ইফতারের মুহূর্ত রোজাদারের আনন্দ

Author Topic: ইফতারের মুহূর্ত রোজাদারের আনন্দ  (Read 454 times)

Offline Khan Ehsanul Hoque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 549
  • Test
    • View Profile
ইফতারের মুহূর্ত রোজাদারের আনন্দ

ভোর থেকে সারা দিন ‘সাওম’ পালন শেষে রোজাদার সূর্যাস্তের পর প্রথম যে পানাহারের মাধ্যমে উপবাস ভঞ্জন করেন, তাকে ‘ইফতার’ বলা হয়। আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘তোমরা সন্ধ্যা (সূর্যাস্ত) পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ করো।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)। যে খাদ্য বা পানীয় দ্বারা ইফতার করা হয়, তাকে ‘ইফতারি’ বলা হয়। ইফতারের আগেই ইফতারি সামনে নিয়ে অপেক্ষা করা এবং যথাসময়ে ইফতার করা সুন্নত। ইফতারি সামনে নিয়ে দোয়া করলে সেই দোয়া আল্লাহ কবুল করেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রোজাদারের দোয়া আল্লাহর নিকট এতই আকর্ষণীয় যে আল্লাহ তাআলা রমজানের সময় ফেরেশতাদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন, ‘রমজানে তোমাদের পূর্বের দায়িত্ব মওকুফ করা হলো এবং নতুন দায়িত্বের আদেশ করা হলো, তা হলো আমার রোজাদার বান্দাগণ যখন কোনো দোয়া–মোনাজাত করবে, তখন তোমরা আমিন! আমিন! বলতে থাকবে।’ (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক)। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি খুশি—একটি ইফতারের সময়, অপরটি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়।’ (মুসলিম)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমার বান্দাদের মধ্যে তারা আমার বেশি প্রিয়, যারা দ্রুত ইফতার করে।’ (তিরমিজি, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬০, পৃষ্ঠা: ১৩১)। নবীজি (সা.) বলেন, ‘যখন রাত সেদিক থেকে ঘনিয়ে আসে ও দিন এদিক থেকে চলে যায় এবং সূর্য ডুবে যায়, তখন রোজাদার ইফতার করবে।’ (বুখারি: ১৮৩০)। ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা উত্তম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সে পর্যন্ত দ্বীন ইসলাম বিজয়ী থাকবে, যে পর্যন্ত মানুষ শিগগিরই ইফতার করবে। কেননা ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা বিলম্বে ইফতার করত।’ (মুসনাদে আহমাদ)। হজরত সাহল ইবনে সাআদ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যত দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে।’ (বুখারি: ১৮৩৩)।

খেজুর দ্বারা ইফতার করা সুন্নত; তবে যেকোনো ফল দ্বারা ইফতার করলেও সুন্নত আদায় হবে। মিষ্টান্ন দ্বারা ইফতার করলেও সুন্নত পালিত হবে। যদি তা–ও সম্ভব না হয়, তাহলে যেকোনো হালাল খাদ্যবস্তু দ্বারা এমনকি শুধু পানি দিয়েও ইফতার করা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দ্বারা; নিশ্চয় পানি পবিত্র।’ (তিরমিজি ও আবু দাউদ; আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)। পানিমিশ্রিত দুধ দ্বারা ইফতার করার কথাও বর্ণিত আছে। মাগরিবের নামাজের আগেই ইফতার করা মুস্তাহাব বা উত্তম। ইফতারের সময় দোয়া কবুল হয়। কোরআনে কারিমে ও হাদিস শরিফে উল্লেখ রয়েছে এমন দোয়া উত্তম। এ ছাড়া নিজের ভাষায় নিজের মতো করে দোয়া করা যায়। ইফতারের আগে এই দোয়া পড়া সুন্নত, ‘আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু।’ অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার জন্যই আমি রোজা রেখেছি, আপনার রিজিক দ্বারাই ইফতার করছি। (আবু দাউদ, সাওম অধ্যায়)।

ইফতার করা যেমন ফজিলতের, ইফতার করানো তেমনি বরকতের ও সওয়াবের কাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, সে জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে এবং রোজাদারের সওয়াবের সমপরিমাণ সওয়াব সে লাভ করবে। তবে ওই রোজাদারের সওয়াব কম করা হবে না। সাহাবাগণ বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)!

আমাদের অনেকেরই রোজাদারকে ইফতার করানোর সামর্থ্য নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, পানিমিশ্রিত এক পেয়ালা দুধ বা একটি খেজুর অথবা এক ঢোঁক পানি দ্বারাও যদি কেউ কোনো রোজাদারকে ইফতার করায়, তাতেও সেই পরিমাণ সওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তিসহকারে আহার করাবে, আল্লাহ তাআলা তাকে (কিয়ামতের দিনে) আমার হাউজে কাউসার থেকে এমন পানীয় পান করাবেন, যার ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করার আগপর্যন্ত তৃষ্ণার্ত হবে না।’ (মুসনাদে আহমাদ)।

Source: https://www.prothomalo.com/opinion/column/w24w37a5iu
Khan Ehsanul Hoque

Daffodil International University
01847334702
fd@daffodilvarsity.edu.bd
www.daffodilvarsity.edu.bd