রোজা অবস্থায় যেসব কাজ মাকরুহ
মাকরুহ অর্থ অপছন্দনীয়। যেসব কাজ করলে গুনাহ হয় না; তবে ইসলামে অপছন্দ করা হয়েছে সেগুলোকে মাকরুহ বলে। রোজার ক্ষেত্রেও অনেক কাজ এমন রয়েছে, যেগুলো করলে রোজা ভঙ্গ হবে না। তবে এ ধরনের কাজ করা ঠিক নয় :
১. বিনা প্রয়োজনে কোনো কিছুর স্বাদ গ্রহণ করা বা চিবানো। তবে কোনো নারীর স্বামী কঠোর স্বভাবের হলে স্ত্রীর জন্য তরকারির স্বাদ পরীক্ষা করা মাকরুহ নয়।
২. এমনভাবে কুলি করা কিংবা নাকে পানি পৌঁছানো যে পানি ভেতরে প্রবেশের আশংকা হয়।
হজরত লাকিত ইবনে সাবিরা (রা.) থেকে বর্ণিত— রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন— ‘নাকে পানি দেওয়ার সময় ভালোভাবে নাকে পানি দাও। তবে রোজাদার হলে নয়। (জামে তিরমিজি, হাদিস: ৭৬৬; সুনানে আবু দাউদ ১/৩২২; মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ৯৮৪৪)
৩. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে অনেক থুতু জমা করে গিলে ফেলা।
৪. কয়লা, মাজন বা টুথপেস্ট দ্বারা দাঁত মাজা।
৫. বিনা প্রয়োজনে শিশুর খাদ্য চিবিয়ে দেওয়া। রোজাদার নারী তার বাচ্চার জন্য খাদ্য চিবানোকে ইবরাহীম নাখায়ী (রহ.) দোষের বিষয় মনে করতেন না। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক ৪/২০৭)
৬. ইস্তেঞ্জায় অধিক পানি ব্যবহার করা।
৭. পানিতে বায়ু নিঃসরণ করা।
৮. গীবত–শেকায়াত করা, মিথ্যা বলা, গালিগালাজ করা, টিভি-সিনেমা ইত্যাদি দেখা, গান-বাদ্য শ্রবণ করা, এবং যে কোনো বড় ধরনের গুনাহে লিপ্ত হওয়া।
আর এ কাজগুলো যে সর্বাবস্থায় হারাম তা তো বলাই বাহুল্য। হাদিসে কুদসিতে আছে— আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন— ‘তোমাদের কেউ যখন রোজা রাখে, তখন সে যেন অশালীন কথাবার্তা না বলে ও হইচই না করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯০৪)
সুনানে আবু দাউদের রেওয়ায়েতে এ শব্দ রয়েছে, রোজাদার যেন কোনো অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত না হয়। (হাদিস: ৩৩৬৩ (১/৩২২)
৯. রোজা অবস্থায় শরীর থেকে ইচ্ছাকৃতভাবে ইনজেকশন ইত্যাদির মাধ্যমে এ পরিমাণ রক্ত বের করা মাকরুহ, যার দ্বারা রোজাদার খুব দুর্বল হয়ে যায়।
সাবিত আল বুনানি (রহ.) বলেন, হজরত আনাসকে (রা.) জিজ্ঞাসা করা হলো রোজা অবস্থায় শিঙ্গা লাগানোকে কি আপনারা মাকরুহ মনে করতেন? তিনি বলেন, ‘না। তবে এ কারণে দুর্বল হয়ে পড়লে তা মাকরুহ হবে। (বুখারি, হাদিস ১৯৪০)
১০.রোজা অবস্থায় মাথায় পানি ঢালা এবং ভেজা কাপড় শরীরে জড়িয়ে রাখা।
১১. বিনা ওজরে গ্লুকোজ জাতীয় ইনজেকশন (যা খাদ্যের চাহিদা মেটায়) নেওয়া মাকরুহ।
১২. এমন কাজ করা মাকরুহ যা দ্বারা রোজাদার নিতান্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। যার কারণে রোজার প্রতি বিরক্তিভাব আসে। যেমন— রোজা রেখে প্রচণ্ড ভারি কাজ করা অথবা রোজা রেখে শিঙ্গা লাগানো/ রোজা রেখে রক্তদান।
সূত্র: ফাতাওয়া আলমগিরি ১/১৯৯-২০০, রদ্দুল মুহতার ৩/৩৯৯-৪০০। আল মুহিতুল বুরহানি ৩/৩৫৬
Source: https://www.jugantor.com/islam-life/659452/%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%BE-%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A7%9F-%E0%A6%AF%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A6%AC-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%9C-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%B9