কেইস স্টাডি ৩

Author Topic: কেইস স্টাডি ৩  (Read 627 times)

Offline ashraful.diss

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 164
  • 'শীঘ্রই রব তোমাকে এত দিবেন যে তুমি খুশি হয়ে যাবে'
    • View Profile
    • Daffodil Institute of Social Sciences - DISS
কেইস স্টাডি ৩
« on: December 15, 2021, 04:29:20 PM »
কেইস স্টাডি ৩



নামঃ  আব্দুস সাত্তার

বয়সঃ ৫-৬ বছর

পিতার নামঃ মোঃ ইয়াকুব আলী (মৃত)

মাতার নামঃ মোছাঃ তাসলিমা বেগম (প্যারালাইসড)

বর্তমান ঠিকানাঃ দত্তপাড়া, বিরুলিয়া, সাভার, ঢাকা।

 

তিন ভাই এর মধ্যে আব্দুস সাত্তার ছেলেটি সবার ছোট। সে আজ খুব আশা নিয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য ডিআই এসএসএ এসেছিলো। কতৃপক্ষ শিশুটির এবং তার বড় ভাইয়ের একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতকার গ্রহন করেছে। 

সাত্তারের বাবা মারা গেছে এ বছরের জানুয়ারীতে। অর্থাৎ ২০২১ সালের ১২ জানুয়ারিতে। মৃত্যু নিবন্ধন অনুযায়ী স্বাভাবিক অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে, লিখা থাকলেও আব্দুস সাত্তারের বড় ভাই সজীবের সাথেকথা বলে জানা গেলো ব্রেইন স্ট্রোক এর কারনেই তার বাবার মৃত্যু হয়েছে। ‘মা’ প্যারালাইজ, স্বামী মারা যাবার আগে থেকেই উনি অসুস্থ। সংসারে অনেক অভাব। ছোট ভাইটা একটু ভালো মন্দ খেতে চায়, ভাল কপড়  চায়, অসুস্থ হলে অনেক সময় ওকে ডাক্তার দেখাতে হয়। সেই সামর্থ এক কথায় সাত্তারের পরিবারের নেই। পরিবার বলতে তারা তিন ভাই আর মা। উনি চলাফেরা , কাজকর্ম কিছুই করতে পারেন না প্যারালাইসিস এর কারনে। বড় ভাই সজীব বাসের হেল্পার এর কাজ করে। সাত্তার কে ভর্তি করাবার জন্য সে’ই নিয়ে এসেছে সাথে করে।

এখানকার পরিবেশ বা ডিআইএসএস সম্পর্কে তারা কার মাধ্মে জেনেছে, একথা জানতে চাইলে সে উত্তর দিল, কাছের এক দোকানদারের কাছে থেকে। সব কিছু জানিয়ে আমরা যখন তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, সে কি ডিস এর সব নিয়ম মেনে স্ব-ইচ্ছায় তার ভাইকে এখানে ভর্তি করাতে চায়?, সে সরাসরি উত্তর দিল, চায়। কারন ডিস এ ভর্তি হতে পারলে তার ভাইটি একদিন মানুষের মত মানুষ হবে। তার একটি সুন্দর ভবিষ্যত হবে। অন্তত ভাইয়ের একটি নিরাপদ আশ্রয়, লেখাপড়া, এবং সর্বোপরি একটি সুন্দর আগামী নিয়ে কোন চিন্তা করতে হবে না। 

ডিস এর সমস্ত নিয়ম নীতির সাথে সাথে ভর্তির পর শিশুটির সমস্ত দায়িত্ব ড্যাফোডিলের উপর অর্পিত হবে। এই শর্ত মেনে নিতে তাদের আপত্তি আছে কিনা জানতে চাইলে, বড় ভাই হিসেবে সজীব জানিয়েছে তার বা তার মায়ের কোন রকম আপত্তি নেই। এমনিতেই ছোট ভাইটিকে দেখে রাখার মত কেউ নেই। দুই বেলা খাবার দেবার বা তার ব্যবস্থা করার সুযোগও হয়ে উঠেনা। সেখানে যদি, ভাইটি ভাল পরিবেশে থেকে মানুষের মত মানুষ হতে পারে তাহলে এর চেয়ে সৌভাগ্যের তাদের কাছে আর কিছু নেই।

আমরা শিশুটির সাথেও কথা বলেছি। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, ভর্তি করা হলে বা সুযোগ দেওয়া হলে সে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম কানুন মেনে থাকবে কিনা, সে বড় হয়ে কি হতে চায়? সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, সে উত্তর দিয়েছে বড় হয়ে সে মানুষ হতে চায়।

শিশুটি বুঝে কিংবা না বুঝে যে উওর দিয়েছে তাতে করে সৃষ্টিকর্তার কাছে আমাদের আর্জি থাকবে, অন্তর্নিহিত অর্থেই সে একজন সত্যিকারের মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠুক।

আসলে বঞ্চিতদের সংজ্ঞা বড় বিচিত্র। একজন শিশু নানা কারনে, নানা অর্থেই বঞ্চিত বলে বিবেচিত হতে পারে। তবে আমাদের যেহেতু কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে, এবং আমরা অধিকতর সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করছি, তাই অভিভাবকহীন এতিম এই শিশুটিকে আমরা প্রাথমিক ভাবে মনোনয়ন করেছি।

Hafez Maulana Mufti. Mohammad Ashraful Islam
Ethics Education Teacher, DISS
Khatib, Central Mosque, Daffodil Smart City
Ashuli , Savar, Dhaka