কেন ওরা বুঝবে না—ইত্যাকার ধারণা পুষে রাখবেন না দয়া করে। শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকটি কথা বাস্তব বলে বিশ্বাস করে তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে সম্মানের সঙ্গে। তাদের যে আন্তরিকভাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক অনুভব করতে পারেন, তা শিক্ষার্থীদেরও বুঝতে হবে।

শিক্ষকদের কাজ শুধু শিক্ষার্থীদের বোঝানো নয়; বরং এই সংকটকালে তারা বুঝেছে কি না, সেটা বোঝাই শিক্ষকদের শ্রেষ্ঠ কাজ, শ্রেষ্ঠ গবেষণা। কারণ মানুষের মন বোঝার কাজটা সব সময়ই শিক্ষকের মূল কাজ, তারপর ‘কী বোঝাচ্ছি তা’।

শিক্ষকেরা সব সময়ই বিশ্বাস করেন যে আপনারা শিক্ষার্থীর বাবা, মা বা বন্ধুর মতো। তবে এই একই বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের মনেও থাকতে হবে সব সময়। তাহলে শিক্ষকদের সঙ্গে অনলাইন যুক্ত থাকার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সোচ্চার হওয়ার প্রশ্নই উঠবে না। শিক্ষার্থীরা যেন শিক্ষকদের নিরাপদ মনে করে, সব সমস্যার কথা বলে। অনলাইনে ক্লাস ভালো না হলে যেন তারা বলতে পারে যে তারা বুঝতে পারেনি। একজন শিক্ষকের শিক্ষার্থীদের এই বলে বোঝানো উচিত যে ‘তোমরা না বুঝলে আমার ব্যর্থতা। আমি আবার বোঝাব। যত দিন বুঝবে না, তত দিন কোনো কুইজ বা পরীক্ষা নেব না।’

বৈশ্বিক এই দুর্যোগ পরিস্থিতিতে শিক্ষক হিসেবে সবার দায়িত্ব শুধু একাডেমিক পরামর্শ দেওয়া নয়। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের সর্বোচ্চ খেয়াল রাখা। পরিস্থিতির উন্নতি হলে আমরা শিক্ষকেরা নিবিড় যত্ন নিয়ে তাঁদের শেখাব, পড়াশোনায় ফেরত আসবে—এ বিশ্বাস যেন থাকে শতভাগ।

ভুলে গেলে চলবে না, শিক্ষকেরা একেকজন হিলার, মানসিক শক্তির উৎস—যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের রোগ প্রতিরোধ সক্ষমতা বাড়ে। এই সক্ষমতা তাদের সামাজিকভাবে অনেক বেশি দায়বদ্ধ ও কর্মক্ষম করে গড়ে তোলে। এই মুহূর্তে কর্মক্ষম মানুষের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। কেননা, এই দুর্যোগে অনেকেরই সাধারণ আচরণ পাল্টে যেতে পারে। এমনকি হ্রাস পেতে পারে সাধারণ কর্ম ক্ষমতাও।

সব শেষে শিক্ষকতার মতো পেশা ও প্যাশনের সঙ্গে যুক্ত সবার প্রতি আহ্বান, শিক্ষার্থীদের যত্ন নিতে চাইলে আপনার নিজেরও যত্ন নিতে হবে। নিজের শরীরের যত্ন এবং মনের যত্ন আলাদা করে করতে হবে। কারণ, দিন শেষে আপনি একজন শিক্ষার্থীর শক্তি ও আশ্রয়।


Source: https://www.prothomalo.com/nagorik-sangbad/article/1647020/
*লেখক: জেনারেল এডুকেশন ডেভেলপমেন্টের বিভাগীয় প্রধান ও স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের ডিরেক্টর, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
"Many thanks to Allah who gave us life after having given us death and (our) final return (on the Day of Qiyaamah (Judgement)) is to Him"