« on: April 05, 2025, 12:18:19 PM »
হথর্ন ইফেক্ট" একটা ইন্টারেষ্টিং হিউম্যান বিহেভিওর
১৯৩২ সালে সাইকোলজিস্ট এলটন মায়োর নেতৃত্বে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি হথর্ন নামক এক ফেক্টরীতে একটা এক্সপেরিমেন্ট কন্ডাক্ট করেন। এক্সপেরিমেন্টে তারা দেখতে পান যে যখনই শ্রমিকরা কোনো সুপারভাইজারের তত্ত্বাবধায়নে থাকে তখনই তাদের প্রোডাক্টিভিটি বেড়ে যায়। এই বেড়ে যাওয়া ফেনোমেনাকেই "হথর্ন ইফেক্ট" বলে আমরা মোটামুটি সবাই এই হথর্ন ইফেক্টে আসক্ত ।
মাত্রাতিক্ত জোরে গাড়ি চালাচ্ছি? পুলিশ দেখলেই আস্তে করে স্পিড কমিয়ে দেই
কিউবিকেলে রিলেক্সে মুডে কাজ করছি? বস ঢুকতেই শিরদাঁড়া খাড়া করে ফেলি
হোটেল লবির কর্নারে দুষ্টামি করছি, সিকিউরিটি ক্যামেরা দেখলেই ভদ্র হয়ে যাই
জিমে আলসেমি করছি? ইন্সট্রাক্টর আসতেই মারাত্মক অ্যাকটিভ হয়ে যাই
কিংবা ক্লাসরুমে হট্টগোল করছি? টিচার ঢুকছি সবাই আলিফ হয়ে যাই
অর্থাৎ আমরা যখনই কোনো অথরিটির প্রেসেন্স ফিল করি,আমাদের বিহেভিওর অটোমেটিক ইম্প্রুভ হয়ে যায়।
এই "হথর্ন ইফেক্ট" আমাদের ইবাদাহতেও বিদ্যমান। বাসায় কেউ না থাকলে আমাদের নামাজ এক রকম আর মসজিদে যখন ইমাম সাহেব আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে তখন নামাজ অন্য রকম। আমাদেরকে যিনি বানিয়েছেন তিনিও ভালো করেই জানেন আমাদেরকে এই বিহেভিওর সম্পর্কে তাই তো নবুওতের প্রায় শেষ প্রান্তে তিনি জিব্রাঈল আমিনকে পাঠালেন সাহাবাদের সামনে আমাদেরকে এই ইফেক্টের ইম্পর্টেন্স জানানোর জন্য।
আসল ঘটনাটা অনেকটা এরকম:
রাসুলের জীবনের শেষ প্রান্তে একদিন সাহাবাদের কে দারস দিচ্ছিলেন এমন সময় জিব্রাইল আমিন মানুষের বেশে এসে রাসুলকে ৪ টি প্রশ্ন করেন
প্রথমে জানতে চান "ইসলাম কি?"
রাসূল বলেন ইসলাম হলো আমাদের ৫ টি পিলার
শাহাদা, সালাহ, সিয়াম, জাকাহ এবং হজ
তারপর জানতে চান "ইমান কি?"
রাসূল উত্তর দেন, ইমান হলো আমাদের ফেইথের ৬ টা এলিমেন্ট। আল্লাহ, তার রাসূলগণ, তার ফেরেশতাকুল, তার কিতাব, শেষ দিবসে এবং ডেসটিনির উপর বিশ্বাস রাখা।
তারপর জানতে চান
"ইহসান কি?"
রাসূল তখন উত্তর দেন "ইহসান হলো এমন ভাবে ইবাদত করা যেন আমরা তাঁকে দেখছি আর যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে অ্যাটলিস্ট এটা মাথায় রাখা যে তিনি আমাদের দেখছেন।"
অর্থাৎ সেই "হথর্ন ইফেক্ট"
ফাইনালি প্রশ্ন করলেন
কিয়ামত কবে হবে?
রাসূলুল্লাহ বললেন,কিয়ামত কবে হবে সেটা আপনিও জানেন না, আমিও জানি না তবে এর দুটো সাইন আমি আপনাকে জানাতে পারি তারপর তাঁকে তিনি সাইন দুটো জানালেন।
জিব্রাইল আমিনের ছুড়ে দেয়া এই ৪ টি প্রশ্ন আমাদের দ্বিনের ৪ টি ডিমেনশন কে রিপ্রেসেন্ট করে। এই হাদিসের ইম্পর্টেন্স এতটাই বিশাল যে একে "উম্মুল হাদিথ" বলেও সম্মোধন করা হয়। এই হাদিস থেকে বুঝা যায় যে দ্বীনেকে সঠিকভাবে বুঝতে হলে আমাদেরকে এই ৪ টি ডিমেনশনকে এক করে বুঝতে হবে। পূর্ব যুগের উলামারা বিষয়টা বুঝেছিলেন,তাইতো এই প্রশ্ন আর উত্তর গুলোকে ঘিরে গড়ে তুলেছিলেন দ্বিনের ৪ টি ডিফারেন্ট "ফিল্ড অফ স্টাডিজ"।
"ইসলাম কি?" এর ইনডেপ্থ স্টাডিস কে নিয়ে গড়ে তুললেন "ফিকহ" বা "ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্স"
"ইমান কি?" এর ইনডেপ্থ স্টাডিস কে নিয়ে গড়ে তুললেন "আকিদা" বা "ইসলামিক থিওলজি"
"ইহসান কি? এর ইনডেপ্থ স্টাডিস কে নিয়ে গড়ে তুললেন "তাসাওউফ" বা "ইসলামিক স্পিরিচুয়ালিটি"
আর "শেষ জমানার সাইন গুলো কি?" এর ইনডেপ্থ স্টাডিস কে নিয়ে গড়ে তুললেন "ইসলামিক এসকেটলজি".
দ্বীন শিখতে গিয়ে উপলব্ধি করলাম আমরা ফিকহ এবং আকিদাতে ইদানিং যতটা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি বাকি ডিসিপ্লিনে অতটা দিচ্ছি না। ইদানীং অবশ্য এসকটলজি নিয়ে অনেকেই কথা বলছেন, তবে "ইসলামিক স্পিরিচুয়ালিটি" বা "তাসাওউফ" যেন বেমালুম হারিয়েই গেলো। অথচ এই স্পিরিচুয়ালিটি হলো দ্বিনের একটা কোর কনসেপ্ট কারণ এটাই তো আমাদের ক্যারেক্টার ফর্ম করে! ১৯০০ শতাব্দীর পূর্বে যত বই পত্র ঘাটলাম
দেখলাম যে মেক্সিমামই এই "তাসাওউফ" বা স্পিরিচুয়ালিটির উপর গুরুত্ব দিয়েছে
"কীভাবে নিজের ভিতর টা সুন্দর করা যায়"
"কীভাবে নিজের হার্ট কে পরিষ্কার রাখা যায়"
"কীভাবে নিজের আমলে খুশু আনা যায়"
এই প্রশ্ন গুলোই তো স্পিরিচুয়ালিটির এসেন্স!
অথচ ১৯০০ শতাব্দীর পর এটাকে এমনভাবে প্রেজেন্ট করা শুরু হলো যেন এটা একটা বখে যাওয়া কোনো সন্তান।
ফলশ্রুতি?
দ্বীন আগে যেটা ক্যারেক্টার বেসড ছিল তা হয়ে গেলো টেকনিক বেসড। আগে যেখানে জোর দেওয়া হতো "ধার্মিক হও" এখন সেখানে জোর দেয়া হচ্ছে "ধার্মিকের মত এপিয়ার্ড হও"।
আজকের লিখার অবজেক্টিভ?
আমরা যেন জিব্রাইল আমিনের তৃতীয় প্রশ্ন "ইহসান" এর কনসেপ্ট কে আবার রিভাইভ করতে পারি। কারণ আল্লাহ বলছেন,"নিশ্চয়ই, যারা ইহসান করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন। (সূরা আল-বাকারাহ ২:১৯৫) আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার জন্যই এই লিখা।
সাধারণত আমরা মনে করি ইহসান হলো কারো কোনো উপকার করা, যেমন আমি তোমাকে ইহসান করলাম অর্থাৎ আমি তোমাকে একটা ফেভার করলাম। ভাষাগত ভাবে এটা প্রচলিত হলেও ইসলামিক টার্মিনোলোজিতে এর মূল ভীত কিন্তু ভিন্ন, আরো গভীর।
ইহসান এসেছে হা সা না রুট থেকে। হাসান অর্থ সুন্দর,আরবি লিটারেচারে সুন্দরকে কয়েকভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। যেমন জামালাও কিন্তু সুন্দর। তবে স্পেসিফিকালি যাদের নাক উটের নাকের মত বাঁকানো সুন্দর, সেটা হচ্ছে জামালা। কারণ আরবিতে উট কে জামাল বলে তেমনি হাসান হচ্ছে চোখ, দৃষ্টি বা দেখার সাথে অ্যাসোসিয়েটেড যার চোখ সুন্দর কিংবা যেই কাজটা দেখতে সুন্দর সেটা হচ্ছে হাসান। এই এই হাসান থেকেই এসেছে ইহসান।
সো খেয়াল করে দেখুন, "আল্লাহ আমাদের দেখছে" এই কনসেপ্ট যদি আমরা সর্ব অবস্থায় এডাপ্ট করতে পারি
আমাদের প্রতি কাজ অটোমেটিকলি সুন্দর হয়ে উঠে,
আমাদের ক্যারেক্টার সুন্দর হয়ে উঠে,
আমাদের হার্ট সুন্দর হয়ে উঠে,
আমাদের আমল সুন্দর হয়ে উঠে,
আর এই এফেক্টটাই হলো ইহসান ইফেক্ট। যারা ইহসান কে রপ্ত করতে পারে তাদেরকে আমরা মুহসিন বলি।
এই মুহ্সিনদের উপর ইহসানের ইম্পেক্টের বিষয়ে ইমাম গাজ্জালী সুন্দর একটা কথা বলেছেন, বলেন আমরা যখন মুহসিন হয়ে উঠি তখন দুটো বিষয় ঘটে:
প্রথমত আমরা যখন কোনো খারাপ কাজ করতে থাকি তখন ইমমেডিয়েটলি সেটা রেকগনাইজ করতে পারি। তখন কনসিয়াসলি নিজেকে প্ৰশ্ন করতে পারি যে,
"আমি আল্লাহ কে বেশি ভালোবাসি?
নাকি "আমার নাফ্সে বেশি ভালোবাসি?"
"যদি আল্লাহকে বেশি ভালোবেসে থাকি তাহলে নাফ্সের ইচ্ছায় করা এই কাজ গুলো আমি পরিত্যাগ করলাম"
এভাবে আমরা কনসাসলি সঠিক রাস্তায় ফিরে আস্তে পারি।
দ্বিতীয়ত আমরা যখন ভালো কিছু করি এবং মানুষ যখন আমাদেরকে প্রশংসা করতে থাকে। তখনও সেটা কনসাসলি বুঝতে পারি। তখনও নিজেকে কনশালী প্রশ্ন করতে পারি,
"আমি কি আল্লাহকে ভালোবেসে এই কাজ করছি নাকি মানুষের প্ৰশংসার জন্য করছি" তখন নিজের হার্টকে কেলিব্রেট করতে পারি এবং তখন এতো টুকু অন্তত বুঝতে পারি যে যদি কিছু ভাল কিছু করে থাকি তা এই জন্য করছি যে"এটা করা উচিত ছিল কিংবা এটা আল্লাহ ভালোবাসে এই জন্য করছি।"
ইট ড্যাশেন্ট মেটার
মানুষ আমাকে ভালো বললো কি না বললো আমি কারো প্রশংসার উপর ডিপেন্ডেন্ট না। আমি আমার নাফ্সের ইচ্ছার উপরেও ডিপেন্ডেন্ট না! এই স্টেইট টা যে কতটা লিবেরাটিং তা এক্সপেরিয়েন্স না করলে বুঝানো যাবে না।
সো এখন প্রশ্ন আসে
আমরা এই স্টেইট কিভাবে এচিভ করতে পারি?
কি ভাবে আমরা মুহসিন হতে পারি?
ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি মুহসিন হওয়ার আগে আমাদেরকে মুত্তাকী হওয়া প্রয়োজন।
মুত্তাকী আবার কি?
আগে অনেক বার বলেছি আজ আবার একটু নিজেকে মনে করিয়ে দিচ্ছি। আমরা সবাই মোটামুটি সব সময় একটা ঘোরের মধ্যে থাকি সব সময় একটা চিন্তার জগতে ডুবে আছি। আমরা সেটা টের পাই না অনেকটা মাছের মত। মাছ যেমন জানে না সে সারাদিন পানির ভিতর থাকে তেমনি আমরা জানি না যে আমরা সারাদিন চিন্তার জগতে থাকি।
বিষয়টা বুঝতে পারবেন যখন আপনি এই চিন্তার জগৎ থেকে বের হয়ে জীবনকে দূর থেকে দেখবেন
কীভাবে?
ছোট্ট একটা এক্সারসাইজ দিচ্ছি, এই মুহূর্তে নিজেকে মনে মনে প্রশ্ন করুন,
"আচ্ছা আমি এখন কি চিন্তা করছি?" অথবা
"আচ্ছা এই মুহূর্তে আমার নেক্সট চিন্তাটা কি হবে?"
প্রশ্নগুলো করে সাথে সাথে দেখার চেষ্টা করুন কোনো চিন্তা আসে কিনা? আসবে না তবে দেখবেন মাথাটা ব্লেনক হয়ে যাচ্ছে আর মাথায় হালকা ব্লাড রাশ হচ্ছে। যদি কোনো চিন্তা আসেও তখন আপনি সাথে সাথে দেখতে পাবেন ফিল করতে পারবেন যে এই মাত্র নতুন একটা নতুন চিন্তা মাথায় প্রবেশ করলো।
এই এক্সারসাইজটাকে "মাইন্ডফুল" এক্সারসাইজ বলে, আপনি যদি প্রতিদিন এই মাইন্ডফুল এক্সারসাইজ প্র্যাকটিস করতে থাকেন আপনার অব্জার্ভেশন পাওয়ার বাড়তে থাকবে আর আপনার অ্যাওয়ারনেস বিল্ড আপ হতে থাকবে। আপনি যখন "কনসিয়াসলি এওয়ার" থেকে এই চিন্তার থ্রেড গুলোকে অব্জার্ভ করা শুরু করবেন
একটা সময় ডিফারেন্সিয়েট করতে পারবেন যে, কোনটা আপনি আর কোনটা আপনার চিন্তা। আপনি তখন নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাবেন। টের পাবেন যে আপনি আপনার চিন্তার প্রোডাক্ট না। আপনি, আপনিই।
আপনি একটা স্বাধীন সত্তা, চিন্তার বেড়াজাল মুক্তি একটা ইউনিক সত্তা। সেই সত্তা যে এতদিন ঘুমিয়ে ছিল আজ সেটা জাগ্রত। আপনি আজ জেগে উঠেছেন! এই জেঁগে উঠাকে স্পিরিটলিটির ভাষায় এওকেনিং বা য়াকজা বলে।
আপনি যখন এওকেন হবেন আমি তখন নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাবেন এবং তখন আরেকটা সত্য রিয়েলাইজ করতে পারবেন। তখন ফিল করতে পারবেন যে, একজন শক্তিমান সত্তা সর্ব অবস্থায় আপনাকে দেখেছেন, আপনার রব আপনাকে দেখছেন! এই অবস্থায় অটোমেটিকলি আপনার বিহেভিওর ইম্প্রুভ হওয়া শুরু করবে। তাইতো প্রচলিত কথা আছে,"মান আরফু নাফসুহু ফাকাদ আরফু রব্বাহু" অর্থাৎ"যে নিজেকে চিনলো সে যেন তার রব কে চিনলো।"
সো এখন আপনি প্রতিটা কাজ করার সময় একাধিকবার চিন্তা আসবে যে, "তিনি তো দেখছেন" "করাটা কি ঠিক হবে?" এই যে "কনসিয়াসলি এওয়ার হয়ে নিজেকে সংযত করলেন, এই একশনটাকে বলে "তাকওয়া"। আর যারা এই স্টেটটা এচিভ করতে পারে তাদেরকে বলা হয় "মুত্তাকী"। মুত্তাকী এবং মুহ্সিন খুব কাছাকাছি দুটো বিশেষণ। তাইতো সূরা নেহালের ১২৮ নাম্বার আয়াতে দুটোকে এক করে তিনি ঘোষণা দেন, "নিশ্চয়ই, আল্লাহ তাদের সাথে আছেন যারা মুত্তাকী এবং যারা মুহসিন"। আবারো বলি মুত্তাকী এবং মুহসিন খুব কাছাকাছি দুটো শব্দ। কনফিউসড হওয়া বেশ সহজ তাই সামারি করে বলছি, তাকওয়া হচ্ছে সেই এওএরনেস যে আল্লাহ এই মুহূর্তে আমায় দেখছে তাই খারাপ কিছু করা যাবে না আর ইহসান হচ্ছে সেই এওএরনেস যে আল্লাহ এই মুহূর্তে আমায় দেখছে তাই যেই কাজটা করছি সেটা সুন্দর করে করতে হবে।
এই তাকওয়া আর ইহসানের কথা শুনলেই মাইকেল এঞ্জেলোর একটা গল্পের কথা মনে পরে যায়। ব্রু কুচঁকানোর কিছু নাই। আল্লাহর রাসূল বলেছেন, জ্ঞানীদের বাণী হলো বিশ্বাসীদের হারানো সম্পদ,তা সে যেখানেই খুঁজে পাক।"
আমি মাইকেল এঞ্জেলোর এই গল্প থেকে এই হিকমত খুঁজে নিচ্ছি। মাইকেল এঞ্জেলো যখন সিস্টিন চেপেলের সিলিং আঁকা শেষ করলেন দেখা গেলো সিস্টিন চেপেলের প্রতিটা কর্নারে তিনি প্রচণ্ড নিখুঁতভাবে কাজটি সম্পন্ন করেছিলেন এমনকি অন্ধকারাচ্ছন্ন কর্নার গুলোতেও। অন্ধকারে কাজ করতে করতে তিনি প্রায় অন্ধ হতে বসেছিলেন! তবুও তিনি কাজে কোনো ফাঁকি দেননি যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয়।
এত কানা কন্চিতেও কেন এতো এফোর্ট দিয়ে কাজ করলেন?
এখানে তো আর কেউ দেখছে না। জবাবে আকাশের পানে আঙুল তাকে করে পালটা উত্তর ছুড়েন।
"কেউ দেখছে না কে বললো?"
"উনি তো দেখছেন, তাই না?
"উনি তো দেখছেন"
এই রিয়েলাইজেশনটা আমাদের হার্টে বিশাল ইম্পেক্ট ফেলে আমরা নরম হয়ে উঠি। আমাদের লজ্জা বেড়ে যায় ,আমাদের মধ্যে গ্রেটিচুড বেড়ে যায়.আমাদের রুহানি শক্তি বেড়ে যায় এবং প্রত্যেকের জন্য এম্পেথি ফিল করা স্টার্ট করি।
যেটা বুঝলাম আমরা দ্বিনের দুটো পার্ট আছে। একটা দেখা যায় আর একটা দেখা যায় না একটা ইন্টারনাল আর একটা এক্সটার্নাল। একটা হলো টেকনিক বেসড একটা ক্যারেক্টার বেসড একটা স্পিরিচুয়াল আর একটা রিচুয়াল। এক্সটার্নালি আপনি দেখতে যতটা বিশাল ধার্মিক ইন্টার্নালি আপনি সেরকম নাও হতে পারেন। এক্সটার্নালি আপনার দাড়ি থাকতে পারে,জুব্বা পড়তে পারেন,এমনকি টাকনুর উপর কাপড়ও পড়তে পারেন কিন্তু ইন্টার্নালি আপনি হয়ত মারাত্মক হিংস্র, অন্যের সুখ আপনার সহ্যই হয় না। হিংসা বিদ্বেষ আর প্রতারণায় আপনি প্রতি নিয়ত নিমজ্জিত। কেউ আপনাকেও বিন্দু মাত্র বিস্বাস করতে পারে না। এই যদি হয় আপনার দ্বিনের অবস্থা তাহলে আপনার আর ইবলিশের মধ্যে পার্থক্য কি থাকলো?
ইবলিশের গল্প তো জানা আছে তাই না?
সে তার রিচুয়াল ইবাদাহ দিয়ে সবাই কে ছাড়িয়ে গিয়েছিলো জমিনের এমন কোনো জায়গা বাকি ছিল না যেখানে সে আল্লাহ কে সিজদা করে নাই। এক্সটার্নাল ডিমেসনসনে সে সুপার পারফর্মের তখনকার শরিয়তের সব আহকামে সে প্রচণ্ড পণ্ডিত।
তবে ইন্টারনাল ডিমেনশনে?
ইন্টারনাল ডিমেসনসনে সে ছিল এক্সট্রিমলি করাপ্টেড "ভিতর থেকে সুন্দর হতে হবে" এই কনসেপ্টই সে শিখতে পারে নাই। তাই তো হজরত আদম কে যখন তার থেকে বেশি ইজ্জত দেয়া হলো সে সেটা সহ্যই করতে পারলো না। জিদের বসে সারা জীবনের আমল টিনএজারদের মতো ছুড়ে ফেললো। সে এখনো ভেবে কূল পায় না যে"কেন আল্লাহ আদম কে আমার থেকে বেশি প্রাধান্য দিলো"। হয়তো এখনো মনে মনে ভাবে,"আদম কি আমার সত্যি আমার থেকে বেটার ছিল?
কেন ছিল?"
কারণ সে বুঝে নাই যে,আমাদের দ্বীন হচ্ছে আইস বার্গের মত উপর থেকে এর পটেনশিয়াল বুঝা যায় না বুঝতে হলে যেতে হবে পানীর নিচে। অর্থাৎ দ্বীনে উপর দিয়ে যা দেখি তা যতটা না ইম্পরটেন্ট তার থেকে বেশি ইম্পর্টেন্ট হচ্ছে তার ভিতরটা কি রকম। ইম্পর্টেন্ট হচ্ছে আমাদের আখলাক আমাদের কন্ডাক্ট আমাদের মেনার।
ইম্পর্টেন্ট হচ্ছে আমরা মানুষের জন্য কতটা ভালো ভাবছি,
মানুষের জন্য কতটা ভালো ভাবছি,
অন্যের খুশিতে কত টা খুশি হচ্ছি,
অন্যের দুঃখে কত টা দুঃখী হচ্ছি,
খেয়াল করে দেখুন উপরে যা বললাম এ সবই হচ্ছে ইন্টারনাল বিষয়। উপর থেকে দেখা যায় না আর এই বিহেভিওর গুলোই তো স্পিরিচুলিটির শিক্ষা। শিক্ষা যে নিজের হার্টকে আর নিজের সৌল কে কীভাবে আমরা প্ৰসিদ্ধ রাখতে পারি।
তাই বলছি আমাদের জীবনে এই "তাসাউফ" বা স্পিরিচুয়ালিটির কনসেপ্টটা আবার জাগ্রত করতে হবে স্পিরিচুয়ালিটি ইগনোর করে আমরা যদি শুধু রিচুয়াল নিয়েই পরে থাকি
তাহলে একটু ভাবুনতো আমাদের আর ইবলিসের মধ্যে পার্থক্যটা কি থাকলো?
~ সামিউল হক
Source: Collected.
« Last Edit: April 08, 2025, 10:50:55 AM by Badshah Mamun »

Logged