আগামী এক দশকের মধ্যেই মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর তোড়জোড় চলছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, সেখানে গেলে মানুষ সর্বোচ্চ কত দিন টিকতে পারবে? মার্কিন গবেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন, মঙ্গল গ্রহের প্রতিকূল পরিবেশ ও সেখানে তৈরি করা অবকাঠামো বিবেচনায় নিলেও মাত্র ৬৮ দিন পর থেকেই ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে পড়তে হবে মানুষকে। এএফপি সম্প্রতি এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষকেরা মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসের সম্ভাবনার বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন।
এমআইটির পাঁচজন গবেষক নেদারল্যান্ডসের মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান মার্স ওয়ান গৃহীত একটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা বিবেচনা করে দেখেছেন। তাঁরা দাবি করেছেন, মঙ্গল গ্রহে যে আবাসস্থল গড়ে তোলার কথা ভাবা হচ্ছে তাতে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে একপর্যায়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠবে এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বাস করতে আরও নতুন নতুন প্রযুক্তির দরকার হবে।
২০২৪ সাল থেকে মঙ্গল গ্রহে স্থায়ী বসবাসের জন্য কলোনি বা অবকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে নেদারল্যান্ডসের বেসরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা মার্স ওয়ান। সেখানে একমুখী অভিযানের মাধ্যমে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা তাদের। অর্থাৎ, মঙ্গল গ্রহে অবকাঠামো তৈরির পর সেখানে মানুষ পৌঁছে দেবে তারা। এরপর সেখানে যাঁরা যাবেন, তাঁদেরই সেখানে টিকে থাকার জন্য লড়াই করতে হবে। কিছুদিনের জন্য তাঁদের প্রয়োজনীয় রসদ দেওয়া হবে। সেখানে প্রতিবার দুজন করে মানুষ পাঠানো হবে এবং প্রয়োজনীয় রসদ সরবরাহ করা হবে।
মঙ্গল অভিযানের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে লোক বাছাইও শুরু হয়ে গেছে। এই অভিযানে যাওয়ার জন্য দুই লাখেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছিল মার্স ওয়ানের কাছে। এর মধ্যে এক হাজার জনকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় রেখেছে মার্স ওয়ান কর্তৃপক্ষ। মার্স ওয়ান জানিয়েছে, বাছাইকৃত এক হাজার জনের মধ্যে ২৪ জনকে মঙ্গলে বসবাসের জন্য চূড়ান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। মঙ্গল গ্রহের এই মিশনটি টেলিভিশনে রিয়েলিটি শোয়ের মাধ্যমে দেখিয়ে এই অভিযানের খরচ জোগানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে মার্স ওয়ান।
এদিকে, মার্স ওয়ানের এই পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত কিনা তা নিয়ে গবেষণা করেছেন এমআইটির গবেষকেরা। তাঁদের দাবি, মঙ্গল গ্রহে মানুষের জন্য বসবাসের প্রতিকূল পরিবেশ এবং বর্তমানে প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা এই মিশনকে অসম্ভব করে তুলবে।
এমআইটির গবেষকেরা আশঙ্কা করছেন, ‘মঙ্গলগ্রহে প্রথম যে মানুষটি বাস করতে যাবেন সর্বোচ্চ ৬৮ দিনের মধ্যেই তাঁর ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে যাবে।’