ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, এই ৭ শ্রেণীর জমির আর নামজারি লাগবে না
ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এখন থেকে সাত শ্রেণীর জমির ক্ষেত্রে আর আলাদাভাবে নামজারি করতে হবে না। অটোমেশন ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
দীর্ঘদিন ধরে দেশে ভূমি রেজিস্ট্রি ও নামজারি দুটি পৃথক মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরিচালিত হয়ে আসছিল। সাবরেজিস্ট্রার অফিস (আইন মন্ত্রণালয়) দলিল নিবন্ধন করলেও, নামজারি করতো ভূমি অফিস (ভূমি মন্ত্রণালয়)। এই দুই দফা প্রক্রিয়ার কারণে সাধারণ মানুষকে হয়রানি, সময়ক্ষেপণ ও অতিরিক্ত খরচের মুখোমুখি হতে হতো।
এবার এই জটিলতা দূর করতে আইন মন্ত্রণালয় ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি ডিজিটাল ইন্টারকানেক্টেড প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। এই অটোমেশন পদ্ধতির ফলে দলিল নিবন্ধনের তথ্য সরাসরি ভূমি অফিসের ডাটাবেজে চলে যাবে, ফলে আলাদা করে নামজারির আবেদন করার প্রয়োজন থাকবে না।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে সাবরেজিস্ট্রার অফিসে দলিল নিবন্ধনের পর সর্বোচ্চ আট দিনের মধ্যেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি সম্পন্ন হবে। ভূমির মালিককে আর ভূমি অফিসে যাওয়া লাগবে না।
যে সাত শ্রেণীর জমির নামজারি লাগবে না:
১. সাবকবলা দলিল
২. হেবা দলিল
৩. হেবাবিল এওয়াজ দলিল
৪. এওয়াজ বদল দলিল
৫. আপস বন্টননামা দলিল
৬. দান দলিল
৭. ওসিয়তনামা দলিল
ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এই অটোমেশন পদ্ধতি ইতিমধ্যেই ১৩৭ বছরের খতিয়ান (১৮৮৮–২০২৫) পর্যন্ত অনলাইন ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। অনেক এলাকায় সিএস, এসএ, আরএস ও বিএস খতিয়ানসহ বিভিন্ন জরিপ রেকর্ড এখন অনলাইনে দেখা যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, “সাবরেজিস্ট্রার অফিস থেকে দলিল নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট এসিল্যান্ড অফিসে তথ্য চলে যাবে। এসিল্যান্ড অফিস যাচাই-বাছাই করে তাৎক্ষণিকভাবে নামজারি সম্পন্ন করবে।”
এছাড়া নাদাবি দলিল (যে ক্ষেত্রে ভুলবশত অন্যের নামে রেকর্ড হয়েছে) রেজিস্ট্রি করার পর সেটিও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভূমি অফিসে আপডেট হয়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উদ্যোগ ভূমি ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতি, হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনবে এবং দেশের ভূমি প্রশাসনে একটি নতুন ডিজিটাল যুগের সূচনা করবে।
Source:
https://www.dailyjanakantha.com/law/news/866749