রাসুল (সা.) মানুষ ছিলেন। তাই স্বাভাবিক মানুষের মতো তিনিও মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর ওফাতের বছর হলো ১১ হিজরি। মাস রবিউল আউয়াল, আর তারিখ ১২। দিন হিসেবে সোমবার। সময় চাশত নামাজের শেষ। বয়স ৬৩। ওফাতের স্থান আয়েশা (রা.)-এর কক্ষ—তাঁর কোল। অন্য বর্ণনা মতে, আয়েশা (রা.)-এর গলা ও বুকের মধ্যবর্তী স্থানে মাথা রাখা অবস্থায় রাসুল (সা.) ইন্তেকাল করেন।
মহানবী (সা.) ইন্তেকাল করেছেন সোমবার চাশতের শেষ সময়। মঙ্গলবার তাঁকে গোসল দেওয়া হয়। গোসল দিয়েছেন আব্বাস (রা.), হজরত আলী (রা.), হজরত আব্বাস (রা.)-এর দুই ছেলে ফজল ও সাকাম, রাসুল (সা.)-এর আজাদকৃত ক্রীতদাস সাকরাম, ওসামা বিন জায়েদ ও আউস ইবনে খাওলা (রা.)। গোসলের পর বিশ্বনবী (সা.)-কে তিনটি ইয়েমেনি সাদা কাপড়ে কাফন পরানো হয়, অতঃপর ১০ জন ১০ জন করে সাহাবায়ে কেরাম হুজরায় প্রবেশ করে পর্যায়ক্রমে জানাজার নামাজ আদায় করেন। নামাজে কেউ ইমাম ছিলেন না।
রাসুল (সা.)-এর জানাজা এককভাবে হয়েছিল। জায়গার সংকীর্ণতার কারণে জামাত করা সম্ভব হয়নি (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২০৭৮৫; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস : ১৪২৭৩)
ঘরের মধ্যে খননকৃত কবরের পাশেই তাঁর লাশ রাখা হয়। অতঃপর আবু বকর (রা.)-এর নির্দেশক্রমে ১০ জন করে ভেতরে গিয়ে জানাজা পড়েন। তাঁরা এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করে জানাজা পড়ে অন্য দরজা দিয়ে বের হয়ে গিয়েছিলেন। প্রথমে রাসুল (সা.)-এর পরিবার-পরিজন, অতঃপর মুহাজিররা, অতঃপর আনসাররা জানাজার সালাত আদায় করেন। এভাবে পুরুষ, নারী ও শিশুরা পরপর জানাজা পড়েন। জানাজার এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া মঙ্গলবার সারা দিন ও রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে বুধবারের মধ্যরাতে দাফনকার্য সম্পন্ন হয় (সিরাতু ইবনে হিশাম : ২/৬৬৪)
মৃত্যুর প্রায় ৩২ ঘণ্টা পর রাসুল (সা.)-এর দাফন কাজ সম্পন্ন হয় (রহমাতুল্লিল আলামিন ১/২৫৩, ২/৩৬৮)
মন্তব্য
Source:https://www.kalerkantho.com/print-edition/islamic-life/2021/02/27/1008854