রোজনামচা হোক স্বাস্থ্যকর

Author Topic: রোজনামচা হোক স্বাস্থ্যকর  (Read 1493 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
উঠে পড়ুন সকাল সকাল। আর্লি টু বেড অ্যান্ড আর্লি টু রাইজ, মেকস অ্যা ম্যান হেলদি, ওয়েলদি অ্যান্ড ওয়াইজ। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে স্বাস্থ্যবান হওয়ার কথা বলা হয়েছে। সকালে ওঠার অভ্যাসের কিছু স্বাস্থ্যগত সুবিধা অবশ্যই রয়েছে। সকাল সকাল নাশতা করার সুবিধা। সকাল সকাল ব্যায়াম করার সুবিধা।
দেহঘড়ির স্বাভাবিক নিয়মে শরীরের স্ট্রেস হরমোন বেশি হয়ে যাওয়ার আগেই জেগে ওঠার সুবিধা। সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠলে ব্যায়ামের জন্য সময় পাওয়া যায়। নিয়মিত ব্যায়াম শরীরের জন্য উপকারী। সবচেয়ে সহজ, সস্তা, জনপ্রিয় ও নিরাপদ ব্যায়াম হচ্ছে হাঁটা। হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। হাঁটার স্বাস্থ্যসুবিধা অনেক।
হাঁটা রক্তচাপ কমায়, হূদরোগের ঝুঁকি কমায়, মেদ কমায়, রক্তের সুগার কমায়। ভালো কোলেস্টেরল এইচডিএল বাড়ায় আর মন্দ কোলেস্টেরল এলডিএল কমায়। রক্তনালির দেয়ালে চর্বি জমতে দেয় না, অ্যাথেরোসক্লেরোসিস প্রতিরোধ করে। হাঁটলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা কমে। ডায়াবেটিস হয়ে থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাঁটা যথেষ্ট উপকারী। হাঁটার ফলে পেশির শক্তি বাড়ে। শরীরের ওজন ঠিক থাকে আর শরীর থাকে ফিট। হাঁটা হূদযন্ত্র ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। বিষণ্নতা প্রতিরোধ ও চিকিৎসায়ও হাঁটা উপকারী। সকালের বাতাস থাকে নির্মল। এক একটা দম নেবেন, ছাতি এক বিঘত ফুলে উঠবে; এক একটা দম ফেলবেন, ১০০টা বিমারি বেরিয়ে যাবে।
গোসল করুন। ঠান্ডা পানিতে গোসলের অভ্যাসে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা কমে। গরম পানিতে গোসলেও উপকার অনেক। নিয়মিত গরম পানিতে গোসল করলে বাতের ব্যথা উপশম হয়। অস্থি সন্ধির ব্যথা কমে, প্রদাহ কমে। পিঠের ও হাঁটুর ব্যথা ভালো হয়। গরম পানির ভাপে নাকের কনজেশন বা নাক বন্ধ হয়ে থাকা ভাব আর শ্বাসনালি বন্ধ হয়ে থাকা ভাব কমে যায়। নাকের ছিদ্র খোলে, শ্বাসনালি প্রসারিত হয়। গরম পানির গোসলে তাই সাইনোসাইটিসে উপকার পাওয়া যায়। আরাম হয় শ্বাসকষ্টেরও।
নাশতা করুন একটু বেশি। সকাল সকাল নাশতা করলে সকাল সকালই শরীরের খাদ্যের অভাব পূরণ হয়। সকালবেলা একটু বেশি পরিমাণে নাশতা সারা দিন শরীরটাকে কর্মক্ষম রাখে। দেরিতে ঘুম থেকে উঠলে নাশতা করার জন্য বেশি সময় নাও পাওয়া যেতে পারে। ফলে অল্প নাশতা করেই কাজে বেরিয়ে পড়তে হয়। শরীর ব্যবহার করবে শরীরের জমে থাকা শক্তি। আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়বে শরীর। কর্মস্থলে, স্কুলে, কলেজে বসার সময় বসুন সোজা হয়ে। তা না হলে কোমরে, পিঠে বা ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। একটানা বসে না থেকে মাঝেমধ্যে আশপাশে কিছুক্ষণ পায়চারি করুন। দুপুরে খান সময়মতো। খাওয়ার পর একটু হালকা ঘুম শরীরটাকে চাঙা করবে। সারা দিনে কয়েক কাপ দুধ ছাড়া চা পান করুন। চা শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের জোগান দেবে। বিকেলে ফুরসত বের করে হাঁটুন একটু।
রাতের খাবার হোক সামান্য। শর্করা, আমিষ, তেল, ভিটামিন ও খনিজ লবণ সমৃদ্ধ শাকসবজি এবং পানি—সারা দিনের খাদ্যতালিকায় সবই থাকা চাই। রাতে খাওয়ার পরপরই ঘুমাতে যাওয়া ঠিক নয়। তবে খুব দেরিতেও ঘুমাতে যাবেন না। তাই দীর্ঘক্ষণ টিভি দেখা নয়। ঘুম চাই পর্যাপ্ত। পর্যাপ্ত ঘুমের পর সকাল সকাল উঠতে হলে একটু সকাল সকালই ঘুমাতে যেতে হবে।

ডা. মো. শহীদুল্লাহ্
সহযোগী অধ্যাপক, কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ
কমিউনিটি বেজড মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ২৮, ২০১০