কোরবানিতে স্বাস্থ্যকুশল

Author Topic: কোরবানিতে স্বাস্থ্যকুশল  (Read 1026 times)

Offline faruque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 655
    • View Profile
কোরবানিতে স্বাস্থ্যকুশল



কোরবানি মানেই খাবারে বাড়তি চর্বির উপস্থিতি। লাল মাংস, পোলাও এবং চর্বি-ঘি'র মিলনমেলা হচ্ছে কোরবানি ঈদের ডাইনিং টেবিল। খাওয়ার পর এ চর্বি বাসা বাঁধে রক্তে, বেড়ে যায় কোলেস্টেরল। তাই কোরবানির মাংসকে হৃৎপিণ্ডের জন্য কিছুটা নিরাপদ করতে মাংস থেকে চর্বি বাদ দিতে জানা প্রয়োজন কিছু কৌশল। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে লিখেছেন- শামছুল হক রাসেল

 

কোরবানি মানেই খাবারে বাড়তি চর্বির উপস্থিতি। লাল মাংস, পোলাও এবং চর্বি-ঘি'র মিলনমেলা হচ্ছে কোরবানি ঈদের ডাইনিং টেবিল। খাওয়ার পর এ চর্বি বাসা বাঁধে মানুষের রক্তে, বেড়ে যায় রক্তের কোলেস্টেরল। রক্তের বাড়তি কোলেস্টেরল স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের জন্য একটি ভীতিকর উপাদান। যেহেতু কোরবানি মানেই পশুর মাংস এবং কোলেস্টেরল তাই মাংসকে হৃৎপিণ্ডের জন্য কিছুটা নিরাপদ করতে মাংস থেকে চর্বি বাদ দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে কিছু কৌশল মেনে চলা যেতে পারে। যেমন- মাংসের দৃশ্যমান চর্বি মাংস কাটার সময়েই কেটে কেটে বাদ দেওয়া যেতে পারে। তা ছাড়া রান্নার আগে মাংসকে আগুনে ঝলসে নিলেও খানিকটা চর্বি গলে পড়ে যায়। আবার মাংসকে হলুদ-লবণ দিয়ে সিদ্ধ করে ফ্রিজে ঠাণ্ডা করলেও কিছুটা চর্বি মাংস থেকে বেরিয়ে জমাট অবস্থায় থাকবে। তখন বাড়তি চর্বিটুকু চামচ দিয়ে অাঁচড়িয়ে বাদ দেওয়া খুবই সহজ।

 আবার মাংসকে র্যাক বা ঝাঁঝরা পাত্রে রেখে অন্য একটি পাত্রের উপর বসিয়ে চুলায় দিলে নিচের পাত্রটিতে মাংসের ঝরে যাওয়া চর্বি জমা হবে। এ পদ্ধতিতেও মাংসের কিছুটা চর্বি বিদায় হবে। মাংস ছাড়া অন্য উৎস থেকে যাতে কোলেস্টেরল কম আসে সে বিষয়েও লক্ষ রাখা যেতে পারে। এক্ষেত্রে রান্নার কাজে ঘি, বাটার অয়েল ব্যবহার না করে সয়াবিন কিংবা পাম অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। মিষ্টি তৈরির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে স্কিমড বা ননীতোলা দুধ। 

একইভাবে ডিমের তৈরি যে কোনো খাবার থেকে কুসুমকে বাদ দেওয়া যেতে পারে। তা ছাড়া প্রচুর শাক-সবজি, ফলমুল খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। সালাদ এবং শাক-সবজি খাবারের চর্বিকে শরীরে শোষিত হতে বাধা দেয়। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিদিন ১০ গ্রামের মতো দ্রবণীয় অাঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৫-১০ শতাংশ কমতে পারে। রেডমিট বা লাল মাংসের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে শুনতে শুনতে অনেকেরই মনে হতে পারে লাল মাংস তথা গরু-খাসির মাংসের বুঝি কোনো ভালো গুণই নেই। আসলে রেডমিট সম্পর্কে সতর্কবাণীর প্রায় পুরোটাই বয়ষ্কদের জন্য। যাদের বয়স ৩০-এর নিচে, রক্তে কোলেস্টেরল মাত্রা ঠিক আছে, মেদাধিক্য নেই, ওজনও স্বাভাবিক তাদের জন্য লাল মাংসের এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ঠিক হবে না।

রেডমিট বা লাল মাংস অনেকেই মজা করে খান। কিন্তু অবাক ব্যাপার হচ্ছে, কেউ কেউ গরুর মাংসকে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসাবে ভাবতে শুরু করেছেন। এর কারণ রেডমিটের পক্ষ এবং বিপক্ষ- দুই দলই চরম পক্ষপাতিত্বের বিবেচনায় রেডমিটকে বিচার করেছেন। আসলে কৃশকায় গরুর মাংসকে স্বাস্থ্যকরই বলা চলে। কারণ তাতে কোলেস্টেরল থাকে কম। এ ধরনের গরুর সাধারণ মাংস দৈনিক ৫০-১০০ গ্রাম গ্রহণে খুব একটা অসুবিধা নেই। তবে কথা হচ্ছে, হৃদরোগ কিংবা ক্যান্সার ঝুঁকি থাকলে রেডমিট এড়িয়ে চলা উচিত।   

আবার এ কথাও ধ্রুব সত্য, গরুর মাংস বা রেডমিট হচ্ছে প্রাণীজ প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন বি-১২-এর অন্যতম উৎস। এ গরুর মাংসই হতে পারে স্বাস্থ্যকর খাবার যদি গরুর মাংসের চর্বি বাদ দিয়ে ছোট ছোট টুকরা করে খাওয়া যায়। আবার এ রেডমিটই হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু কৃশকায় গরুর মাংস কিংবা চর্বি বাদ দেওয়া গরুর মাংসে এ সম্পৃক্ত চর্বি খুবই কম পরিমাণে থাকার জন্য ঝুঁকিও কম।

- See more at: http://www.bd-pratidin.com/2014/10/02/34417#sthash.gDv2PTGS.dpuf