পদ্মা সেতুর ঢেউ আকাশপথেও, যাত্রীসংকটে বরিশালে বন্ধ হচ্ছে নভোএয়ারের ফ্লাইট

Author Topic: পদ্মা সেতুর ঢেউ আকাশপথেও, যাত্রীসংকটে বরিশালে বন্ধ হচ্ছে নভোএয়ারের ফ্লাইট  (Read 948 times)

Offline Shahana Parvin

  • Newbie
  • *
  • Posts: 26
  • Test
    • View Profile
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা-বরিশাল নৌপথে যাত্রী সংকটে মঙ্গলবার থেকে বন্ধ হয়ে গেছে দ্রুতগামী নৌযান এমভি গ্রিন লাইন-৩। পদ্মা সেতুর এই ঢেউ শুধু নৌপথেই নয়, এবার আকাশপথেও লেগেছে। ঢাকা-বরিশাল আকাশপথে চলাচলকারী বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা নভোএয়ার আগামী ১ আগস্ট থেকে এই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

নভোএয়ারের মার্কেটিং অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশনের সহকারী ব্যবস্থাপক নিলাদ্রী মহারত্ম প্রথম আলোকে বলেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে বরিশাল-ঢাকা রুটে নভোএয়ারের ফ্লাইট চলাচল আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে যাত্রী বাড়লে পরিস্থিতি বুঝে সংস্থাটি পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত মঙ্গলবার নিজস্ব ফেসবুক পেজে ঢাকা-বরিশাল নৌপথে এমভি গ্রিন লাইনের যাত্রী পরিষেবা বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। প্রতিষ্ঠানটির স্থানীয় কর্মকর্তারা বলছেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল নৌপথে যাত্রীসংখ্যা কমে গেছে। এ জন্য আপাতত ঢাকা-বরিশাল ভায়া হিজলা নৌপথে গ্রিন লাইনের সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ঢাকা-কালিগঞ্জ-ইলিশা (ভোলা) রুটে এমভি গ্রিন লাইন-২ নিয়মিত চলাচল করবে।

বরিশাল বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ার পর বরিশাল-ঢাকা রুটে যাত্রীসংখ্যা কমতে থাকে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়ে বেসরকারি বিমানসংস্থা নভোএয়ার ও ইউএস বাংলা। যাত্রী ধরে রাখতে তারা ঈদুল আজহার পর ভাড়া কমিয়ে দেয়। ইউএস বাংলা প্রতি আসনে সাড়ে চার হাজার থেকে ভাড়া কমিয়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা করে। আর নভোএয়ার চার হাজার টাকা থেকে কমিয়ে তিন হাজার ৪৯৯ টাকা নির্ধারণ করে। বাংলাদেশ বিমানও একই পথ অনুসরণ করে ২০০ টাকা ভাড়া কমিয়ে দেয়। কিন্তু ভাড়া কমিয়েও খরচ তুলতে পারছিল না নভোএয়ার। তারা ১ আগস্ট থেকে ফ্লাইট চলাচল স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
নভোএয়ারের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর কারণে বরিশাল-ঢাকা ও ঢাকা-যশোর রুটে আশঙ্কাজনক হারে যাত্রী কমে গেছে। ঢাকা-যশোর রুটের যাত্রী পরিস্থিতি কিছুটা ভালো থাকায় ওই রুটে ফ্লাইট চলাচল অব্যাহত থাকবে। আগে সপ্তাহে সাত দিন ঢাকা-বরিশাল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করত সংস্থাটি।

ইউএস বাংলার বরিশালের বিপণন কার্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এখন ঢাকা-বরিশাল রুটে তাদের ৭০ আসনের উড়োজাহাজ যাত্রী পরিবহন করছে। সেতু চালু হওয়ার পর প্রায়ই প্রতিটি ফ্লাইটে এক–তৃতীয়াংশ আসন ফাঁকা যাচ্ছে। এ অবস্থায় ইউএস বাংলা কত দিন এই রুটে সেবা দিতে পারবে তা নিয়েও শঙ্কায় আছে প্রতিষ্ঠানটি।বাংলাদেশ বিমানের বরিশাল স্টেশনের ব্যবস্থাপক শওকত আলী খান প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকায় যাতায়াতে সময় কমে গেছে। খরচ কমে আসায় আকাশপথে যাত্রী কমেছে। গত শনিবার থেকে বিমানের ভাড়া ৩ হাজার ২০০ থেকে কমিয়ে ৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।

পদ্মা সেতু চালুর পর বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চল থেকে সড়কপথে যাত্রীর চাপ দুই থেকে তিন গুণ বেড়ে যায়। এতে দক্ষিণের নৌপথগুলোতে যাত্রী সংকট দেখা দেয়। বরিশাল থেকে প্রতি আধা ঘণ্টা পরপর বেসরকারি পরিবহন ও বিআরটিসির বাস যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছুটছে। আগে যেখানে একটি বাস ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ দুটি ট্রিপ দিতে পারত, এখন দৈনিক তিন থেকে চারটি ট্রিপ দিতে পারছে। এ ছাড়া গত এক মাসে দক্ষিণের ৬ জেলার সড়কপথে অন্তত ৫০০ নতুন বাস যাত্রী পরিবহনে যুক্ত হয়েছে। ফলে নৌ ও আকাশপথের যানগুলো যাত্রীসংকটে পড়েছে।