বয়স অনুযায়ী স্বাস্থ্যপরীক্ষা আবশ্যক

Author Topic: বয়স অনুযায়ী স্বাস্থ্যপরীক্ষা আবশ্যক  (Read 593 times)

Offline Sahadat Hossain

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 368
  • Test
    • View Profile
আমাদের দেশে ২০ থেকে ৩০ বছরে বয়সে বেশির ভাগ মেয়েরই বিয়ে হয়ে যায়। এ সময় থেকেই মেয়েদের সারভাইকাল ক্যানসার বা জরায়ু মুখের ক্যানসারের স্ক্রিনিং করা উচিত যাঁর যাঁর গাইনি ডাক্তারের কাছ থেকেই। বেশির ভাগই পড়াশোনা শেষ করে কর্মজীবনে ঢুকছেন। স্ট্রেস, খাদ্যাভ্যাস বা জেনেটিক সংযোগের কারণে এ সময় থেকেই নিয়মিত ব্লাডপ্রেশার, কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিস চেক করাও উচিত; এর কোনো একটি হলেই তা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা উচিত খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং প্রয়োজনে ওষুধ খেয়ে।

সবচেয়ে জরুরি হলো এই তিনটির যেকোনো একটি হলে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এবং ব্যায়াম করে ওজন কমানো শুরু না করা হলে বাকি দুটোও বন্ধুর মতো একদম সারা জীবনের সঙ্গী হয়ে যাবে। আর সব বন্ধুই ভালো হয় না, যতই কাছের হোক। তাই এ বয়সে বেশি সবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। লবণ কম খেতে হবে এবং ভাত, রুটি, ব্রেড ও আলু কমিয়ে দিতে হবে।

আমি যেটা বলি, আমরা কাজ করি নিজেদের ভালোমন্দ খাওয়ার জন্য। কিন্তু এ বয়সে এসে মনে রাখতে হবে, খাবারটা লাগামছাড়া করা যাবে না। পানি অবশ্যই বেশি খেতে হবে, তবে সবার জন্য দুই লিটার নয়। রোগভেদে পানি কতটুকু পরিমাণ পান করতে হবে তা নির্ভর করে। তবে পারলে ছয় গ্লাস পানি প্রতিদিন সবার খাওয়া উচিত!
 মানসিক স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য, মানসিক স্বাস্থ্য। কারণ, এর গুরুত্ব অপরিসীম। এর জন্যও পরিমিত খাওয়াদাওয়া, ঘুম এবং ব্যায়াম অপরিহার্য। আর দুশ্চিন্তা ও হতাশার পর্যাপ্ত চিকিৎসা আছে।

বয়স চল্লিশ হলে দুটো ভীষণ দরকারি তথ্য জানতে হবে, পরিবারে নারীদের ব্রেস্ট ক্যানসার আর ছেলেদের প্রোস্টেট ক্যানসার আছে কি না! এ সময়ে অবশ্যই ব্রেস্ট ক্যানসারের জন্য প্রত্যেক নারীরই প্রতিবছরে ম্যামোগ্রাম করানো উচিত আর ছেলেদের প্রোস্টেট চেক করা উচিত; সঙ্গে একটি খুব সাধারণ রক্ত পরীক্ষা, যা প্রোস্টেট ক্যানসার চেক করে। একে পিএসএ বলে, সেটা করিয়ে নেওয়া।

যদি কোনো নারী বয়ঃসন্ধির পরে বুকে কোনো চাকা অনুভব করেন বা বুকের চামড়ায় কোনো পরিবর্তন অনুভব করেন, লজ্জা না পেয়ে দয়া করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। দরকারে গাইনি ডাক্তারের কাছে যান, যদি পুরুষ ডাক্তারের কাছে যেতে ইতস্তত বোধ করেন। তবে দেরি করবেন না। মেয়েদের মৃত্যুর একটি বিশাল কারণ এই ব্রেস্ট ক্যানসার। তাই লজ্জা না পেয়ে চেক করান। যত দ্রুত এটি আবিষ্কার হবে, ততটাই আপনার বেঁচে থাকার সুযোগ বাড়বে। তাই লজ্জা পাওয়ার বিন্দুমাত্র কারণ নেই। মনে রাখবেন, আপনি বেঁচে থাকলে নিজের সন্তান–স্বামীর সঙ্গে আরও কিছুদিন কাটাতে পারবেন।

এবার বলি প্রোস্টেট ক্যানসারের কথা। প্রতিটি ছেলেই, আসলে ব্যক্তিই প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে যদি তারা তত দিন বাঁচে। মানে ব্রেস্ট আছে বলেই যেমন মেয়েদের যেকেউ ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে, তেমনি প্রত্যেক ছেলেই প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে। চিকিৎসা নির্ভর করে বয়স, স্টেজ ইত্যাদির ওপর। তবে নরমালি প্রোস্টেট ক্যানসার ব্রেস্ট ক্যানসারের মতো অতটা অ্যাগ্রেসিভ নয়।

প্রোস্টেট ক্যানসার নির্ভর করে কার পরিবারে অল্প বয়সে প্রোস্টেট ক্যানসার আছে তার ওপর। তাই পরিবারের লোকজনের রোগের হিস্ট্রি জানাটা জরুরি। যাঁদের পরিবারে অল্প বয়সে প্রোস্টেট বা ব্রেস্ট ক্যানসার আছে, তাঁরা আগেভাগেই চেক করা শুরু করুন।
শুধু প্রোস্টেটের ক্যানসারই নয়, পুরুষদের প্রোস্টেটের যে সমস্যা সবচেয়ে বেশি হয়, তা হলো প্রোস্টেট বড় হয়ে প্রস্রাবের সমস্যা। এটিও চল্লিশ বছর বয়সে শুরু হয়, পঞ্চাশে মোটামুটি প্রতিটি পুরুষের সমস্যা এটি। আর যদি এ বয়সে প্রস্রাবে সমস্যা হয়, প্রতিটি পুরুষেরই তাদের ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে তার চিকিৎসা করানো উচিত। সবার যে সমস্যা হবেই তা নয়।

পঞ্চাশে যে সমস্যা হয়, ঠিক সমস্যা নয়, যা স্ক্রিন করতে হবে, তা হলো কোলন ক্যানসার আছে কি না তার পরীক্ষার জন্য কোলনস্কপি। তাই পরিবারে কারও কোলন ক্যানসার আছে কি না তাও জানা প্রয়োজন। কারণ যদি পরিবারের কারও চল্লিশ বছরে কোলন ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, তবে সে পরিবারের সদস্যদের বয়স পঞ্চাশের আগেই কোলনোস্কপি করাতে হবে।

মানে প্রতিবছর ব্লাডপ্রেশার, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিসের পরীক্ষার পাশাপাশি চল্লিশের ঊর্ধ্ব নারীদের ব্রেস্ট ক্যানসার আর পুরুষের প্রোস্টেটের পরীক্ষা করাতে হবে; এ ছাড়া পঞ্চাশে পড়লে অবশ্যই কোলন ক্যানসারের পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।
বয়স পঞ্চাশ পেরোলেই আরও অনেক বেশি নিয়ম মেনে চলতে হবে—ওজন পরিমিত রাখতে হবে। এ সময়ে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের আশঙ্কা বেড়ে যায়। নিউরোলজিক্যাল সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অল্প করে মেমোরি লস হতে শুরু করতে পারে, মানে আলঝেইমার্সের অনুসূচনা হতে পারে। অথবা পারকিনসন্স বা ব্যালান্সের সমস্যা শুরু হয়।

আমাদের জীবন প্রতিটি দশকে বদলে যায়। জীবনপ্রক্রিয়ায় এগুলো স্বাভাবিক পরিবর্তন। তবে আমাদের সচেতন হতে হবে যাতে আমরা এই স্বাভাবিক পরিবর্তনের মধ্যেই অস্বাভাবিক পরিবর্তনগুলো বুঝতে পারি। জীবনে অন্ততপক্ষে যেসব রোগ শুরুতেই জানলে তার প্রতিকার বা প্রতিরোধ করতে পারি, সেগুলো খারাপ দিকে ধাবিত হওয়ার আগেই তার প্রতিকার করে জীবন, সংসার, সমাজকে বাঁচাতে পারি। তাই সুস্থ থাকলেও বয়স অনুযায়ী পরীক্ষাগুলো করাতে ভুলবেন না।

Ref: https://www.prothomalo.com/life/health/%E0%A6%AC%E0%A7%9F%E0%A6%B8-%E0%A6%85%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A7%80-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%95
Md.Sahadat Hossain
Administrative Officer
Office of the Director of Administration
Daffodil Tower(DT)- 4
102/1, Shukrabad, Mirpur Road, Dhanmondi.
Email: da-office@daffodilvarsity.edu.bd
Cell & WhatsApp: 01847027549 IP: 65379