46
Software Engineering / “অ্যালান টুরিং”- প্রকৃতির সাথে গণিতের সমন্বয়কারী একজন বিজ্ঞানী
« on: February 20, 2020, 10:43:05 AM »
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একজন মহানায়ক– “অ্যালান টুরিং“। মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী কিভাবে একটা যুদ্ধের মহানায়ক হতে পারে! হ্যাঁ, ঠিকই বলেছি। পরে বলছি সেসব কথা…
অ্যালান ম্যাথিসন টুরিং, ১৯১২ এর মাঝের দিকে ইংল্যান্ডে জন্ম, যাকে আধুনিক তত্বীয় কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর জনক বলা হয়। কম্পিউটার বিজ্ঞানের মৌলিক দুটি ধারণার সাথে তার নাম জড়িত– “টুরিং টেস্ট” এবং “টুরিং মেশিন“।
প্রথমটির মাধ্যমে তিনি কম্পিউটারের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা এবং মানুষের মস্তিষ্কের চিন্তাচেতনার মধ্যে সম্পর্কের বিস্তর ধারনা দিয়েছেন যার রূপ আজকের এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। এবং অন্যটি সেই বিখ্যাত যন্ত্র যার বর্তমান রূপ আমাদের এই আধুনিক কম্পিউটার মেশিন।
বালক টুরিং
তিনি গণিতের মাঝে লুকিয়ে থাকা নানান প্রকৃতিক রহস্য এবং কোড নিয়ে কাজ করতেন। অ্যালান টুরিং বিশ্বাস করতেন প্রকৃতির ফুল, ফল, মাছ ইত্যাদির মধ্যে কোড এবং রহস্য লুকিয়ে আছে এবং তার জীবদ্দশায় এসব উদঘাটন করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তিনি চেষ্টা করেছেন সকল কিছুই ম্যাথম্যাটিক্যাল সমীকরণে প্রকাশ করতে এবং এই প্রকৃতিকে ডিকোডেড করতে!
তার এই ডিকোড করার আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে তিনি স্বয়ং অবদান রেখেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। সেসময় জার্মান আর্মি এগিয়ে যাচ্ছিল তাদের তৈরি একটি যন্ত্রের জন্য, যার মাধ্যমে সৈন্যরা গোপন সংকেত ব্যবহার করে তথ্য আদান– প্রদান করতে পারতো। এই সময় ঐ সংকেত থেকে তথ্য সংগ্রহ করা খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে যায় ব্রিটিশদের কাছে। আর সেই ডিকোড করার যন্ত্র আবিষ্কার করার নেত্রীত্ব দেন অ্যালান টুরিং, যে যন্ত্রটি “এনিগমা মেশিন” এর এনক্রিপ্ট করে পাঠানো সংকেত থেকে পুনরায় তথ্য উদ্ধার করতে পারতো। এভাবে বৃটিশরা গোপন তথ্য পাওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধে এগিয়ে থাকতে সক্ষম হয় এবং ধারনা করা হয় অ্যালান টুরিং এর এই যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দুই– তিন বছর আগেই শেষ হয়ে যায় এবং ১৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৪০ লক্ষ মানুষের জীবন বেঁচে যায়!
এনিগমা মেশিন
অ্যালান টুরিং প্রকৃতির বস্তুসমূহের মধ্যে গণিতের সমীকরণ খুঁজে রহস্য উদঘাটন করার অর্থাৎ “ফিলোট্যাক্সিস” এর উপর গবেষণা করেছেন। যার একটি অন্যতম ফসল সূর্যমুখী ফুলের পাপড়িতে “ফিবোনাচ্চি ফিলোট্যাক্সিস” এর বিন্যাস দেখতে পাওয়া।
মৌলিক কিছু ধারণা প্রদানকারী এই বিজ্ঞানী খুব বেশিদিন কাজ করে যেতে পারেননি, তার কিছু পারসোনাল ইন্টারেস্ট থাকার কারণে। তিনি সমকামী হওয়ার করনে সেসময় বৃটিশ সরকার একটি ওষুধ গ্রহণ করতে বাধ্য করেন। এবং পরবর্তীতে, যে সরকারের জন্য এতটা কষ্ট করেছেন, সেই সরকারের দেয়া এই সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। ফলে ১৯৫৪ সালের দিকে সায়ানাইড যুক্ত একটি আপেল গ্রহণ করেন এবং স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২০০৯ সালের দিকে এসে বৃটিশ সরকার তাকে দেয়া সিদ্ধান্ত ভুল শিকার করেন এবং মরণোত্তর ক্ষমা প্রার্থনা করেন…
২০ শতকের সেরা একজন বিজ্ঞানী যার অনেক চিন্তাচেতনাই সেসময় অনেকে বুঝতে পারেনি, যা পরবর্তীতে কাজে লেগেছে। Code Breaker নামে তার উপর একটি ডকুমেন্টরি রয়েছে, যেটি দেখলে তার মাত্র ৪১ বছর বেঁচে থাকার কারণে আফসোসের সীমা থাকে না।
পারসোনালি আমার অনেক প্রিয় একজন বিজ্ঞানী যার নামে আমার ভার্সিটির একটি ল্যাবের নামকরণ করা হয়েছে, এবং সেখান থেকেই তার সম্পর্কে জানতে শুরু করি। আজ তার পৃথিবীতে পবর্তনের দিন উপলক্ষ্যে তার সম্পর্কে লেখা। পরবর্তীতে সময় হলে তার করা কম্পিউটারের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার মজাদার টুরিং টেস্ট সম্পর্কে লিখবো। সেপর্যন্ত আশা রাখি, “বর্তমান সময় থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকা এইসকল মানুষেরা চিরজীবন বেঁচে থাক সবার মাঝে”। ধন্যবাদ সবাইকে…
আমার ব্লগের মূল লেখাঃ https://bit.ly/2V7it20
অ্যালান ম্যাথিসন টুরিং, ১৯১২ এর মাঝের দিকে ইংল্যান্ডে জন্ম, যাকে আধুনিক তত্বীয় কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর জনক বলা হয়। কম্পিউটার বিজ্ঞানের মৌলিক দুটি ধারণার সাথে তার নাম জড়িত– “টুরিং টেস্ট” এবং “টুরিং মেশিন“।
প্রথমটির মাধ্যমে তিনি কম্পিউটারের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা এবং মানুষের মস্তিষ্কের চিন্তাচেতনার মধ্যে সম্পর্কের বিস্তর ধারনা দিয়েছেন যার রূপ আজকের এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা। এবং অন্যটি সেই বিখ্যাত যন্ত্র যার বর্তমান রূপ আমাদের এই আধুনিক কম্পিউটার মেশিন।
বালক টুরিং
তিনি গণিতের মাঝে লুকিয়ে থাকা নানান প্রকৃতিক রহস্য এবং কোড নিয়ে কাজ করতেন। অ্যালান টুরিং বিশ্বাস করতেন প্রকৃতির ফুল, ফল, মাছ ইত্যাদির মধ্যে কোড এবং রহস্য লুকিয়ে আছে এবং তার জীবদ্দশায় এসব উদঘাটন করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। তিনি চেষ্টা করেছেন সকল কিছুই ম্যাথম্যাটিক্যাল সমীকরণে প্রকাশ করতে এবং এই প্রকৃতিকে ডিকোডেড করতে!
তার এই ডিকোড করার আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে তিনি স্বয়ং অবদান রেখেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। সেসময় জার্মান আর্মি এগিয়ে যাচ্ছিল তাদের তৈরি একটি যন্ত্রের জন্য, যার মাধ্যমে সৈন্যরা গোপন সংকেত ব্যবহার করে তথ্য আদান– প্রদান করতে পারতো। এই সময় ঐ সংকেত থেকে তথ্য সংগ্রহ করা খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে যায় ব্রিটিশদের কাছে। আর সেই ডিকোড করার যন্ত্র আবিষ্কার করার নেত্রীত্ব দেন অ্যালান টুরিং, যে যন্ত্রটি “এনিগমা মেশিন” এর এনক্রিপ্ট করে পাঠানো সংকেত থেকে পুনরায় তথ্য উদ্ধার করতে পারতো। এভাবে বৃটিশরা গোপন তথ্য পাওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধে এগিয়ে থাকতে সক্ষম হয় এবং ধারনা করা হয় অ্যালান টুরিং এর এই যন্ত্র আবিষ্কারের ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ দুই– তিন বছর আগেই শেষ হয়ে যায় এবং ১৪ মিলিয়ন অর্থাৎ ১৪০ লক্ষ মানুষের জীবন বেঁচে যায়!
এনিগমা মেশিন
অ্যালান টুরিং প্রকৃতির বস্তুসমূহের মধ্যে গণিতের সমীকরণ খুঁজে রহস্য উদঘাটন করার অর্থাৎ “ফিলোট্যাক্সিস” এর উপর গবেষণা করেছেন। যার একটি অন্যতম ফসল সূর্যমুখী ফুলের পাপড়িতে “ফিবোনাচ্চি ফিলোট্যাক্সিস” এর বিন্যাস দেখতে পাওয়া।
মৌলিক কিছু ধারণা প্রদানকারী এই বিজ্ঞানী খুব বেশিদিন কাজ করে যেতে পারেননি, তার কিছু পারসোনাল ইন্টারেস্ট থাকার কারণে। তিনি সমকামী হওয়ার করনে সেসময় বৃটিশ সরকার একটি ওষুধ গ্রহণ করতে বাধ্য করেন। এবং পরবর্তীতে, যে সরকারের জন্য এতটা কষ্ট করেছেন, সেই সরকারের দেয়া এই সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিতে পারেননি। ফলে ১৯৫৪ সালের দিকে সায়ানাইড যুক্ত একটি আপেল গ্রহণ করেন এবং স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন। পরে ২০০৯ সালের দিকে এসে বৃটিশ সরকার তাকে দেয়া সিদ্ধান্ত ভুল শিকার করেন এবং মরণোত্তর ক্ষমা প্রার্থনা করেন…
২০ শতকের সেরা একজন বিজ্ঞানী যার অনেক চিন্তাচেতনাই সেসময় অনেকে বুঝতে পারেনি, যা পরবর্তীতে কাজে লেগেছে। Code Breaker নামে তার উপর একটি ডকুমেন্টরি রয়েছে, যেটি দেখলে তার মাত্র ৪১ বছর বেঁচে থাকার কারণে আফসোসের সীমা থাকে না।
পারসোনালি আমার অনেক প্রিয় একজন বিজ্ঞানী যার নামে আমার ভার্সিটির একটি ল্যাবের নামকরণ করা হয়েছে, এবং সেখান থেকেই তার সম্পর্কে জানতে শুরু করি। আজ তার পৃথিবীতে পবর্তনের দিন উপলক্ষ্যে তার সম্পর্কে লেখা। পরবর্তীতে সময় হলে তার করা কম্পিউটারের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষার মজাদার টুরিং টেস্ট সম্পর্কে লিখবো। সেপর্যন্ত আশা রাখি, “বর্তমান সময় থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকা এইসকল মানুষেরা চিরজীবন বেঁচে থাক সবার মাঝে”। ধন্যবাদ সবাইকে…
আমার ব্লগের মূল লেখাঃ https://bit.ly/2V7it20