অহংকার
আল্লাহ্ তা'আলা কুরআন মাজিদে 'অহংকারকে' হারাম করেছেন। এবং এটিও বলেছেন যে সুঁইয়ের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করা যেমন অসম্ভব তেমনি অহংকারীর জন্য জান্নাতে যাওয়া অসম্ভব। মানুষ আপনাকে সম্মান করে দাঁড়িয়ে যাক, মানুষ আপনাকে সালাম দিক, মানুষ আপনার জন্য প্রশংসা করুক এগুলো সবই অহংকার। আল্লাহ্র রসূল (স) বলেছেন, অহংকার হচ্ছে সত্যকে অস্বীকার করা এবং মানুষকে তুচ্ছ মনে করা। সুতরাং আপনি তখনি নিজের জন্য মানুষ দাঁড়িয়ে যাওয়া , প্রশংসা করা, হাতে তালি দেয়া পছন্দ করবেন যখন আপনি মানুষের চাইতে নিজেকে বড় মনে করবেন এবং মানুষকে ছোট মনে করবেন। এটাই মূলত অহংকার। একারনে আল্লাহ্র রসূল (স) হেলান দিয়ে বসে খাবার খেতেন না, বরং গোলামের মত বসে খাবার খেতেন। এবং তিনি সবসময় বলতেন আমি তো একজন গোলাম (আল্লাহ্র দাস)। তিনি এই দুআও করতেন যে, হে আমার রব আমাকে আপনি গোলাম হিসেবেই দুনিয়াতে রাখুন এবং গোলাম হিসেবেই মৃত্যু দিন। অবশ্যই দুনিয়াতে তারাই সফলকাম যারা আল্লাহ্র গোলাম বা দাস হয়ে পৃথিবীর অল্প সময় পার করবে। তাদের জন্য আছে অফুরন্ত নেয়ামতে ঘেরা জান্নাত। বড় গোঁফ রেখে, পায়ের গোড়ালির নিচে কাপড় পড়ে, দামি ফোন ব্যবহার করে, মোটরসাইকেল ব্যবহার করে, দামি গাড়ি, দামি ঘড়ি , দামি পোশাক দিয়েও মানুষ অহংকার করে। একারনে খেয়াল রাখতে হবে এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনভাবেই যাতে অহংকার না চলে আসে। আর সবচাইতে নিরাপদ হচ্ছে অহংকারে যাওয়ার রাস্তাগুলোও বন্ধ রাখা।
রসূল (স) এর প্রবেশের ফলে কেউ দাঁড়িয়ে গেলে উনার অহংকার তৈরি হবে এমন কিন্তু নয়, কিন্তু তারপরেও এতে অহংকার চলে আসতে পারে বলে উনি এগুলো অপছন্দ করতেন। তাই আমাদের উচিৎ অহংকারে যাওয়ার পথ বন্ধ রাখা, আর নাহয় অহংকার থেকে পুরোপুরিভাবে সতর্ক থাকা। আল্লাহ্র রসূল (স) বলেছেন, সরিষা পরিমাণ অহংকার থাকলে ঐ ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তাই সকল ক্ষেত্রে নিজেকে সাধারণভাবে রাখার চলার চেষ্টা করুন। লোকের বাহবা সম্মান পাওয়ার চেষ্টা করবেন না, পোশাক পরিচ্ছেদ এবং ব্যবহারিক জিনিসপত্রের ক্ষেত্রে অহংকারের ব্যপারে সতর্ক থাকুন। মানুষকে তুচ্ছ মনে করবেন না। কারন আল্লাহ্র কাছে ধনসম্পদ, সৌন্দর্য, পোশাকের কোন মূল্য নেই, আল্লাহ্ দেখেন মানুষের তাকওয়া বা আল্লাহ্ভীতি। তাই কে আল্লাহ্র কাছে সম্মানিত তা আমরা বলতে পারবো না। নিজেকে দাস হিসেবে দুনিয়াতে রেখে চলাফেরা করুন।
Source: https://www.facebook.com/MuslimLesson