রাস্তার ধোঁয়া-ধুলা থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক

Author Topic: রাস্তার ধোঁয়া-ধুলা থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক  (Read 1607 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
রাস্তায় গাড়ি চলছে। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে ধুলা আর ধোঁয়া। যানবাহনের সংখ্যা বেশি হলে কিংবা যানজট হলে তো বাতাস ধুলা-ধোঁয়ায় ছেয়েই যায়। রাস্তার পাশের কলকারখানা থেকেও আসে ধোঁয়া-ধুলা। আসে রাস্তাসংলগ্ন বাসাবাড়ির রান্নাঘর কিংবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেও। শীতের শুষ্ক মৌসুমে বাতাসে ধোঁয়া-ধুলার পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। ধোঁয়া-ধুলা আর কুয়াশা মিলে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। এই ধোঁয়া আর ধুলায় থাকে অসংখ্য ক্ষুদ্র কণা আর বিভিন্ন গ্যাস। এগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ১০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে বড় কণা মাটিতে পড়ে যায়। কিন্তু এর চেয়ে ছোট কণা বাতাসে ভাসতে থাকে এবং শ্বাস টানার সময় ফুসফুসে প্রবেশ করে। ২.৫ মাইক্রোমিটার থেকে ১০ মাইক্রোমিটার সাইজের ক্ষুদ্র কণা থাকে বাতাসে ছড়িয়ে যাওয়া ধুলায়। নিঃশ্বাসের সঙ্গে এগুলো প্রবেশ করে শ্বাসনালি ও ফুসফুসে। ফলে শ্বাসনালি ও ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। ব্রংকাইটিস, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হাঁচি, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দেয়। ফুসফুসের ক্যানসারও হতে পারে এর জন্য। ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট কণা থাকে গ্যাসে বা ধোঁয়ায় ভাসমান। এগুলো ফুসফুসের একেবারে গভীরে চলে যেতে পারে শ্বাসের সময়। ধোঁয়ার গ্যাসে আরও থাকে ক্ষতিকর কার্বন-মনোক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস-অক্সাইড ইত্যাদি। এসব গ্যাসের জন্য ফুসফুসের প্রদাহ, উচ্চ রক্তচাপ, হূদরোগ, স্ট্রোকসহ নানা স্বাস্থ্যসমস্যা দেখা দিতে পারে। সিসাযুক্ত তেল পুড়ে বাতাসে গাড়ির ধোঁয়ার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত সিসা। সিসার জন্য শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি। শিশুর বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়া, শিশুর আচরণগত সমস্যাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে সিসার জন্য। বাতাসে ভাসমান ধুলা-ধোঁয়ার এসব ক্ষতিকর পদার্থ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে ব্যবহার করা চাই মাস্ক।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়। কাপড়ের মাস্কই ভালো। এক পরতের মাস্কের চেয়ে কয়েক পরতের মাস্ক বেশি ভালো। অতি ক্ষুদ্র কণার প্রবেশও রোধ করতে পারে। তবে বেশি মোটার কারণে শ্বাস টানায় বা ছাড়ায় বেশি সমস্যা যেন না হয়, তা মাস্ক বাছাইয়ের সময় খেয়াল রাখতে হবে। মাস্কটা মুখে ফিট হতে হবে ভালোভাবে। মাস্ক আর নাক-মুখের ফাঁক দিয়ে যেন ধুলাবালি ঢুকতে না পারে। মাস্ক রাখা চাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। কাপড়ের মাস্ক নিয়মিত ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। মাস্কের বাইরের দিকটা প্রতিবার ব্যবহারের সময় যেন বাইরের দিকেই থাকে, সে খেয়াল রাখতে হবে অবশ্যই। না হলে শ্বাস টানার সময় মাস্কের বাইরের দিকে লেগে থাকা ক্ষুদ্র কণা শ্বাসনালিতে ঢুকে যাবে। একজনের মাস্ক আরেকজন ব্যবহার করা যাবে না। মাস্ক না পাওয়া গেলে শাড়ির আঁচল, ওড়না বা রুমাল ব্যবহার করা যাবে মাস্ক হিসেবে। শার্টের হাতাও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ধুলা-ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ কমাতে সরকারের আছে কার্যকরী নিয়মকানুন। যানবাহনের মালিক বা চালকেরও হয়তো আছে বিশেষ প্রচেষ্টা। কলকারখানার মালিকদেরও আছে বিশেষ উদ্যোগ। কিন্তু আপনার উদ্যোগ কী হবে? রাস্তায় ধোঁয়া-ধুলা, বাইরে যত কম থাকা যায়, ততই ভালো। বাইরে গেলে অবশ্যই নিজের নাক ও মুখ ঢাকতে মাস্ক ব্যবহার করুন। 

মো. শহীদুল্লাহ
বিভাগীয় প্রধান, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ ময়মনসিংহ।
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ডিসেম্বর ১৫, ২০১০
 0 0
 
share0shareNew