খুব সুন্দর একটি ইসলামিক শিক্ষণীয় গল্প

Author Topic: খুব সুন্দর একটি ইসলামিক শিক্ষণীয় গল্প  (Read 825 times)

Offline ashraful.diss

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 224
  • 'শীঘ্রই রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে'
    • View Profile
    • Daffodil Institute of Social Sciences - DISS
খুব সুন্দর একটি ইসলামিক শিক্ষণীয় গল্প

ফোরাত নদীর তীরে একদা এক বৃদ্ধ লোক খুব দ্রুত অযু করলেন। এত দ্রুত অযু করলেন যে, তার অযুই হল না। অতঃপর পূর্বের মত তাড়াহুড়া করেই নামায আদায় করলেন। যার দরুণ তার নামাযে ‘খুসু’, ‘খুযু’ কিছুই উপস্থিত ছিলনা। বৃদ্ধের এ অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছিলেন নবী দুলাল হযরত হাসান ও হোসাইন রা. কিন্তু তারা উভয়েই অস্থির হয়ে ভাবছিলেন যে, এ বৃদ্ধ লোকের ভুলগুলো কিভাবে শুধরে দেয়া যায়! কোন বেয়াদবি হয়ে যায় কিনা! তখন তারা খুব চমৎকার বিনয়ীর পন্থা অবলম্বন করলেন। যখন বৃদ্ধ লোকটির নামাজ শেষ হল তখন তারা বিনয়ের শুরে তাকে বললেন জনাব! আপনি আমাদেরকে একটু সময় দিবেন। বৃদ্ধ সম্মতি প্রকাশ করলে তারা বলল যে- আমরা ওযু করব এবং নামায আদায় করব। আপনি দয়া করে আমাদের ভুলগুলো শুধরিয়ে দেবেন।

অতপর ইমাম হাসান ও  হোসাইন রা. উভয়েই সুন্নত তরিকায় এতমিনানের সাথে অজু করলেন এবং দু’রাকাত নামায আদায় করলেন। তাদের নামাযটি ছিল স্বয়ং রাসুলুল্লাহর নামাযের মত ‘খুসু’, ‘খুযুু’ সম্পন্ন। বৃদ্ধ লোকটি তখন নিজের ভুল গুলো বুঝতে পারলেন এবং তাদেরকে ধন্যবাদ জানালেন। বড়দের ভুল ধরার কত সুন্দর, চমৎকার বিনয়ি পদ্ধতি। সুবহান আল্লাহ, এ জন্যই তাদের এত মর্যাদা।

কারণ রাসূল সা. বলেছেন, আল্লাহর রাযি খুশির উদ্দেশ্যে যে বিনয়ী হয়, আল্লহ তায়ালা তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। দেওবন্দের অদূরে এক তফসিলদার বসবাস করত। তিনি শাইখুল হিন্দ মাহমুদুল হাসান রহ. এর সুনাম অনেক দিন যাবৎ শুনছিলেন এবং মনে তীব্র ইচ্ছা পোষন করছিলেন যে তার সাথে দেখা করবেন এবং উপদেশ নছীহত গ্রহন করবেন। সে উদ্দেশ্যে তিনি দেওবন্দে আসলেন। দুপুরে দেওবন্দ মাদ্রাসার নিকটবর্তী একটি মসজিদে অবস্থান করলেন। সারা দিন সফরের কারণে শরীর খুব ক্লান্ত ছিল। তাই তিনি মসজিদের গোসলখানায় গোসল করার ইচ্ছা করলেন।

কিন্তু সমস্যা হল সে গোসলখানায় পানি ছিল না, তাই তিনি পানি আনার জন্য লোক খোজছিলেন। এমন সময় তিনি মসজিদের ভিতরে অবস্থানরত এক বৃদ্ধ (শাইখুল হিন্দ) খুব কষ্টে তাকে ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করে দিলেন। গোসল শেষে তফসিলদার তাকে বললেন আমাকে মাহমুদুল হাসান সাহেবের কছে নিয়ে চল যিনি শাইখুল হিন্দ নামে পরিচিত। তখন বৃদ্ধ তাকে নিয়ে চলা শুরু করলেন। কিছু দূর গিয়ে বৃদ্ধ বললেন আপনি যেন কার নিকট যাবেন? প্রশ্ন শুনে তফসিলদার রেগে গেলেন যে আমি শাইখুল হিন্দ মুচকি হেসে বললেন ভাই শান্ত হোন।

আমাকে অনেকে“শাইখুল হিন্দ” বলে ডাকে! তখন তো তফসিলদার অবাক বনে গেলেন! এবং সাথে সাথে তার পায়ে পড়ে ক্ষমা চাওয়া শুরু করলেন। তখন তিনি বললেন কোনো সমস্যা নেই, আমিতো আপনার সেবা করেছি মাত্র। আপনি মেহমান, আর আমি মেজবান হিসেবে আপনার সেবা করেছি মাত্র।

এছাড়াও আপনি যদি মনে করেন যে, আমি জাতীর নেতা তাহলে আমি আমার কর্তব্য পালন করেছি মাত্র। কারন “সাইয়্যেদুল কওমি খদিমুহা”। এ সব বলার পরে তফসিলদার শান্ত হলেন। এত বড় আলেম, বুযুর্গ হয়েও এরুপ বিনয়ী ছিলেন তিনি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে তাদের মত বিনয়ী হওয়ার তকওফীক দান করুণ। আমীন……!

Hafez Maulana Mufti. Mohammad Ashraful Islam
Sr. Ethics Education Teacher
Daffodil Institute of Social Sciences - DISS