পয়লা বৈশাখ : ভিন্ন মত ভিন্ন চিন্তা

Author Topic: পয়লা বৈশাখ : ভিন্ন মত ভিন্ন চিন্তা  (Read 1840 times)

Offline mrchawdhury

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 73
    • View Profile
বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস বৈশাখ এবং ইংরেজী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস জানুয়ারি। আমাদের দেশে পয়লা বৈশাখে উদযাপিত হয় বাংলা নববর্ষ আর থার্টি ফার্স্ট নাইটে উদযাপিত হয় ইংরেজি নববর্ষ। আর সারা বছর কাটে এক মিশ্র ও শংকর অবস্থায়। আরবী বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস মহররম। কিন্তু পয়লা মহররম কোথাও নববর্ষ উদযাপিত হয় না। আসলে নববর্ষ উদযাপন আমাদের সংস্কৃতি নয়। এটা বাইরে থেকে মুসলিমজাহানে প্রবেশ করেছে। একজন ঈমানদারের চিন্তা হচ্ছে-‘নওরোযোনা কুল্লা ইয়াওম’। আমাদের ‘নওরোয’ তো প্রতিদিন। প্রতিদিনের ভোর আমাদেরকে দান করে রাববুল আলামীনের শোকর গোযারির প্রেরণা। একটি নতুন দিবসের সজীব উদ্দীপনা। জীবনের প্রতিটি ভোর আমাদেরকে আরো দান করে জীবন-সন্ধ্যার প্রস্ত্ততির চেতনা। সুতরাং বর্ষপঞ্জির একটি বা দুটি দিন নয়, জীবনের প্রতিটি দিন মুমিনের উৎসবের দিন, কর্ম-উৎসব-দিবস। এই সাধারণ কথাটি যে কোনো দিবস পালনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য । তবে পয়লা বৈশাখ, এখন যেভাবে পালন করা হয়, তা শুধু দিবস-পালন বা নববর্ষ উদযাপন নয়, অনেক ভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতার ‘মাজূনে মুরাক্কাব’। কিছুটা তরল ভাষায়, ‘সাড়ে বত্রিশ ভাজা’। এ দেশের দৈনিক পত্রিকাগুলো পয়লা বৈশাখে যে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে এবং এলিট শ্রেণীর শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবীরা যে সকল বাণী ও আলোচনা পেশ করেন তাতে চোখ বুলালে যে কেউ আমার সাথে একমত হবেন।

চিন্তাগত ভ্রষ্টতাগুলোর মধ্যে দু’টো বিষয় খুব মারত্মক সেক্যুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতা বা জাহেলী আসবিয়াত।

পয়লা বৈশাখের মাহাত্ম্য বর্ণনা করে বলা হয়, এটি বাঙালী জাতির সর্বজনীন উৎসব। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের প্রাণের উৎসব। কোনো কোনো সময় আরো স্পষ্ট করে বলা হয়, মুসলমানের ধর্মীয় উৎসব ঈদ, হিন্দুর ধর্মীয় উৎসব পুজা, আর হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকল বাঙালির  উৎসব পয়লা বৈশাখ।

এ জাতীয় বক্তব্যে সেক্যুলারিজম ও ধর্মনিরপেক্ষতা কিংবা বলুন জাতিসত্তার পরিচয়ে ধর্মকে বর্জন করার চিন্তাই কার্যকর। এ যে একটি কুফরী চিন্তা তা তো বলাইবাহুল্য। মুসলমানের ধর্ম ইসলাম, মুসলমানের আদর্শ ইসলাম এবং মুসলমানের প্রকৃত পরিচয় ইসলাম। বংশ, গোত্র, ভাষা ও ভূখন্ড-এগুলোও আমাদের পরিচয়, তবে আদর্শিক পরিচয় নয়, প্রাকৃতিক পরিচয়। আমাদের আদর্শিক পরিচয় ইসলাম। সুতরাং ইসলামই আমাদের চিন্তা ও কর্মের নিয়ন্ত্রক।

তো পয়লা বৈশাখের উৎসব-অনুষ্ঠানে ধর্মনিরপেক্ষতার তত্ত্ব দাখিল করে এর একটি দর্শনগত ভিত্তি দাঁড় করানোর প্রকৃত উদ্দেশ্য কী? এটা কি বাঙালী মুসলিম সমাজের ইসলাম বিরোধী সাম্প্রদায়িকতার বিকাশ-প্রচেষ্টা?

পয়লা বৈশাখের তাৎপর্য বর্ণনা করে আরো বলা হয়, এ সকল জাতি বিনাশী চিন্তাভাবনাকে কুরআনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। মুসলমানদের বলা হয়েছে-

يا ايها الذين آمنوا ادخلوا فى السلم كافة. ولا تتبعوا خطوات الشيطان، انه لكم عدوم مبين.

হে ঈমানদারগণ তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে দাখিল হও। শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।-সূরা বাকারা (২) : ২০৮

সুতরাং ধর্মপরিচয়ে মুসলিম আর পর্ব-উৎসবে অন্যকিছু এমনটির সুযোগ ইসলামে নেই।

পয়লা বৈশাখের তাৎপর্য বর্ণনা করে আরো বলা হয়, ‘এ হচ্ছে শেকড় সন্ধান, শেকড়ের দিকে ফিরে যাওয়া।’ কিন্তু কী অর্থ শেকড়ের? কোন অতীতকে নির্দেশ করে এই ‘শেকড়’ শব্দটি? এই প্রশ্নের জবাব পেতে খুব বেশি দূর যেতে হবে না। পয়লা বৈশাখের শোভাযাত্রা গুলোতে যেসব মূর্তি, মুখোশ বহন করা হয় তার সূত্র সন্ধান করলে শেকড় সন্ধানের তাৎপর্যও বের হয়ে আসবে।

যাদের অন্তরে ঈমানের কণিকা আছে তারা স্মরণ করুন আল্লাহর রাসূলের বাণী-

ثلاث من كن فيه وجد بهن حلاوة الإيمان، من كان الله ورسوله أحب إليه مما سواهما، ومن أحب عبدا لا يحبه إلا لله، ومن يكره أن يعود في الكفر بعد أن أنقذه الله منه كما يكره أن يلقى في النار.

তিনটি গুণ যার আছে সে ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করবে : যার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সবার চেয়ে প্রিয়, যে কোনো বান্দাকে ভালবাসলে আল্লাহর জন্যই ভালবাসে এবং আল্লাহর রহমতে কুফর থেকে মুক্তিলাভের পর পুনরায় সে দিকে প্রত্যাবর্তন অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো ভয়াবহ মনে করে।-সহীহ বুখারী, মুসলিম

যে মুসলিমের হৃদয় ও মস্তিস্ক এই শ্বাশত সত্যের আলোয় আলোকিত তার সামনে কোনো মিথ্যা, কোনো কপটতা মুখ লুকিয়ে থাকতে পারবে না। ‘সর্বজনীন উৎসব’ ‘বাঙালী জাতির নিজস্বতা’ ‘সংস্কৃতির শেকড় সন্ধান’ ইত্যাদি আবেগ উদ্দীপক শব্দসম্ভারের প্রকৃত পরিচয় তার কাছে গোপন থাকবে না। তিনি জানবেন, কুরআনের ভাষায় এগুলোকে বলে-‘তাযঈনুস শয়তান’ বা শয়তানের মায়াজাল বিস্তার।

এই মিথ্যার মরিচিকা থেকে রক্ষার জন্যই যুগে যুগে নবী-রাসূল প্রেরিত হয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وعادا وثمود وقد تبين لكم من مسكنهم وزين لهم الشيطان اعمالهم فصدهم عن السبيل وكانوا مستبصرين.

এবং আদ ও সামুদকে (ধ্বংস করেছিলাম)। তাদের বাড়িঘরই তোমাদের জন্য এর সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান তাদেরকে সুপথ থেকে নিবৃত্ত করেছিল। অথচ তারা ছিল বিচক্ষণ।-সূরা আনকাবূত (২৯) : ৩৮

শেষ বাক্যটি-‘অথচ তারা ছিল বিচক্ষণ’ বিশেষ মনোযোগ দাবি করে। বর্তমান সময়ের জ্ঞানগর্বী সম্প্রদায়ের জন্য এতে আছে সুস্পষ্ট বার্তা।

পয়লা বৈশাখের উদযাপন-পদ্ধতিতে আরো যেসব অনাচার রয়েছে তার মধ্যে মারাত্মক কয়েকটি হচ্ছে, মুসলিমসমাজে শিরক ও পৌত্তলিকতার বলদর্পী মহড়া, বেশ-ভূষা এবং আচরণেবিজাতীয় সংস্কৃতির অনুকরণ এবং গান-বাজনা; বেপর্দা-বেহায়াপনা;অপচয়-অপব্যয় ইত্যাদি হারাম ও মুনকার কাজ। এরপরও কি ঈমানদার মুসলিমের কর্তব্য হবে না, এই উৎসব থেকে নিবৃত্ত হওয়া?

Offline 710000757

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 201
  • Taslim Ur Rashid
    • View Profile
Thanks Sir for sharing your opinions.
Taslim Ur Rashid
Lecturer
Department of Nutrition and Food Engineering
Daffodil International University

Offline tany

  • Faculty
  • Sr. Member
  • *
  • Posts: 401
  • Tajmary Mahfuz,Assistant Professor,Dept of GED
    • View Profile
Tajmary Mahfuz
Assistant Professor
Department of GED