Religion & Belief (Alor Pothay) > Hadith

অযু

(1/3) > >>

arefin:
হযরত আমর ইবনে আবাসা রা. বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আরজ করলাম, ‘আল্লাহর রাসূল! আমাকে অযু শেখান।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘যখন তোমার সামনে অযুর পানি আসবে প্রথমে কুলি করবে। তারপর নাকে পানি দিবে ও নাক ঝাড়বে। তখন চেহারার, মুখের ও নাকের গুনাহসমূহ ঝরে পড়বে। এরপর যখন আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক মুখমন্ডল ধৌত করবে তখন পানির সাথে দাড়ির অগ্রভাগ দিয়ে চেহারার গুনাহসমুহ ঝরে পড়বে। এরপর যখন কনুইসহ দুই হাত ধৌত করবে তখন আঙ্গুলের অগ্রভাগ দিয়ে দুই হাতের গুনাহসমুহ ঝরে পড়বে। এরপর যখন মাথা মাসেহ করবে তখন চুলের অগ্রভাগ দিয়ে মাথার গুনাহসমূহ ঝরে পড়বে। এরপর যখন টাখনুসহ দুই পা ধৌত করবে তখন পায়ের আঙ্গুলির অগ্রভাগ দিয়ে পায়ের গুনাহসমূহ ঝরে পড়বে। এরপর যদি বান্দা নামাযে দাঁড়ায় এবং আল্লাহর শান মোতাবেক হামদ, ছানা ও তাঁর মহত্ব বর্ণনা করে, অন্তরকে সবকিছু থেকে খালি করে একমাত্র আল্লাহমুখী হয়, তাহলে সে নামায শেষ করার পর সদ্যজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়।’
এ হাদীস শুনে সাহাবী আবু উমামা রা. বললেন, ‘হে আমর ইবনে আবাসা! কী বলছেন ভেবে দেখুন। এভাবে একবার নামায পড়লেই বান্দা এই ফযীলত লাভ করবে?
আমর বললেন, ‘আবু উমামা! আমায় বয়স হয়েছে, মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে। এ অবস্থায় কীসের আশায় আমি আল্লাহর রাসূলের নামে মিথ্যা বলতে যাব? আমি যদি রাসূল থেকে এ কথা একবার দুইবার তিনবার সাতবার না শুনতাম আমি তা বর্ণনা করতাম না। আমি তো এই কথা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট থেকে এর চেয়েও বেশিবার শুনেছি।’

---- সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৮৩২;
------ মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৪৪৭৫;
------- আসসিরাতুয যাহাযিবয়্যাহ ২/৬৮-৬৯

▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓▓

হে মুমিন ! একটু চিন্তা করে দেখ তোমার রব তোমার প্রতি কত মেহেরবান। তিনি চান তাঁর গোনাহগার বান্দাদের গোনাহ মাফ হয়ে যাক,তাই তিনি কত বাহানাই করেছেন!! কিন্তু আমরা তাঁর দেওয়া এ সুযোগগুলো গ্রহণ করিনা, এর চেয়ে আফসুসের আর কি কোন নমুনা আছে? হে মুমিন! তোমার দিলের মালিকের কি তোমার দিলের উপর অধিকার নেই? তাহলে কেন তুমি তোমার অন্তরকে দুনিয়ার মোহ থেকে খালি করে তাঁকে একটু দেখাতে পারনা, তার সামনে নিজেকে সপে দিতে পার না? তিনি তো তোমার কাছে অন্য কিছু চাননি, চেয়েছেন তাঁর ভালবাসায় সিক্ত এক পরিচ্ছন্ন হৃদয়। তাহলে কেন তুমি তাঁর ডাকে সাড়া দাও না, যখন মসজিদের মিনার থেকে আজানের সুর তোমার কানে আসে ,কেন তখন তোমার মন তোমার রবের ডাকে সাড়া দেওয়ার জন্য ব্যাকুল হয় না, কেন তাঁর কুদরতী পায়ে তোমার মস্তক সেজদা করে ধন্য হয় না? তোমার রব কি তোমার কাছ থেকে খুব বেশী কিছু চেয়েছিলেন? তোমার রব কি সুন্দর করে দিনে তোমার পাঁচবার ডাকছেন,তবুও তুমি তাঁর ডাকে সাড়া দাও না, কোন পিতা তার সন্তানকে যদি পাঁচবার ডাকে আর সে সন্তান তার ডাকে সাড়া না দেয়,তাহলে চিন্তা করে দেখ তার পিতা তার উপর কতটুকু গোস্বা হবে, কিন্তু তোমার-আমার রব কত মেহেরবান,তিনি আমাদের উপর গোস্বা হন না,তিনি তাঁর বান্দাদের সুযোগ দিতে চান, আর দেখতে চান কে তাঁর অভিমুখী হয় আর কে মুখ ফিরিয়ে রাখে? তবে যেদিন তিনি বিচার করবেন,সেদিন যদি তিনি আমাদের উপর গোস্বা হন, তাহলে কি বাঁচার আর কোন উপায় থাকবে?! হে মুমিন ! তাই তোমায় অনুরোধ আজ থেকে তুমি তোমার প্রতিপালকের দিকে অভিমুখী হও, আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন। আমিন

arefin:
আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “কেয়ামতের দিন আমার উম্মাতকে ‘গুর্রান মুহাজ্জালীন’ বা ‘দীপ্তিমান মুখমণ্ডল ও হাত-পায়ের অধিকারী’ বলে ডাকা হবে। কাজেই তোমরা যারা দীপ্তি বাড়াতে সক্ষম তারা যেন এ (অযূ) কাজ করে।”
[বুখারী: ১৩৬, মুসলিম: ২৪৬]

arefin:
হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূল (স) বলেছেনঃ
মু'মিণের সৌন্দর্য সে পর্যন্ত পৌছে যাবে যে পর্যন্ত তার অযূর পানি পৌছে যাবে।"
[মুসলিমঃ ১০২৫]

arefin:
আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলাল্লাহ (সাঃ) বলেনঃ
 â€œঐ ব্যক্তির নামায আদায় হয় না যে সঠিক ভাবে উযু করে না এবং ঐ ব্যক্তির উযু হয় না যে উযুর শুরুতে আল্লাহ-র নাম স্মরণ করে না (অর্থাৎ বিসমিল্লাহ্ বলে না)।”
 [বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী]

arefin:
উযুর সুন্নাতসমূহ
-------------------

১. উযুর নিয়ত করা অর্থাত উযুকারী মনে মনে এই নিয়ত করবে যে, পবিত্রতা অর্জন করা ও নামায জায়েয হওয়ার জন্য আমি উযু করছি।
(সূরা বায়্যিনাহ, ৫/ বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৬৬৮৯)

২. বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়ে উযু আরম্ভ করা। হাদীসে পাকে আছে, বিসমিল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহ পড়ে উযু করলে যতক্ষণ ঐ উযু থাকবে, ফেরেশতাগণ তার নামে ততক্ষণ অনবরত সাওয়াব লিখতে থাকবে, যদিও সে কোন মুবাহ কাজে লিপ্ত থাকে।
(নাসায়ী শরীফ, হাঃ নং ৭৮/ তাবারানী সাগীর, ১ : ৭৩)

৩. উভয় হাত পৃথকভাবে কব্জিসহ তিনবার ধোয়া।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ১৫৯)

৪. মিস্‌ওয়াক করা। যদি মিস্‌ওয়াক না থাকে তাহলে আঙ্গুল দ্বারা দাঁত মাজা মিস্‌ওয়াক অর্ধ হাতের চেয়ে বেশি লম্বা না হওয়া এবং গাছের ডাল হওয়া মুস্তাহাব।
(মুসনাদে আহমাদ, হাঃ নং ৯২১৬, ১৩৯, ৩৯৯০/ তিরমিযী, হাঃ নং ২৩/ বাইহাকী, হাঃ নং ১৭৪)

৫. তিনবার কুলি করা।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ১৮৫)

৬. তিনবার নাকে পানি দেয়া এবং নাক সাফ করা।
(সহীহ ইবনে হিব্বান, হাঃ নং ১০৭৭)

৭. ততসঙ্গে প্রতিবারই নাক ঝাড়া।
(মুসলিম শরীফ, হাঃ নং ২৩৬)

৮. প্রত্যেক অঙ্গকে পূর্ণভাবে তিনবার করে ধোয়া। এর জন্য তিনবারের বেশি পানি নিতে হলে নিবে।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ১৫৯)

৯. দুই হাতে মুখ ধোয়া এবং মুখমণ্ডল ধোয়ার সময় দাড়ি খিলাল করা।
(তিরমিযী, হাঃ নং ৩১)

১০. হাত ও পা ধোয়ার সময় আঙ্গুলসমূহ খিলাল করা।
(তিরমিযী, হাঃ নং ৩৮)

১১. একবার সম্পূর্ণ মাথা মাসাহ্ করা।
(তিরমিযী, হাঃ নং ৩৪)

১২. উভয় কান মাসহ করা। উল্লেখ্য, কানের ছিদ্রের মধ্যে কনিষ্ঠ আঙ্গুল ঢুকিয়ে এবং ভিতর দিকে অবশিষ্ট অংশে শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা মাসাহ করা।
(তিরমিযী, হাঃ নং ৩৩/ আবু দাউদ, হাঃ নং ১৩৫)

১৩. উযুর অঙ্গসমূহ হাত দ্বারা ঘষে-মেজে ধোয়া।
(মুস্তাদরাক, হাঃ নং ৫৭৬/ সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাঃ নং ১১৮)

১৪. এক অঙ্গ ধোয়ার পর অন্য অঙ্গ ধৌত করতে বিলম্ব না করা।
(মুসলিম, হাঃ নং ২৪৩/ আবু দাউদ, হাঃ নং ১৭৩)

১৫. তরতীবের সাথে উযু করা। অর্থাত উযুর অঙ্গসমূহ ধোয়ার সময় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
(আবু দাউদ, হাঃ নং ১৩৭)

১৬. ডান দিকের অঙ্গ আগে ধোয়া।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ১৬৮)

১৭. শীত অথবা অন্য কোন কারণে যখন উযু করতে ইচ্ছে না হয়, তখনও উযুর অঙ্গসমূহ উত্তমরূপে ধুয়ে উযু করা।
(তিরমিযী, হাঃ নং ৫১/ মুসলিম, হাঃ নং ২৫১)

১৮. উযুর মধ্যে নিম্নোক্ত দু‘আটি পড়া :
اللهم اغفرلى ذنبى ووسع لى فى دارى وبارك لى فى رزقى
(আমালুল্‌য়াওমি ওয়াল লাইলি লি ইবনিসসুন্নী, হাঃ নং ২৮)

এবং উযু শেষ করে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া। (মুসলিম শরীফ, হাঃ নং ২৩৪)

অতঃপর এ দু‘আ পড়া : اللهم اجعلنى من التوابين واجعلنى من المتطهرين
(তিরমিযী, হাঃ নং ৫৫)

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

Go to full version