কোয়ারেন্টিন কী ও কেন

Author Topic: কোয়ারেন্টিন কী ও কেন  (Read 703 times)

Offline Shamim Ansary

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 3735
  • Change Yourself, the whole will be changed
    • View Profile
কোয়ারেন্টিন কী ও কেন
« on: April 04, 2020, 01:13:56 PM »

কোয়ারেন্টিন শাব্দের অর্থ সঙ্গরোধ করা। একে অপর হতে আলাদা থাকা। এই পদ্ধতিতে রোগী ও suspected (সন্দেহজনক) ব্যক্তি হতে সুস্থ ব্যক্তিদেরকে আলাদা করার ব্যবস্থা করা হয়।

উপযোগিতা

ভাইরাসটি extreme mutant হওয়ায় এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে ও সংক্রমণক্ষম। একজন আক্রান্ত ব্যক্তি তিন থেকে পাঁচজনকে সংক্রমণ করে পরবর্তীতে ঐ তিন থেকে পাঁচজন রোগী আরো দশ থেকে পনেরো জন সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রমণ করতে পারে। এই ভাবে একজন Focus রোগী হতে ভাইরাসটি জিওমেট্রিক্যাল প্রোগ্রেশন সূত্রে স্বল্প সময়ে অনেক সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রমিত করতে পারে। একজন Focus রোগী স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক রোগীর জন্ম দিতে পারে যা ক্রমাগত ভাবে চলতেই থাকবে।

এক্ষেত্রে আমরা Quarantine এর মাধ্যমে সংক্রমিত ব্যক্তিদের আলাদা করলে এই Transmission Chain টি Break করা যেতে পারে। অন্যথায় আক্রান্ত রোগীর Pool জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকবে। বিভিন্ন দেশে এই Quarantine পলিসিটি প্রাথমিক পর্যায়ে শক্ত ভাবে (Stringent) বাস্তবায়ন করতে যথেষ্ট সচেষ্ট না হওয়ায় সেসব দেশে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

কোয়ারেন্টিন এর মেয়াদ কাল

এই ভাইরাসের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত quarantine এর মেয়াদ কাল ১৪ দিন মত ভেদে সর্বোচ্চ ২১ দিন। সাধারণত ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পরে সর্বোচ্চ এই সময়ের মধ্যে শরীরের host immune defence mechanism ভাইরাসটিকে ধ্বংস করে ফেলে। ভাইরাসটি উক্ত ব্যক্তির শরীরের ভেতরে নিস্ক্রিয় হওয়ার ফলে উক্ত ব্যক্তি হতে ভাইরাসটি অন্যকোন ব্যক্তির মধ্যে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই (খুবই insignificant ক্ষেত্র ছাড়া) সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা আর থাকে না।

সমাজে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি আক্রান্ত হয় বিধায় সামাজিক quarantine এর মেয়াদকালের বিষয়টি সাধারণত সামাজিক সংক্রমণের ও community transmission এর চিত্র এবং করোনা টেস্টের রির্পোটের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

কোয়ারেন্টিন কত ধরনের

কোয়ারেন্টিন ব্যক্তিগত ভাবে, পারিবারিক ভাবে, সামাজিক ভাবে করা যায়। যার মূল উদ্দেশ্য হলো ভাইরাস Transmission রোধ করা।

সুস্থ লোকদেরও কোয়ারেন্টিন এ যাওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। কেননা সে হঠাৎ করে কোন asymptomatic সংক্রমিত ব্যক্তির অথবা রোগীর সংস্পর্শে আসতে পারে। তাছাড়া সে নিজেও হয়তো জানে না যে ভাইরাসটি তার মধ্যে asymptomatic (উপসর্গ ছাড়া) অবস্থায় রয়েছে। সেক্ষেত্রে তার নিজের সংক্রমিত হওয়ার বা অন্যকে সংক্রমিত করার আশঙ্কা থাকে।

Self Quarantine : অর্থ হলো স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টিন এ যাওয়া। Corona ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী অথবা Corona suspected ব্যক্তি অনেক সময় নিজ বাসায় self quarantine এ থাকতে পারে।

Home Quarantine : এর অর্থ হলো বাসায় বসে কোয়ারেন্টিন বিধি মেনে চলা অর্থাৎ পরিবারের প্রতিজন সদস্য বাসায় বসে ব্যক্তিগত কোয়ারেন্টিন এর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। এই পদ্ধতিতে দেশের প্রতিটি ব্যক্তিকে কোয়ারেন্টিন এর আওতায় আনা সম্ভব। এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতিটি বাড়ির প্রতিজন সদস্য নিজ নিজ বাড়িতে স্ব স্ব ভাবে আলাদা থেকে বাড়ীর ঘরোয়া পরিবেশে স্বাছন্দে এবং খানাপিনার সুবিধা সহ কোয়ারেন্টিন এর বিধি মালা মেনে চলবে।

এখানে অসুস্থ, বৃদ্ধ এবং suspected (সন্দেহজনক) ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ অথবা বিদেশ প্রত্যাগত কেউ থাকলে তাকে আলাদা কক্ষে কোয়ারেন্টিন করা আবশ্যক। কেউ অসুস্থ হলে IEDCR Hotline অথবা অন্য মাধ্যমে যোগাযোগ করে চিকিৎসা সুবিধা নিতে পারে এবং প্রয়োজন বোধে institutional care এর সুবিধার জন্য ভর্তি হতে পারে। সমাজের majority লোকদের সম্পৃক্ত করা যায় এবং বাড়ীর ঘরোয়া পরিবেশে পারিবারিক স্বাচ্ছন্দে ব্যবস্থা করা যায় বলে Home quarantine খুবই কার্যকর কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণযোগ্যতার দাবি রাখে।

Home Quarantine থাকা অবস্থায় নিু নিয়মগুলি মেনে চলার নির্দেশ রয়েছে :

* বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে না যাওয়া

* বিশেষ দরকার হলে বাহিরে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করা। বাহিরে ঘোরাফেরার সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা।

* ফেরার সময় দরজার হাতল টিস্যু ব্যবহার করে খোলা, প্রবেশ করে নিজ কক্ষে না ঢুকে সরাসরি ওয়াশরুমে গিয়ে ব্যবহৃত পোশাক খুলে ধৌত কর্ম সেরে নতুন পোশাকপরিধান করা। কোনভাবেই বাড়ির বাচ্চাদের এই ভাবে পোশাক পরিবর্তন না করে কোলে না নেওয়া।

* পরিবারের বয়স্ক লোকদের ও বিদেশ ফেরতদের সম্পুর্ণ আলাদা রাখা এবং তাদের কোন উপসর্গ দেখা দেয় কিনা নজর রাখা ।

* থালাবাসন, গ্লাস, চামচ ইত্যাদি আলাদা ভাবে ব্যবহার করা।

* ঘরের মধ্যে চলাচলের ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কমপক্ষে তিন ফিট দূরুত্ব বজায় রাখা।


লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হেপাটোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

Source: https://www.jugantor.com/todays-paper/features/stay-well/295572/%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%A8-%E0%A6%95%E0%A7%80-%E0%A6%93-%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%A8
"Many thanks to Allah who gave us life after having given us death and (our) final return (on the Day of Qiyaamah (Judgement)) is to Him"