Faculty of Humanities and Social Science > Law

নারী অধিকার ও লংঘন সংক্রান্ত আইন

<< < (5/6) > >>

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-১০। ‘লে-অফ’ শ্রমিকদের মাস্টার রোল  (Master-roll of laid –off workers) :
কোনো দোকান, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের বা উহার কোনো শাখার শ্রমিকদের লে-অফ করা সত্ত্বেও মালিকের কর্তব্য হইবে, তাহাদের একটি মাস্টার রোল রাখা এবং লেইড-অফ শ্রমিকগণ যাহাতে নিজেরা উপস্থিত হইয়া বা তাহাদের প্রতিনিধিদের মারফত স্বাভাবিক কাজ চলিবার দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় উক্ত মাস্টার রোলে স্বাক্ষর করিতে পারে, তাহার ব্যবস্থা করা।
ধারা-১১। কতিপয় ক্ষেত্রে শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণ পাইবে না (Workers not entitled to compensation in certain cases) :
এই  আইনের অন্যত্র যে বিধানই থাকুক না কেন, নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে লে- অফ শ্রমিক কোনোরূপ ক্ষতিপূরণ পাইবে না :-
(ক) একই দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে, যেই  স্থানে তাহাকে লে-অফ করা হইয়াছে, অথবা একই মালিকের অধীনস্থ অন্য কোনো দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে, যাহা একই শহরে বা গ্রামে অবস্থিত অথবা প্রথমোক্ত দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠান হইতে পাঁচ মাইলের মধ্যে অবস্থিত, যদি তাহাকে একই বেতনে কোনো বিকল্প চাকুরী  দেওয়া হয় এবং তজ্জন্য কোনো বিশেষ দক্ষতার বা পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন না হয়, তথাপি যদি সে উহা গ্রহণ করিতে অস্বীকার করিয়া থাকে;
(খ) মালিক চাহিলে সে যদি দিনে অন্তত কোনো নির্দিষ্ট সময়ে কাজের জন্য সংশিষ্ট দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে হাজিরা না দিয়া থাকে; অথবা
(গ) সংশ্লিষ্ট দোকানের বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের অন্য অংশে ধর্মঘটের কারণে যদি উক্ত লে-লফ শুরু হইয়া থাকে।

ধারা-১২। ছাঁটাইয়ের শর্ত (Conditions of retrenchment) :
কোনো দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কোনো শ্রমিকের অব্যাহত চাকুরীর অন্যূন এক বত্‍সর পূর্ণ হইয়া থাকিলে নিম্নোক্ত শর্ত পূরণ ছাড়া মালিক তাহাকে ছাঁটাই করিতে পারিবে না।
(ক) ছাঁটাইয়ের কারণ উল্লেখপূর্বক শ্রমিককে এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হইবে, অথবা তত্‍পরিবর্তে শ্রমিককে নোটিশ মেয়াদের বেতন দিতে হইবে;
(খ) ছাঁটাই সংক্রান্ত উক্ত নোটিশের একটি কপি চীফ ইন্সপেক্টর বা তত্‍কর্তৃক ভারপ্রাপ্ত অন্য কোনো অফিসারকে দিতে হইবে;
(গ) ছাঁটাই করিবার সময় শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রতি সম্পূর্ণ এক বত্‍সরের চাকুরীর জন্য, অথবা ছয় মাসের অধিক সময়ের জন্য [৩০] দিনের বেতন অথবা গ্র্যাচুইটি, যদি পাওনা হয়, যাহা বেশি হইবে, পরিশোধ করিতে হইবে।
তবে শর্ত এই  যে, ৯ ধারার উপধারা (৩) অনুসারে কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করা হইলে অনুচ্ছেদ (ক) মোতাবেক তাহাকে নোটিশ দেওয়ার আবশ্যকতা নাই, কিন্তু অনুরূপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ বা গ্র্যাচুইটি ছাড়াও অতিরিক্ত ১৫ দিনের বেতন অনুচ্ছেদ (গ) মোতাবেক পরিশোধ করিতে হইবে।

ধারা-১৩। ছাঁটাইয়ের পদ্ধতি (Procedure for retrenchments) :
কোনো বিশেষ শ্রেণীর শ্রমিক ছাঁটাই করিতে হইলে, শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে অন্য কোনো চুক্তি না থাকিলে মালিক সাধারণত সংশ্লিষ্ট শ্রেণীর শ্রমিকদের মধ্যে সকলের শেষে যেই  ব্যক্তি চাকুরিতে নিযুক্ত হইয়াছে, তাহকে সর্বাগ্রে ছাঁটাই করিবেন; ছাঁটাইয়ের কারণ লিখিতভাবে জানাইবার আবশ্যকতা না থাকিলে মালিক অন্য যেই  কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করিতে পারিবেন।

ধারা-১৪। ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের পুর্ননিয়োগ (Re-employment of retrenched workers) :
কোনো প্রতিষ্ঠানে যত শ্রমিক ছাঁটাই হইয়া থাকুক না কেন, উক্ত ছাঁটাইয়ের দিন থেকে এক বত্‍সরের মধ্যে মালিক তাঁহার প্রতিষ্ঠানে কোনো ব্যক্তিকে চাকুরীতে নিযুক্ত করিতে চাহিলে, তিনি সংশ্লিষ্ট শ্রেণীর ছাঁটাইকৃত শ্রমিকগণকে উক্ত নিয়োগের বিষয়ে সুযোগ প্রদান করিবেন এবং উক্ত উদ্দেশ্যে তাহাদের সর্বশেষ জানা ঠিকানায় নোটিশ প্রেরণ করিবেন এবং চাকুরীতে পুনর্নিযুক্তির উদ্দেশ্যে উক্ত নোটিশ প্রাপ্ত ছাঁটাইকৃত শ্রমিকগণ চাকুরীতে পুনর্নিযুক্তির ইচ্ছা প্রকাশ করিলে অন্যদের তুলনায় তাহাদিগকে অগ্রাধিকার দিতে হইবে এবং তাহাদের প্রত্যেককে উক্ত মালিকের অধীনে চাকুরীর মেয়াদের দৈর্ঘ্য অনুসারে অন্যের তুলনায় অগ্রাধিকার লাভের অধিকারী হইবে।

ধারা-১৫। জরিমানা (Fine) :
১৯৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইনের বিধান মোতাবেক কোনো শ্রমিককে জরিমানা করা যাইতে পারে।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-১৬। চাকুরী  হইতে অপসারণ (Discharge) :
দৈহিক বা মানসিক অক্ষমতার কারণে অসদাচরণের পর্যায়ে পড়ে না, অনুরূপ অন্য কোনো কারণে শ্রমিকদের চাকুরী  হইতে অপসারণ করা যাইতে পারে।
তবে শর্ত এই  যে,  অব্যাহত চাকুরী  অন্যূন এক বত্‍সর পূর্ণ হইয়া থাকিলে এবং সেই শ্রমিককে অপসারণ করা হইলে মালিক তাহাকে প্রতি এক বত্‍সরের বা ৬ মাসের অধিক চাকুরীর জন্য ৩০ দিনের করিয়া বেতন অথবা গ্র্যাচুইটি যদি উহা পাওনা হয়, এবং যাহা পরিমাণে অধিক, প্রদান করিবেন।

ধারা-১৭। চাকুরী  হইতে বরখাস্তকরণ (Dismissal from service) :
(১) এই  আইনের অন্যত্র লে-অফ, ছাঁটাই, চাকুরীচ্যুতি ও চাকুরি অবসান  সম্পর্কে যেইরূপ বিধানই থাকুক না কেন, একজন শ্রমিক-
(ক) কোনো অপরাধরে দরুন দন্ডাদেশপ্রাপ্ত হইলে তাহাকে পূর্বাহ্নে কোনো নোটিশ না দিয়া বা তত্‍পরিবর্তে বেতন বা কোনো ক্ষতিপূরণ না দিয়া বরখাস্ত করা যাইবে;
(খ) ১৮ নং ধারা অনুসারে অসদাচরণের দরুন দোষী সাব্যস্ত হইলে তাহাকে পূর্বাহ্নে কোনো নোটিশ না দিয়া বা তত্‍পরিবর্তে বেতন না দিয়া বরখাস্ত করা যাইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  বরখাস্তকৃত শ্রমিকের একটানা চাকুরীর মেয়াদ এক বত্‍সরের কম না হইলে মালিক তাহাকে ক্ষতিপূরণস্বরূপ প্রতি এক বত্‍সরের বা ছয় মাসের অধিক চাকুরীর দরুন চৌদ্দ দিনের বেতন অথবা গ্র্যাচুইটি যাহা বেশি হয়, দিবেন।
(২) কোনো শ্রমিক অসদাচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত হইলে দন্ড লঘু করিবার যেই  কোনো অবস্থা বিবেচনা করিবার পর উপধারা (১)-এর বিধানমতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে বরখাস্ত না করিয়া কর্মচ্যুত, কিংবা মজুরী, অথবা জীবিকা ভাতা ভিন্ন অনধিক সাতদিনের জন্য বরখাস্ত করা যাইতে পারে এবং এই  সময় ১৮ ধারার (২) উপধারা অনুযায়ী তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য (যদি এইরূপ তদন্ত হইয়া থাকে), শ্রমিকের সাময়িক বরখাস্তের অন্তর্ভুক্ত  বা অতিরিক্ত হইতে পারে, কিংবা তাহাকে অন্য প্রকার লঘু দন্ড দেওয়া যাইতে পারে।

ধারা-১৮। শাস্তিদানের পদ্ধতি (Procedure for punishment) :
(১) নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ ছাড়া কোনো শ্রমিককে চাকুরী  হইতে অপসারণ বা বরখাস্ত করিবার আদেশ জারি করা যাইবে না:
(ক) তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ লিখিতভাবে রেকর্ডভুক্ত করিতে হইবে;
(খ) লিখিত অভিযোগের একটি কপি তাহাকে দিতে হইবে এবং কৈফিয়ত দেওয়ার জন্য তাহাকে অন্যূন তিন দিনের সময় দিতে হইবে;
(গ) অনুরোধ করিলে তাহাকে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হইয়া বক্তব্য পেশের সুযোগ দিতে হইবে; এবং
(ঘ) অনুরূপ আদেশে মালিকের বা ম্যানেজারের অনুমোদন থাকিতে হইবে।
(২) অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত শ্রমিককে তাহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত সাপেক্ষে সাসপেন্ড করা যাইতে পারে এবং বিষয়টি কোনো আদালতে বিচারাধীন না থাকিলে উক্ত সাসপেনশনের মেয়াদ ষাট দিনের অধিক হইবে না।
তবে শর্ত এই যে,  যতদিন সাসপেন্ড করিয়া রাখা হইবে, ততদিন মালিক উক্ত শ্রমিককে মহার্ঘ ভাতা থাকিলে উহাসহ গড় বেতনের অর্ধেক হিসাবে জীবন ধারণের ভাতা প্রদান করিবেন।
(৩) সাসপেনশনের আদেশ লিখিতভাবে দিতে হইবে এবং শ্রমিককে, পেঁ ৌছাইয়া দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উহা কার্যকরী হইবে।
(৪) তদন্তের পর যদি আনীত অভিযোগসমূহের কোনো একটি সম্পর্কে শ্রমিক দোষী সাব্যস্ত হয় এবং ১৭ ধারার উপধারা (১) অনুসারে তাহাকে শাস্তি দেওয়া হয়, তাহা হইলে তদন্তের জন্য সাসপেনশনের সময়কালে কোনো বেতন সে পাইবে না, কিন্তু উপধারা (২)- এর শর্তে উল্লিখিত জীবন-ধারণ ভাতা তাহাকে দিতে হইবে।
(খ) শ্রমিক দোষী সাব্যস্ত না হইলে তদন্ত অনুষ্ঠানের জন্য যতদিন তাহাকে সাসপেন্ড করিয়া রাখা হইয়াছিল, ততদিন সে ডিউটিতে হাজির ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত সময়কালের বেতন তাহার প্রাপ্য হইবে এবং জীবন-ধারণ ভাতা হিসাবে তাহাকে যাহা দেওয়া হইয়াছে, তাহা উক্ত প্রাপ্য বেতন হইতে বাদ যাইবে।
(গ) শাস্তি দেওয়া হইলে উক্ত শাস্তি দানের আদেশ সম্বলিত পত্রের একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে দিতে হইবে।
(৫) মালিক কর্তৃক প্রদত্ত কোনো নোটিশ, চিঠি, অভিযোগনামা, আদেশ বা অন্য কোনো দলিল গ্রহণ করিতে যদি শ্রমিক অস্বীকার করিয়া থাকে,তবে ধরিয়া লইতে হইবে যে  উক্ত, নোটিশ, চিঠি, অভিযোগনামা, আদেশ বা দলিল উক্ত শ্রমিককে অর্পণ করা হইয়াছে, যদি উহার একটি কপি অফিসের নোটিশ বোর্ডে লটকাইয়া দেওয়া হইয়া থাকে এবং অপর একটি কপি মালিকের অফিসের রেকর্ডে প্রাপ্ত ঠিকানায় উক্ত শ্রমিকের নিকট রেজিষ্ট্রি ডাকযোগে পাঠানো হইয়া থাকে।
(৬) এই  আইন অনুসারে শাস্তি দানের সময় শ্রমিকের অসদাচরণের মাত্রা, তাহার চাকুরীর পূর্ববর্তী রেকর্ড (যদি কিছু থাকিয়া থাকে) এবং অন্য কোনো ক্ষমার যোগ্য বিষয় বা পরিস্থিতির অবনতি সাধক অবস্থা বিদ্যমান থাকিলে, তাহা মালিক বিবেচনা করিয়া দেখিবেন।
(৭) পূর্ববর্তী বর্ণিত উপধারাসমূহে বা এই  আইনের অন্যত্র যেই  বিধানই থাকুক না কেন, ধীরে কাজ করা বা বে-আইনী ধর্মঘটের ক্ষেত্রে মালিক শ্রম আদালতের অনুমতি লইয়া নোটিশ বোর্ডে নোটিশ লটকাইবার মাধ্যমে এক বা একাধিক শ্রমিককে একক বা যৌথভাবে চাকুরী  হইতে অপসারণ বা বরখাস্ত করিতে, অথবা অন্য কোনো শাস্তি দান করিতে পারিবেন।

ধারা-১৯। চাকুরীর অবসান (Termination of employment) :
(১) এই  আইনের অন্যত্র বর্ণিত বিধান অনুযায়ী না হইয়া অন্যভাবে মালিক কর্তৃক কোনো স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান ঘটাইবার জন্য মাসিক বেতনে নিযুক্ত কর্মচারীর বেলায় * [একশত কুড়ি] দিনের নোটিশ এবং অন্যান্য কর্মচারীর বেলায় পঁয়তাল্লিশ দিনের নোটিশ মালিক কর্তৃক লিখিতভাবে দিতে হইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  উক্ত নোটিশের পরিবর্তে যথাক্রমে *[একশত কুড়ি] দিনের বা *[ষাট] দিনের বেতন পরিশোধ করিলে চলিবে।
আরও শর্ত এই  যে, উপরোক্তরূপে যেই  শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হইয়াছে, মালিক তাহাকে প্রতি পূর্ণ বত্‍সরের চাকুরীর জন্য, অথবা উহার যেই  কোনো অংশ ৬ মাসের অধিক হইলে *[ত্রিশ] দিন করিয়া বেতন ক্ষতিপূরণ বাবদ পরিশোধ করিবেন এবং ইহা ছাড়াও এই  আইন বা ঐ সময় প্রচলিত অন্য কোনো আইন অনুসারে তাহার অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা পাওনা হইলে তাহাও পরিশোধ করিবেন।
(২) কোনো স্থায়ী শ্রমিক নিজের চাকুরীর অবসান ঘটাইতে চাহিলে মাসিক বেতনপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বেলায় এক মাসের এবং অন্য ধরনের শ্রমিকদের বেলায় ১৪ দিনের নোটিশ সংশ্লিষ্ট শ্রমিক কর্তৃক লিখিতভাবে মালিককে দিতে হইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  উপধারা মতে কোনো শ্রমিক চাকুরীর অবসান ঘটাইলে উপধারা (১)-এর বর্ণিত কোনো ক্ষতিপূরণ পাইবার অধিকারী হইবে না, কিন্তু এই  আইন বা ঐ সময় প্রচলিত অন্য কোনো আইন অনুসারে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওনা হইলে, তাহা তাহাকে পরিশোধ করিতে হইবে।
(৩) এই  আইনের অন্যত্র বর্ণিত বিধান অনুসারে না হইলে এবং যেই  অস্থায়ী কাজে তাহাকে নিয়োগ করা হইয়াছিল, সেই কাজের সমাপ্তি, অবসান, বিলুপ্তি বা বিচ্ছিন্নতার কারণপ্রসূত না হইলে, মালিক কর্তৃক অস্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান ঘটাইবার জন্য মাসিক বেতনে নিযুক্ত শ্রমিকের বেলায় এক মাসের নোটিশ এবং অন্যান্যদের বেলায় ১৪ দিনের নোটিশ লিখিতভাবে দিতে হইবে।

তবে শর্ত এই  যে, অবস্থানুয়ায়ী যথাক্রমে এক মাসের বা ১৪ দিনের বেতন নোটিশের পরিবর্তে পরিশোধ করিলে চলিবে।

ধারা-২০। প্রভিডেন্ট ফান্ড (Provident fund) :

কোনো প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্য একজন শ্রমিক যদি উক্ত ফান্ডের বিধিমালা অনুসারে তাহা পাইবার অধিকারী হয়, তবে ছাঁটাই, বরখাস্ত, চাকুরীচ্যুত বা চাকুরী  অবসানের দরুন সে মালিকের চাঁদাসহ প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুবিধা হইতে বঞ্চিত হইবে না।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-২১। চাকুরীর সার্টিফিকেট (Certificate of service) :

প্রত্যেক শ্রমিক (সাময়িক ও বদলী শ্রমিক বাদে) চাকুরী হইতে ছাঁটাই, অপসারিত, বরখাস্ত, অবসর বা চাকুরীর অবসর হওয়াকালীন চাকুরী সংক্রান্ত এক ট ি সার্টিফিকেট পাইবার অধিকারী হইবে।

ধারা-২২। চাকুরীর বিদ্যমান শর্তাবলী সংরক্ষণ (Protection of existing conditions of employment) :
এই  আইন বলবত্‍ হওয়ার অব্যবহিত পূর্বে কোনো আইন, প্রথা, ব্যবস্থা, বা কোনো রায়, চুক্তি বা মীমাংসা কার্যকর থাকিলে উক্ত আইন, প্রথা, ব্যবস্থা বা রায়, চুক্তি বা মীমাংসার শর্ত মোতাবেক শ্রমিকের চাকুরীর শর্তাবলী যদি এই  আইনের বিধানের তুলনায় অধিকতর সুবিধাজনক হইয়া থাকে, তবে এই  আইনের কোনো বিধান দ্বারা তাহা ক্ষতিগ্রস্ত হইবে না।

ধারা-২৩। রেহাই দেওয়ার ক্ষমতা (Power to exempt) :
সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে নির্ধারিত শর্ত আরোপ করিয়া যেই  কোনো দোকান বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বা যেই  কোনো শ্রেণীর প্রতিষ্ঠানকে এই  আইনের যেই  কোনো বিধানের বা সামগ্রিকভাবে এই  আইনের আওতা হইতে রেহাই দিতে পারিবেন।

ধারা-২৪। আবাসিক গৃহ হইতে উচ্ছেদকরণ (Eviction from residential accomodation) :
(১) মালিক কর্তৃক প্রদত্ত আবাসিক সুযোগ ভোগ করিতেছে, এইরূপ শ্রমিক ছাঁটাই, অপসারিত, বরখাস্ত বা তাহার চাকুরীর অবসান হইলে, উক্ত ছাঁটাই, অপসারণ, বরখাস্তকরণ বা অবসান সম্পর্কে কোনো আদালতে কোনো মামলা মূলতবী না থাকিলে ছাঁটাই, অপসারিত, বরখাস্ত বা চাকুরীর অবসান হওয়ার তারিখ হইতে পনেরো দিনের মধ্যে উক্ত বাসগৃহ খালি করিয়া যাইবে।
(২) উপধারা (১) অনুসারে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক উক্ত বাসগৃহ খালি করিয়া যাইতে ব্যর্থ হইলে, উক্ত বিষয়ে এখতিয়ার রহিয়াছে, এইরূপ কোনো প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মালিক অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবেন।
(৩) ঐ সময় প্রচলিত অন্য কোনো আইনে যেই রূপ বিধানই থাকুক না কেন, ম্যাজিস্টেট উভয় পক্ষের বক্তব্য শ্রবণের পর সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে মোকদ্দমা নিষ্পত্তি করিবেন এবং শ্রমিককে যুক্তিসঙ্গত সময় দান করিয়া তাহাকে উক্ত বাসগৃহ হইতে উচ্ছেদের আদেশ দিতে পারিবেন।
(৪) উপধারা (৩) অনুসারে প্রদত্ত সময়-সীমার মধ্যে বাসস্থান খালি না করিলে শ্রমিককে বলপুর্বক উচ্ছেদ করিবার জন্য ম্যজিস্ট্রেট প্রয়োজনবোধে কোনো পুলিশ অফিসারকে আদেশও দিতে পারিবেন।
(৫) উপধারা (৪) মতে ম্যাজিস্টেটের নির্দেশ পালনের সময় উক্ত পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশের বিবরণসহ উক্ত গৃহে তাঁহার প্রবেশের ইচ্ছার কথা সংশ্লিষ্ট বাসিন্দাকে জানাইবেন এবং বাসিন্দাগণকে ঘর খালি করিয়া দিবার জন্য অন্যূন দুই ঘন্টা সময় দিবেন এবং উক্ত গৃহের দখল লইবার জন্য যদি বলপ্রয়োগ করিবার প্রয়োজনীতা দেখা দেয়, তবে সেইক্ষেত্রে শিশু ও মহিলা বাসিন্দাগণকে ঘর হইতে বাহির হইয়া যাওয়ার জন্য যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দান করিবেন।

ধারা-২৫। অভিযোগ উত্থাপনের পদ্ধতি (Grivance procedure) :
(১) কোনো শ্রমিকের১ [বরখাস্ত, কর্মচ্যুত ছাঁটাই, লে-অফ বা অন্যভাবে চাকুরী  হইতে অপসারিত শ্রমিকসহ] এই  আইন অনুসারে কোনো বিষয়ে ব্যক্তিগত কোনো অভিযোগ করিবার থাকিলে এবং এই  ধারার অধীনে উহার প্রতিকার পাইতে ইচ্ছুক হইলে, নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে হইবে :
(ক) অভিযোগের কারণ উদ্ভবের পনেরো দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক লিখিতভাবে ২[রেজিস্টার্ড ডাকযোগে] স্বীয় অভিযোগ মালিকের নিকট পেশ করিবে এবং মালিক উক্ত অভিযোগ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে বিষয়টি সম্পর্কে তদন্ত করিবেন এবং এই  শ্রমিককে তাহার বক্তব্য পেশের সুযোগ দিবেন এবং নিজের সিদ্ধান্ত উক্ত শ্রমিককে লিখিত ভাবে জ্ঞাপন করিবেন।
(খ) অনুচ্ছেদ (ক) অনুযায়ী যদি মালিক তাহার সিদ্ধান্ত জ্ঞাপন করিতে ব্যর্থ হন, অথবা শ্রমিক যদি মালিকের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয় এবং ১৯৫৮ সালের শিল্প বিরোধ অধ্যাদেশের বিধান অনুসারে বিষয়টি যদি শ্রম বিরোধ হিসাবে ইতিমধ্যে উত্থাপিত না হইয়া থাকে বা উত্থাপনের উদ্যোগ না লইয়া থাকে, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক অনুচ্ছেদে (ক) অনুসারে শেষ দিন হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে অথবা সিদ্ধান্তের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে (এই  বিষয়ে যাহার এই খতিয়ার রহিয়াছে) অভিযোগ দায়ের করিতে পারে।
তবে শর্ত এই  যে, সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন কার্যকলাপের দরুন ১৯ ধারা অনুসারে তাহার চাকুরী  অবসানের অভিযোগ না থাকিলে বা সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে উক্ত ধারার নির্দিষ্ট সুবিধা হইতে বঞ্চিত করা না হইয়া থাকিলে, তাহার চাকুরীর অবসানের আদেশের বিরুদ্ধে কোনো নালিশ করিবে না।
(গ) অনুচ্ছেদ (খ) অনুসারে কোনো অভিযোগ প্রাপ্তির পর আদালত নোটিশ জারি এবং পক্ষসমূহের বক্তব্য শ্রবণের পর নিজ বিবেচনা মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন;
(ঘ) অভিযোগ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আদালত নিজ বিবেচনা মোতাবেক যতটা ন্যায় সঙ্গত মনে করিবেন, বাদীকে বিবাদী কর্তৃক তদনুরূপ মামলার খরচ প্রদানের আদেশ দিতে পারিবেন এবং উক্ত নির্দেশ চূড়ান্ত হইবে।
তবে শর্ত এই  যে, এই  ধারা অনুসারে আনীত কোনো অভিযোগ এই  আইনের ২৭ ধারা অনুসারে ফৌজদারীতে সোপর্দকরণ বিবেচিত হইবে না;
(ঙ) আদালতে অভিযোগ দায়েরের জন্য বা কোনো কাগজপত্র দাখিল বা একজিবিট করিবার জন্য কোনোরূপ কোর্ট ফী দিতে হইবে না।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-২৬। ২৫ ধারা অনুসারে আদালতের আদেশ অমান্য করিবার শাস্তি (Penalty for non-compliance of Court’s order under section 25) :
(১) ২৫ ধারা অনুসারে প্রদত্ত আদালতের আদেশ কেহ পালন করিতে অস্বীকার করিলে বা পালন করিতে ব্যর্থ হইলে, সে অনধিক তিন মাস পর্যন্ত বিনা শ্রমে কারাদণ্ড বা অনধিক এক হাজার টাকার পর্যন্ত জরিমানা, অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে।
(২) ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি কর্তৃক উত্থাপিত অভিযোগ ব্যতীত উপধারা (১) অনুসারে অপরাধ আদালত কর্তৃক আমলে গ্রাহ্য হইবে না।

ধারা-২৭। শাস্তি ও উহার পদ্ধতি (Penalties and procedure) :
(১) কোনো মালিক তাহার দোকানে বা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানে বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য এই  আইনের কোনো বিধান অমান্য করিলে প্রথমবারের অপরাধের জন্য অনধিক পাঁচশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উপর্যুপরি অপরাধ করিতে থাকিলে, প্রথম অপরাধের পর পরবর্তী  অপরাধসমূহের জন্য প্রতিদিন অনধিক পঞ্চাশ টাকা করিয়া জরিমানায় দণ্ডনীয় হইবেন এবং পরবর্তী  দিনগুলির অপরাধের প্রতিটির জন্য অনধিক পাঁচশত টাকা জরিমানায়, অথবা অনধিক এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডে, অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং উক্ত পরবর্তী  অপরাধ হইতে উদ্ভত অব্যাহত অপরাধের জন্য প্রতিদিন পঞ্চাশ টাকা করিয়া জরিমানায় দণ্ডনীয় হইবেন।
(২) এই  আইনের অন্যত্র বর্ণিত বিধান অনুসারে অন্য কোনোরূপ শাস্তির ব্যবস্থা না থাকিয়া থাকিলে, এই  আইনের যেই  কোনো বিধান যেই  কেহ ভঙ্গ করিলে প্রথম বারের অপরাধের জন্য দুইশত টাকা পর্যন্ত জরিমানাদণ্ডে এবং পরবর্তী  প্রতিটি অপরাধের জন্য দুইশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা, অথবা অনধিক এক মাসে বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে।
(৩) এই  ধারা অনুসারে দণ্ডনীয় কোনো অপরাধ সম্পর্কে কেবল চীফ ইন্সপেক্টর বা তাঁহার দ্বারা ভারপ্রাপ্ত কোনো অফিসার ছাড়া বা তাঁহার লিখিত পূর্ব অনুমতি ছাড়া অন্য কেহ বা অন্য কোনভাবে কেহ অভিযোগ দায়ের করিতে পারিবে না।
(৪) এই  ধারা এবং ২৬ ধারা অনুসারে দণ্ডনীয় কোনো অপরাধের বিচার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে অধস্তন কোনো আদালতে করিতে পারিবেন না।

ধারা-২৮। এই  আইনের সংক্ষিপ্ত-সার বিজ্ঞাপিত করা (Display of notice of abstracts of the Act) :
এই  আইনের বিধানসমূহ এবং তদানুসারে প্রণীত বিধিমালা এবং ৩ ধারার শর্ত মোতাবেক চাকুরীর কোনো নিয়ন্ত্রণবিধি প্রণীত হইয়া থাকিলে, উহার সারমর্ম বাংলায় ও [ইংরেজিতে]* স্পষ্টাক্ষরে লিখিয়া মালিক কর্তৃক সংশ্লিষ্ট দোকানের বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকাশ্য স্থানে উক্ত উদ্দেশ্যে রক্ষিত বিশেষ বোর্ডে প্রাধান্য সহকারে লটকাইয়া রাখিতে হইবে।
তবে শর্ত এই  যে,  নিযুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা সাত জনের কম হইলে সেই সকল  দোকান বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেলায় এইই ধারা প্রযোজ্য নয়।

ধারা-২৯। মালিকের দায়-দায়িত্ব (Liability of employer) :
এই  আইনের বিধানসমূহ যথাযথভাবে এবং বিশ্বস্ততার সহিত পালনের ব্যাপারে প্রত্যেক দোকানের বা বাণিজ্য বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকিবেন।

ধারা-৩০। চীফ ইন্সপেক্টর ও ইন্সপেক্টরগণ (Chief Inspector and inspectors) :
[কারখানা ও প্রতিষ্ঠানসমূহের চীফ ইন্সপেক্টর] এই ক্ষেত্রে চীফ ইন্সপেক্টর হইবেন এবং এই  আইন অনুসারে প্রদত্ত চীফ ইন্সপেক্টরের ক্ষমতা ছাড়াও [বাংলাদেশ] সর্বত্র এ ক জ ন ইন্সপেক্টরের ক্ষমতাও তাহার থাকিবে এবং অন্যান্য ইন্সপেক্টরের উপর নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির ক্ষমতাও তাহার থাকিবে।
তবে শর্ত এই যে,  চীফ ইন্সপেক্টর তাঁহার ক্ষমতা বা কোনো আংশিক ক্ষমতা তাহার অধীনস্থ যেই  কোনো অফিসার বা অফিসারদের উপর ন্যস্ত করিতে পারিবেন।
(২) এই  আইনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সরকার নিজ পছন্দ মোতাবেক ইন্সপেক্টর পদে লোক নিয়োগ করিতে এবং তাহাদের স্ব-স্ব স্থানীয় সীমানা নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন।
(৩) একজন ইন্সপেক্টর যেই  কোনো যুক্তিসঙ্গত সময়ে যেই  কোনো স্থানে প্রবেশ করিয়া এই  আইনের বিধানসমূহ কার্যকরকরণের সহিত সম্পর্কযুক্ত যেই  কোনো রেকর্ড, রেজিস্টার বা অন্য যেই  কোনো দলিলপত্র পরীক্ষা করিতে এবং উক্ত স্থানে বা অন্যত্র যেই  কোনো ব্যক্তির নিকট হইতে প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য গ্রহণ করিতে পারিবেন এবং সংশ্লিষ্ট মালিক বা দখলকারী এই  আইনের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য তাহাকে যেই  কোনো যুক্তিসঙ্গত সহায়তা প্রদানে বাধ্য থাকিবেন।

ধারা-৩১। বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা (Powers to make rules) :
(১) এই  আইনে উদ্দেশ্য সাধনের জন্য পূর্বাহ্নে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের শর্ত সাপেক্ষে সরকার বিধানমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
(২) পূর্বে বর্ণিত কোনো ক্ষমতা ক্ষুন্ন না করিয়া এই  আইন অনুসারে নির্দিষ্ট সমস্ত বা যে কোনো বিষয় সম্পর্কে বিধিমালা প্রণয়ন করা যাইবে।
(৩) এই  ধারার অধীনে প্রণীত বিধিমালায় এই  বিধানও রাখা যাইতে পারে যে , বিধিমালা অমান্য করা হইতে অনধিক একশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাইবে।

ধারা-৩২। বাতিল এবং সংরক্ষণ (Repeal and savings) :

(১) ১৯৬০ সালের দি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্শিয়াল এমপ্লয়মেন্ট (স্ট্যান্ডিং অর্ডার্স) অর্ডিন্যান্স এতদ্বারা বাতিল করা হইলো।

(২) বাতিল সত্ত্বেও  কোনো কিছু করা হইয়া থাকিলে, কার্যসম্পাদন হইয়া থাকিলে,বিধিমালা প্রণীত হইয়া থাকিলে অথবা উক্ত অধ্যাদেশের অধীনে বিজ্ঞপ্তি বা অআদেশ প্রদান করা হইয়া থাকিলে, যতখানি এই আইনের বিধানসমূহের সহিত অসঙ্গতিপূর্ নহে এই আইনের অনুরূপ বিধান মোতাবেক হইয়াছিল, সম্পাদন করা হইয়াছিল, প্রণীত হইয়াছিল, গণ করা হইবে।

(৩) সাময়িকভাবে কার্যকর অন্য যেই কোনো আইনে ১৯৬০ সালের দি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড কমার্শিয়াল এমপ্লয়মেন্ট (স্ট্যান্ডিং অর্ডার্স) অর্ডিন্যান্সের উল্লেখ থাকিলে এই আইনের উল্লেখস্বরূপ ব্যাখ্যা করিতে হইবে।

তথ্যসূত্র : শ্রম ও শিল্প অাইন

Sultan Mahmud Sujon:
মজুরী পরিশোধ আইন-১ঌ৩৬
[THE PAYMENT OF WAGES ACT, 1936]
[১ঌ৩৬ সালের ৪নং আইন]

[২৩শে এপ্রিল, ১ঌ৩৬]

শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত কতিপয় শ্রেণীর ব্যক্তিদের মজুরী প্রদান নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রণীত আইন।

যেহেতু শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহে নিযুক্ত কতিপয় শ্রেণীর ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধ নিয়ন্ত্রণ করা সমীচীন ;

অতএব, এতদ্বারা নিম্নোক্ত আইন প্রণীত হইলো :

 

ধারা-১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, আওতা, প্রবর্তন ও প্রয়োগ (Short title, commencement and applications) :

উপধারা-(১) এই আইনকে ১ঌ৩৬ সালের মজুরী পরিশোধ আইন নামে অভিহিত করা যাইতে পারে।

উপধারা- (২)  [ (২) সমগ্র [বাংলাদেশে] এটি কার্যকর হইবে।]

উপধারা- (৩)  [সরকার] [সরকারী গেজেটে] প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যেই তারিখ নির্ধারণ করিবেন, সেই তারিখ হইতে ইহা কার্যকর হইবে।

উপধারা- (৪) প্রথমত কারখানার নিযুক্ত ব্যক্তি এবং (কারখানা ব্যতীত) [রেলওয়ে] প্রশাসন কর্তৃক [রেলওয়েতে] নিযুক্ত বা সরকারি বা রেল প্রশাসনের সহিত সম্পাদিত চুক্তি পূরণের উদ্দেশ্যে কোনো সাব-কন্ট্রাক্টর কর্তৃক নিযুক্ত ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

উপধারা- (৫) উদ্দেশ্য অবহিত করিয়া [সরকারী] [সরকারী গেজেটে] তিনমাসের নোটিশ দিয়া অত্র আইনের বিধানসমূহ বা কোনো বিধান যেই কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে বা কোনো শ্রেনীর বা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুচ্ছে নিযুক্ত যেই কোনো শ্রেণীর ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত করিতে পারিবেন।

উপধারা- (৬) কোনো দোকান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে ভাড়ায় বা বখশিশের বিনিময়ে দক্ষ, অদক্ষ, কায়িক, কারিগরি, ব্যবসা উন্নয়নমূলক বা করণিক কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি, চাকরির শর্ত ব্যক্ত বা অব্যক্ত যাহাই হোক না কেন, শিক্ষানবিশসহ  যেকোনো ব্যক্তির মজুরী পরিশোধের ক্ষেত্রে অত্র আইন প্রযোজ্য হইবে। তবে  নিম্নরূপ ব্যক্তি এর অন্তর্ভুক্ত হইবে না :

(ক) ব্যবস্থাপনা বা প্রশাসনিক কর্তৃত্বে নিয়োজিত ব্যক্তি,

(খ) তদারকির কাজে নিযুক্ত হয়ে ন্যস্ত ক্ষমতার প্রকৃতি বা তাহার উপর আরোপিত ক্ষমতার কারণে ব্যবস্থাপনা বা তদারকি ধরনের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি।

ধারা-২। সংজ্ঞা (Definitions) :

প্রসঙ্গ বা বিষয়বস্তুতে পরিপন্থী কোনো কিছু না থাকিলে, এই আইনে -

(i) ‘কারখানা’ (factory) বলিতে (১ঌ৬৫ সালের কারখানা আইনের ২ ধারার (চ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত কারখানা] বুঝাইবে।

(ii) ‘শিল্প প্রতিষ্ঠান’ (industrial establishment) বলিতে বুঝাইবে যেই কোনো –

(ক) ট্রামওয়ে বা মোটর বাস সার্ভিস;

(খ) ডক, পোতাশ্রয় বা জেটি;

(গ) [১ঌ৭৬ সালের ইনল্যান্ড শিপিং অধ্যাদেশ (১ঌ৭৬ সালের ৭২ নং অধ্যাদেশ)-এ বর্ণিত অভ্যন্তরীন জাহাজ। ]

(ঘ) খনি, উত্তোলন কেন্দ্র বা তেল ক্ষেত্র;

(ঙ) বাগান;

(চ) ব্যবহার, পরিবহন বা বিক্রির উদ্দেশ্যে কোনো দ্রব্য তৈরি, সংযোজন বা উৎপন্ন হয়, এমন কারখানা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান;

[(ছ) বিমান সংস্থা;]

 [(জ) দালান, রাস্তা, সুড়ঙ্গ, ড্রেন বা সেতু নির্মাণ, পুনঃনির্মাণ, মেরামত, পরিবর্তন বা বিলুপ্তিকরণের বা সংশ্লিষ্ট কাজে বা মালামাল পরিবহন, উত্তোলন বা খালাসকরণ বা সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত সাব-কন্ট্রাক্টরসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে যেই কোনো কন্ট্রাক্টরের প্রতিষ্ঠান;]]

(iii) বাগান (Plantation) বলতে সিংকোনা,রাবার, কফি বা চা উত্‍পাদনের উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত সম্পত্তি যেখানে সে উদ্দেশে পঁচিশ বা ততোধিক ব্যক্তিকে কাজে নিয়োজিত করা হয় তাহাকে বুঝাবে;

(iv) নির্ধারিত (Prescribed) বলিতে এ অাইনের অাওতাধীনে প্রণীত বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত বুঝাবে;

(v) রেল প্রশাসন(Rail way Administration) বলিতে ১৮৯০ সালের রেলওয়ে অাইনের (১৮৯০ সালের ৯ নং অাইন) এর ৩ ধারার ৬ উপধারায় বর্ণিত অর্থবোধক বুঝায়; এবং

(vi) মজুরী(Wages) বলিতে প্রকাশযোগ্য যেকোনো পারিতোষিক যা চাকুরীর শর্ত, ব্যক্ত বা অারোপিত যাই হোক না কেন, পূরণ সাপেক্ষে কোনো ব্যক্তিকে প্রদেয় হয় বা যাহা কাজে নিযুক্ত ব্যক্তির উপস্থিতি, ভাল কাজ বা আচরণ বা ভাল ব্যবহার এর শর্ত সাপেক্ষে নিযুক্ত ব্যক্তিকে তাহার নিযুক্তির কারণে বা কৃত কর্মের জন্য পরিশোধযোগ্য তাহাকে বুঝায় এবং যে কোনো বোনাস বা উপরে বর্ণিত ধরনের পরিশোধযোগ্য অন্যান্য অতিরিক্ত পারিতোষিক বা এরূপ ব্যক্তির চাকুরীর অবসানের দরুন যে অর্থ প্রদেয় হয় তাও ইহার অন্তর্ভূক্ত; কিন্তু নিম্নলিখিত বিষয়গুলি ইহার অনর্র্ভুক্ত হইবে না :

(ক) অাবাসিক সুবিধা,সরবরাহকৃত আলো,পানি বা চিকিত্‍সা সুবিধা বা সরকারের সাধারণ বা বিশেষ নির্দেশে বাদ দেওয়া হইয়াছে এমন সুযোগ সুবিধা বাবদ মূল্য;

(খ) কোনো পেনশন ফান্ড বা প্রভিডেন্ট ফান্ডে মালিক কতৃর্ক প্রদত্ত চাঁদা;

(গ) যেকোনো যাতায়াত ভাতা বা যাতায়াত বাবদ প্রদত্ত সুবিধার মূল্য;

(ঘ)চাকুরীর ধরনের কারণে নিযুক্ত ব্যক্তির বিশেষ ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রদত্ত অর্থ; অথবা

(ঙ) ডিসচার্জ এর কারণে প্রদেয় গ্রাচুয়িটি ।

 

ধারা-৩। মজুরী পরিশোধের দায়িত্ব (Responsibility for payment of wages) : মালিক তত্‍কর্তৃক নিযুক্ত সকল ব্যক্তিকে আইনের অধীনে প্রাপ্য সকল মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী। শর্ত হইতেছে ,(কন্ট্রাক্টর কর্তৃক নিয়োগ ব্যতীত) নিম্নোক্ত নিযুক্ত ব্যক্তিগণ -

(ক) [কারখানার ক্ষেত্রে ১ঌ৬৫ সালের কারখানা আইনের ৬ ধারার (১) উপধারার (চ) অনুচ্ছেদ] অনুযায়ী ‘ম্যানেজার’ নামান্কিত ব্যক্তি;

(খ) শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শিল্প প্রতিষ্ঠানের তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের জন্য মালিকের নিকট দায়ী ব্যক্তি;

(গ) রেলওয়ের ক্ষেত্রে (কারখানা ব্যতীত), রেল প্রশাসন মালিক হইবে বা রেল প্রশাসন সংশ্লিষ্ট স্থানীয় এলাকার জন্য কোনো ব্যক্তিকে এইজন্য মনোনীত করিলে এই প্রকারের নামান্কিত ব্যক্তি, মালিকের নিকট এইরূপ দায়ী ব্যক্তি বা এইরূপ মনোনীত ব্যক্তি, ক্ষেত্রবিশেষে, এই রকম পরিশোধের জন্য দায়ী থাকিবেন ।

 

ধারা-৪। মজুরী মেয়াদ নির্ধারণ (Fixation of Wage-periods) :

(১) মজুরী পরিশোধের জন্য ৩ ধারায় দায়ী ব্যক্তি যেই মেয়াদের জন্য মজুরী পরিশোধযোগ্য, তাহার সময়সীমা (অত্র আইনের মজুরী মেয়াদ বলিয়া উল্লিখিত) নির্ধারণ করিবেন।

(২) কোনো মজুরীর মেয়াদ এক মাসের অতিরিক্ত হইবে না।

ধারা-৫। মজুরী পরিশোধের সময় (Time of payment of wages) :

উপধারা- (১) নিম্নোক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির মজুরী পরিশোধ করিতে হইবে -

(ক) এক হাজারের কম লোক নিয়োগ রহিয়াছে, এমন কোনো কারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে যেই মজুরী মেয়াদের জন্য      মজুরী প্রাপ্য, তাহার শেষ দিনের পর সাতদিন অতিক্রান্ত হইবার পূর্বে।

(খ) [রেলওয়ে বা অন্যান্য কারখানায়] বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে যেই মেয়াদের জন্য মজুরী প্রাপ্য, তাহার শেষ দিনের পর দশদিন অতিক্রান্ত হইবার পূর্বে।

উপধারা- (২) কোনো মালিক কর্তৃক বা তাহার পক্ষ হইতে কোনো ব্যক্তির চাকুরি অবসান করা হইলে, উক্ত ব্যক্তি কর্তৃক অর্জিত মজুরী যেইদিন চাকুরির অবসান করা হইয়াছে, তাহার পরবর্তী দ্বিতীয় দিন অতিক্রান্ত হইবার পূর্বে পরিশোধ করিতে হইবে।

উপধারা- (৩) যেই কোনো [রেলওয়ে]   (কারখানা ব্যতীত) নিযুক্ত ব্যক্তি বা কোনো শ্রেণীর ব্যক্তিদের মজুরী পরিশোধের বেলায় মজুরী পরিশোধের জন্য দায়ী ব্যক্তিকে [সরকার] বিশেষ বা সাধারণ আদেশ জারির মাধ্যমে অত্র ধারার আওতা হইতে রেহাই দিতে পারিবেন।

উপধারা- (৪)  সকল প্রকার মজুরী কার্য দিবসে পরিশোধ করিতে হইবে।

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

[*] Previous page

Go to full version