Recent Posts

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 10
21
দলিল আছে কিন্তু দখল নেই, রেকর্ডও নেই: জমি কি আদৌ পাওয়া যাবে?



বাংলাদেশে এমন বহু জমির মালিক ও উত্তরাধিকারী আছেন, যাদের হাতে জমির বৈধ দলিল থাকা সত্ত্বেও রেকর্ডে নাম নেই এবং বাস্তবের দখলও তাদের হাতে নেই। বিশেষত যারা দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন বা জমির হালনাগাদ খোঁজ রাখেননি, তাদের জন্য এই ধরনের জটিলতায় পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। এমন পরিস্থিতিতে জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং দখল পুনরুদ্ধার করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অপরিহার্য।

আইন অনুযায়ী, শুধু দলিল থাকলেই জমি পাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় না, বরং সঠিক আইনি পথে চললে মালিকানা ও দখল দুটোই ফিরে পাওয়া সম্ভব।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের জমি ফিরে পেতে দুটি প্রধান ধাপ অতিক্রম করতে হয়: ১. আদালতের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণ করা। ২. দখল পুনরুদ্ধার করা।

যদি দলিল থাকা সত্ত্বেও জমির নামজারি না হয় এবং সরকারি রেকর্ডে অন্য কারও নাম থেকে যায়, তবে আদালতের মাধ্যমে আপনার প্রকৃত মালিকানা প্রমাণ করতে হবে।

জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য আবেদনের সময়সীমার ওপর ভিত্তি করে দুটি ভিন্ন আদালতে মামলা করতে হয়:

ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল (LST): যদি সরকারি পরচা বা খতিয়ান প্রকাশের দুই বছরের মধ্যে রেকর্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়, তবে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল-এ মামলা করতে হবে।

সহকারী জজ আদালত: যদি দুই বছর সময়সীমা পার হয়ে যায় অথবা আপনি রেকর্ড হওয়ার বিষয়টি আগে না জেনে থাকেন, সেক্ষেত্রে সহকারী জজ আদালতে 'ঘোষণামূলক মামলা' (Declaratory Suit) দায়ের করতে হবে। এই মামলার উদ্দেশ্য হলো আদালতের মাধ্যমে নিজেকে জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

একবার আদালতের রায়ের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণিত হলে এবং নামজারি সম্পন্ন হলে, পরবর্তী ধাপ হলো দখল পুনরুদ্ধার।

এই কাজের জন্য অনুসরণ করতে হবে সদ্য প্রণীত ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এর ধারা ৮। এই আইনের আওতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গঠিত ভূমি প্রতিকার আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।

দখল পুনরুদ্ধারের জন্য নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে:

১. আদালতের আদেশ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফরমে ভূমি প্রতিকার আদালতে আবেদন করতে হবে।

২. ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনকারীর মালিকানা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত পরিচালনা করবেন।

৩. যাচাই শেষে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন।

আইনজীবীরা বলছেন, যথাযথ কাগজপত্র, আদালতের সঠিক নির্দেশনা এবং সময়মতো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে দলিলধারী মালিক তার জমি ও দখল উভয়ই ফিরে পেতে সক্ষম হবেন।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867761
22
দলিল আছে কিন্তু দখল নেই, রেকর্ডও নেই: জমি কি আদৌ পাওয়া যাবে?


বাংলাদেশে এমন বহু জমির মালিক ও উত্তরাধিকারী আছেন, যাদের হাতে জমির বৈধ দলিল থাকা সত্ত্বেও রেকর্ডে নাম নেই এবং বাস্তবের দখলও তাদের হাতে নেই। বিশেষত যারা দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন বা জমির হালনাগাদ খোঁজ রাখেননি, তাদের জন্য এই ধরনের জটিলতায় পড়াটা অস্বাভাবিক নয়। এমন পরিস্থিতিতে জমির মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং দখল পুনরুদ্ধার করার জন্য আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা অপরিহার্য।

আইন অনুযায়ী, শুধু দলিল থাকলেই জমি পাওয়ার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় না, বরং সঠিক আইনি পথে চললে মালিকানা ও দখল দুটোই ফিরে পাওয়া সম্ভব।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের জমি ফিরে পেতে দুটি প্রধান ধাপ অতিক্রম করতে হয়: ১. আদালতের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণ করা। ২. দখল পুনরুদ্ধার করা।

যদি দলিল থাকা সত্ত্বেও জমির নামজারি না হয় এবং সরকারি রেকর্ডে অন্য কারও নাম থেকে যায়, তবে আদালতের মাধ্যমে আপনার প্রকৃত মালিকানা প্রমাণ করতে হবে।

জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য আবেদনের সময়সীমার ওপর ভিত্তি করে দুটি ভিন্ন আদালতে মামলা করতে হয়:

ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল (LST): যদি সরকারি পরচা বা খতিয়ান প্রকাশের দুই বছরের মধ্যে রেকর্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করা হয়, তবে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল-এ মামলা করতে হবে।

সহকারী জজ আদালত: যদি দুই বছর সময়সীমা পার হয়ে যায় অথবা আপনি রেকর্ড হওয়ার বিষয়টি আগে না জেনে থাকেন, সেক্ষেত্রে সহকারী জজ আদালতে 'ঘোষণামূলক মামলা' (Declaratory Suit) দায়ের করতে হবে। এই মামলার উদ্দেশ্য হলো আদালতের মাধ্যমে নিজেকে জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

একবার আদালতের রায়ের মাধ্যমে মালিকানা প্রমাণিত হলে এবং নামজারি সম্পন্ন হলে, পরবর্তী ধাপ হলো দখল পুনরুদ্ধার।

এই কাজের জন্য অনুসরণ করতে হবে সদ্য প্রণীত ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ এর ধারা ৮। এই আইনের আওতায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গঠিত ভূমি প্রতিকার আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।

দখল পুনরুদ্ধারের জন্য নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে:

১. আদালতের আদেশ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত ফরমে ভূমি প্রতিকার আদালতে আবেদন করতে হবে।

২. ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনকারীর মালিকানা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত পরিচালনা করবেন।

৩. যাচাই শেষে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন।

আইনজীবীরা বলছেন, যথাযথ কাগজপত্র, আদালতের সঠিক নির্দেশনা এবং সময়মতো আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করলে দলিলধারী মালিক তার জমি ও দখল উভয়ই ফিরে পেতে সক্ষম হবেন।

Source: https://www.dailyjanakantha.com/law/news/867761
23
Commerce / Succession gap in Bangladeshi companies
« Last post by Imrul Hasan Tusher on October 18, 2025, 12:00:30 PM »
Succession gap in Bangladeshi companies


Succession planning remains one of the weakest aspects of corporate governance in Bangladesh. While multinationals operating here view salaries as long-term investments in leadership pipelines, most local firms continue to treat them as costs. This difference explains why professionals in multinational corporations thrive in structured, merit-based environments, while many of their counterparts in local businesses remain underutilised and frustrated.

Over the past two decades, family-owned conglomerates in garments, cement and trading have experimented with hiring professional managers. Yet genuine success stories are rare. The main reason is the dominance of owners in daily operations. On paper, professionals may appear empowered, but in practice, most significant decisions still flow back to the owner or the family. This stifles initiative, limits professional growth, and reinforces the belief that only the owner can run the business effectively. The result is predictable: talented managers leave, often for multinationals, where decision-making structures are clearer and career progression more systematic.

The contrast with multinational joint ventures is striking. In sectors such as fast-moving consumer goods, telecommunications and cement, professionals typically run operations, while foreign or institutional shareholders focus on governance and strategic oversight. Because ownership and management are clearly separated, managers are trusted to lead and are held accountable for performance. These firms consistently attract top graduates, develop leadership talent internally and maintain competitiveness in fast-changing markets.

The role of the first generation of Bangladeshi entrepreneurs is central to understanding this dynamic. Many of today's business leaders began from modest positions -- some as traders of raw materials, others on factory floors or in small tailoring shops. Through resilience and effort, they built enterprises that came to dominate their sectors. Their strength lay in hands-on experience and instinctive market knowledge. Yet this history also created a structural challenge: when such entrepreneurs employ professionals, they often expect them to display the same level of intuition and resilience that they themselves developed over decades. For most managers, this is an impossible benchmark to meet, fuelling mistrust and disappointment. For them, it is baptism through fire.

The issue becomes sharper when businesses move to the second and third generations. In many family-run firms, successors have studied abroad at leading universities. While this education offers valuable exposure, some heirs return reluctant to join their family businesses at all, while others attempt to impose foreign management styles directly. These models often clash with local realities, whether in garments, trading or manufacturing, creating friction with long-serving employees and undermining performance.

The broader pattern is clear. Family-dominated conglomerates often struggle with succession because authority remains concentrated in founders or heirs, leaving little scope for professional managers to develop. Listed firms and multinational joint ventures, by contrast, institutionalise leadership development and maintain a clearer separation between governance and management. They are better placed to attract and retain talent, adapt to change and sustain competitiveness across generations.

For Bangladesh's private sector to sustain its momentum, a change in mindset is essential. Professional managers must be given time and freedom to grow, without being judged against the lifetime of experience of founders. Owners should focus on strategy and governance, allowing managers to handle operations. Likewise, second- and third-generation successors should not be parachuted into boardrooms but should earn their positions by working through the ranks. Global education can enrich their vision, but only when blended with local experience.

Bangladesh's first-generation entrepreneurs have already shown what can be achieved through resilience and hard work. The next challenge is to ensure these businesses endure and thrive beyond their founders. By learning from the governance practices of listed companies and joint ventures, family-owned firms can institutionalise succession planning, build leadership pipelines and preserve their legacy for future generations. Without these changes, many risk stagnation. With them, Bangladesh's homegrown firms can continue their entrepreneurial journey with greater stability and confidence.

Source: https://www.thedailystar.net/business/column/news/succession-gap-bangladeshi-companies-4008436
24
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঘুমের আগে নবীজির (সা.) ৭ নির্দেশনা


রাসুল (সা.)-এর জীবনধারায় নিদ্রাও ইবাদত। ঘুম মানুষের শরীর ও মনের জন্য এক অপরিহার্য নিয়ামত। আল্লাহ তায়ালা কোরআনে বলেন,“তিনিই তোমাদের জন্য ঘুমকে করেছেন বিশ্রামের মাধ্যম এবং ঘুম থেকে জাগরণকে করেছেন জীবনযাপনের সূচনা।” (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৪৭)

কিন্তু ইসলামে ঘুম কেবল জৈব প্রয়োজন নয়, বরং এটি হতে পারে ইবাদতের অংশ, যদি তা নবীজির (সা.) নির্দেশনা অনুযায়ী হয়।

১. ঘুমানোর পূর্বের দোয়া ও জিকির

রাসুল (সা.) ঘুমানোর আগে আল্লাহর স্মরণে লিপ্ত থাকতেন। তিনি বলতেন, “যখন তোমরা বিছানায় যাবে, তখন ডান পাশে শুয়ে বলবে: ‘আল্লাহুম্মা বিস্মিকা আহইয়া ওয়া বিস্মিকা আমুত।’” অর্থ: “হে আল্লাহ, তোমার নামেই আমি জীবিত থাকি এবং তোমার নামেই মৃত্যুবরণ করি।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩১২; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭১০)

এছাড়াও ঘুমের আগে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাঠ করা সুন্নাহ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)। এতে করে দুষ্টু জিনের মন্দ–প্রবঞ্চনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

২. অজু করে ঘুমানো

রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি পবিত্র অবস্থায় ঘুমায়, সে যখনই রাতে জেগে আল্লাহর স্মরণ করে ও দোয়া করে, আল্লাহ তার দোয়া কবুল করেন।” (সহিহ ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৮৬৪)

অতএব, ঘুমের আগে ওজু করে নেওয়া শুধু শরীরকে পরিচ্ছন্ন রাখে না, বরং এটি আল্লাহর বিশেষ রহমতেরও মাধ্যম।

৩. ডান কাতে শোয়া

রাসুল (সা.) নিজে ডান কাতে শুয়ে ঘুমাতেন এবং সাহাবিদেরও তাই করতে বলেছেন, “যখন তুমি বিছানায় যাবে, তখন তোমার ডান পাশে শোও।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৪৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭১০)

এটি শারীরিকভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের দিক থেকেও উপকারী বলে স্বীকৃত, কারণ এতে হৃদপিণ্ডের উপর চাপ কমে ও হজম সহজ হয়।

৪. বিছানার পরিচ্ছন্নতা ও শরীরের নিরাপত্তা

নবীজির (সা.) নির্দেশ, “যখন কেউ শয্যায় যাবে, তখন তার বিছানার চাদর একবার ঝাড়ে নেবে, কারণ সে জানে না, সেখানে কী আছে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩২০)

এ নির্দেশে যেমন নিরাপত্তার শিক্ষা আছে, তেমনি পরিচ্ছন্নতার গুরুত্বও প্রতিফলিত হয়েছে।

৫. নির্দিষ্ট দিক মুখ করে ঘুমানো

রাসুল (সা.)-এর অভ্যাস ছিল কিবলামুখী হয়ে ডান কাতে ঘুমানো। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৩৮৪৯)

অন্যদিকে, তিনি উল্টো পিঠে (উপুড় হয়ে) শোয়াকে অপছন্দ করতেন (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২৭৬৯)। উপুড় হয়ে ঘুমানো শারীরিক উত্তেজনা বাড়ায়, প্রশান্তিদায়ক ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।

৬. ঘুমানোর আগে আত্মসমালোচনা

নবীজির (সা.) জীবনে ঘুম কেবল বিশ্রামের নয়, আত্মসমালোচনার সময়ও ছিল। তিনি বলতেন, “যে নিজের নফসের হিসাব করে, সে সফল।” (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস: ২৩৯৮৮)

অতএব, দিনের শেষে ঘুমানোর আগে নিজের আমল যাচাই করাও এক ধরনের ইবাদত। এটা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। কর্ম উদ্দীপনা বাড়ায় এবং মস্তিষ্ককে অহেতুক ভাবনা থেকে সুরক্ষিত রাখে।

৭. রাত্রিকালীন নামাজ ও ঘুমের ভারসাম্য

রাসুল (সা.) ঘুমাতেন এবং রাতের একাংশে জেগে তাহাজ্জুদ আদায় করতেন। কোরআনে বলা হয়েছে, “তুমি রাত্রির কিছু অংশে তাহাজ্জুদের মাধ্যমে দাঁড়াও।” (সুরা ইসরা, আয়াত: ৭৯)

এই অভ্যাস নিদ্রাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখে এবং আত্মাকে পবিত্র করে।

দুপুরের ঘুম

নবীজির (সা.) একটি সুন্নাহ হলো দুপুরে অল্প বিশ্রাম নেওয়া, যাকে কায়লুলা বলে। তিনি বলেন, “তোমরা দিনের কিছু অংশে ঘুমাও, কারণ শয়তান ঘুমায় না।” (জামে’ আস-সগীর, হাদিস: ৮৫৮৯)

আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও প্রমাণ করেছে যে, দুপুরের সংক্ষিপ্ত ঘুম কর্মক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি করে।

ঘুম থেকে জাগার দোয়া

জেগে উঠলে রাসুল (সা.) বলতেন, “আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা, ও ইলাইহিন নুশূর।” অর্থ: “সব প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের মৃত্যুর পর (ঘুম থেকে) জাগিয়ে তুলেছেন; এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩১৪)

ঘুম ইসলামি জীবনের এমন এক অধ্যায়, যেখানে ইবাদত রয়েছে প্রতিটি ধাপে। ডান কাতে শোয়া, অজু করে ঘুমানো, দোয়া পাঠ, আত্মসমালোচনা—সবকিছুই একটি আত্মিক ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার অংশ। নবীজির (সা.) শিক্ষা হলো—“ঘুমও যেন হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।”

Source: https://www.prothomalo.com/religion/islam/u6w9ubthdy
25
আমাদের দোয়া কেন কবুল হয় না


দৈনন্দিন জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা সত্ত্বেও দোয়া যেন লক্ষে পৌঁছাচ্ছেই না—এমন অনুভূতি অনেকের হয়। একই দোয়া বারবার উচ্চারণ করতে গিয়ে মন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, হতাশা আচ্ছন্ন করে নেয়।

অবশ্য এই অনুভূতি দুর্বল ইমানের লক্ষণ নয়, বরং হতে পারে আল্লাহর প্রিয়জনদের জন্য একটি পরীক্ষা, যার মাধ্যমে ধৈর্য, খাঁটি ইমান এবং তাঁর ওপর ভরসা যাচাই করা হয়।

আধুনিক জীবনের চাপ, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যা এই ‘দোয়া ফ্যাটিগ’কে আরও তীব্র করে। ইসলাম বলে, আল্লাহ আপনার কান্না শোনেন, আপনার চেষ্টা দেখেন।

এই অনুভূতি কি স্বাভাবিক?

সংক্ষিপ্ত উত্তর হল, হ্যাঁ, এটা ইমানের পরীক্ষা হতে পারে। নবী-রাসুলগণ এবং সৎকর্মশীল লোকেরাও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন দোয়ার কবুলের জন্য। সন্তানের জন্য ইবরাহিম (আ.) দোয়া করতে করতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছেন।

এই অবস্থায়ও নামাজ চালিয়ে যাওয়া এবং ইবাদতে শিথিলতা না দেখানো তার ইমানের শক্তির প্রমাণ।

অবশ্য এই অনুভূতি দুর্বল ইমানের লক্ষণ নয়, বরং হতে পারে আল্লাহর প্রিয়জনদের জন্য একটি পরীক্ষা, যার মাধ্যমে ধৈর্য, খাঁটি ইমান এবং তাঁর ওপর ভরসা যাচাই করা হয়।
কোরআন কী বলে
কোরআনের বাণী স্পষ্ট, আল্লাহ দোয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু উত্তর সবসময় আমাদের প্রত্যাশিত রূপে আসে না।

সুরা গাফির (আয়াত: ৬০): “আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।” এই আয়াত আল্লাহর অটুট প্রতিশ্রুতি, কিন্তু উত্তরের রূপ কী তাৎক্ষণিক হবে, না বিলম্ব হবে নাকি আকস্মিক আসতবে—তা তাঁর হাতে।

সুরা বাকারা (আয়াত: ১৫৫-১৫৬): “আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি, জীবনের ক্ষতি এবং ফসলের ক্ষতি দিয়ে... কিন্তু ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও, যাদেরকোনো বিপদ আঘাত করলেও বলে: ‘আমরা আল্লাহর জন্য এবং আমরা তাঁর কাছেই ফিরে যাব।’”

এখানে বোঝা যায়, পরীক্ষা শাস্তি নয়, বরং আধ্যাত্মিক শুদ্ধিকরণ বা অদৃশ্য রক্ষার মাধ্যম।

সুরা শুরা (আয়াত: ৪৩): “যে ধৈর্য ধারণ করে এবং ক্ষমা করে—তা নিশ্চয়ই দৃঢ় সংকল্পের কাজ।”

ধৈর্য এবং ক্ষমা আল্লাহর নৈকট্যের চাবি।

এই আয়াতগুলো স্মরণ করলে হতাশা কমে আসবে। কেননা, স্পষ্ট যে দোয়া শোনা হয়েছে—উত্তর শুধু সময়ের বিষয়।

নবীজির বাণী

মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর হাদিসগুলোও এই অনুভূতির পক্ষে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছেন, “বান্দা দোয়া করতে থাকবে এবং তার দোয়া কবুল হতে থাকবে, যতক্ষণ না সে পাপ বা আত্মীয়তা ছিন্ন করার দোয়া করে বা অধৈর্য হয়ে বলে, ‘আমি দোয়া করেছি, কিন্তু কবুল হয়নি।’” (সহিহ মুসলিমে, হাদিস: ২৭৩৫)

এখানে অধৈর্য হয়ে দোয়া ছেড়ে না দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।

আরেক হাদিসে আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, “মুসলিমের দোয়ায় যদি পাপ বা আত্মীয়তা ছিন্ন করা না থাকে, তাহলে আল্লাহ তাকে তিনটির একটি দেন: তাৎক্ষণিক কবুল, আখিরাতে সংরক্ষণ বা সমান অনিষ্ট থেকে রক্ষা।” (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১১১৩৩)

এই হাদিসটি স্পষ্ট করে যে, দোয়া কবুল হয় নি, তা নয়, বরং উত্তর লুকায়িত বা ভিন্ন রূপে আসে। মানে দোয়া সবসময় শোনা হয়; শুধু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হয়।

মুসলিমের দোয়ায় যদি পাপ বা আত্মীয়তা ছিন্ন করা না থাকে, তাহলে আল্লাহ তাকে তিনটির একটি দেন: তাৎক্ষণিক কবুল, আখিরাতে সংরক্ষণ বা সমান অনিষ্ট থেকে রক্ষা।
মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১১১৩৩

কেন দোয়ায় সাড়া পেতে বিলম্ব হয়

দোয়ার বিলম্বের পিছনে কয়েকটি কারণ থাকতে পারে:

আধ্যাত্মিক উন্নয়ন: দোয়া শুধু চাওয়া নয়, আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক গড়া। বিলম্ব ধৈর্য পরীক্ষা করে, যা ইমানকে মজবুত করে।

উত্তম কিছুর প্রস্তুতি: আপনার চাওয়া এখন আপনার জন্য উপকারী নাও হতে পারে। আল্লাহ করুণাময় হতে পারে তিনি ভালো কিছু প্রস্তুত রেখেছেন।

গুনাহ মোচন: দোয়ার কবুল প্রতিদান হিসেবে ভবিষ্যতের বিপদ দূর হতে পারে বা অতীতের গুনাহ মাফ হতে পারে।

কঠিন সময়ে ইমানের প্রমাণ: সহজ সময়ে কৃতজ্ঞতা সবাই আদায় করে কিন্তু কঠিন সময়ে দোয়ায় অবিচল থাকা খাঁটি ইমানের লক্ষণ।

দোয়া ক্লান্তিকর মনে হলে কী করবেন

নামাজ চালিয়ে যান: নামাজ আল্লাহর আনুগত্য প্রমাণের অন্যতম উপায়। আল্লাহ নিশ্চয় আপনার চেষ্টা দেখছেন। তা ছাড়া নামাজের মধ্য দিয়েও অনেক দোয়া করা হয়ে যায়।

ধৈর্য ও শান্তির জন্য দোয়া করুন: বলুন, “আল্লাহ, আপনার ফয়সালায় শক্তি দিন এবং আমাকে সন্তুষ্টি দান করুন।”

ইস্তিগফার করুন: গুনাহ আধ্যাত্মিক বাধা তৈরি করে। নবীজি (সা.) দিনে ৭০ বারেরও বেশি ইস্তিগফার করতেন। তাই বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করুন।

অন্যদের সঙ্গে তুলনা এড়ান: সকলেরই নিজ নিজ পরীক্ষা আছে। দোয়া কোনো স্কোরবোর্ড নয়, বরং এটা আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কের সূত্র।

জিকির ও সৎ সঙ্গের মাঝে থাকুন: ভালো সঙ্গ এবং জিকির হৃদয় নরম করে, আধ্যাত্মিক শক্তি ফিরিয়ে আনে।

এই আমলগুলো দৈনন্দিন জীবনে যোগ করলে, দোয়া আবার আনন্দদায়ক হয়ে উঠবে।

আপনার এই অনুভূতি বাস্তব, বেদনাদায়ক এবং গভীরভাবে ব্যক্তিগত—কিন্তু এটি নিষ্ফল নয়। আল্লাহ আপনার অশ্রুর কথা জানেন, দোয়া শোনেন এবং চেষ্টা দেখেন। ক্লান্ত হৃদয়েও দোয়া চালিয়ে যাওয়া তাঁর কাছে প্রিয় ইবাদত হতে পারে। আল্লাহ নিশ্চয়ই শুনছেন, তিনি সাড়া দিতে দেরি করছেন মানে কবুল করছেন না, তা নয়।

Source: https://www.prothomalo.com/religion/islam/491xnipfhj
26
জাপান শুধু সামুরাই কিংবা সুশির জন্যই বিখ্যাত নয়—তারা পুরো বিশ্বকে শিখিয়েছে কীভাবে ব্যবসায় টিকে থাকতে হয় আর একটা ব্র্যান্ডকে কীভাবে বিশ্বসেরা বানানো যায়।



জাপান শুধু সামুরাই কিংবা সুশির জন্যই বিখ্যাত নয়—তারা পুরো বিশ্বকে শিখিয়েছে কীভাবে ব্যবসায় টিকে থাকতে হয় আর একটা ব্র্যান্ডকে কীভাবে বিশ্বসেরা বানানো যায়।
একটু ভাবুন তো—Toyota, Sony, Nintendo, Uniqlo—এই সব জাপানি কোম্পানি আজও শীর্ষে। কিন্তু তারা কীভাবে এত দিন ধরে সফল?
চলুন জেনে নিই তাদের সফলতার ৫টি মূল কারণ:





🔹 ১. কাইজেন (Kaizen) — “ধাপে ধাপে উন্নতি”র দর্শন জাপানিরা বিশ্বাস করে: 👉 “আজ যা আছি, কাল যেন তার চেয়ে একটু ভালো হই।” তারা প্রতিদিন ছোট ছোট পরিবর্তন আনে, যা ধীরে ধীরে বিশাল সফলতায় রূপ নেয়।

🔹 ২. গুণগত মান আগে, লাভ পরে তাদের কথা হলো: 👉 “খারাপ জিনিস তৈরি করলে শেষমেশ ক্ষতিই বেশি হয়।” তাই আপনি যদি Toyota-র গাড়ি কিনেন, তাহলে ১০ বছরেও মাথাব্যথা নেই! টেকসই, নির্ভরযোগ্য।

🔹 ৩. গ্রাহক মানেই অতিথি (Customer is like a guest) জাপানিরা গ্রাহকদের শুধু কাস্টমার না, বরং একজন অতিথির মতো গুরুত্ব দেয়। 👉 এজন্য Sony-র হেডফোনে এত নিখুঁত মান ও সাউন্ড কোয়ালিটি।

🔹 ৪. মিনিমালিজম—“সোজাসাপ্টা কিন্তু নিখুঁত” তারা বিশ্বাস করে: 👉 “কম হলেও ভালো হওয়া জরুরি।” Uniqlo-র জামা-কাপড় দেখতে সাধারণ, কিন্তু পরলে বোঝা যায় আরাম আর কোয়ালিটির জাদু।

🔹 ৫. দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য (Long-term thinking) অনেক কোম্পানি ৫ বছরের পরিকল্পনা করে, কিন্তু জাপানিরা ভাবে ৫০ বছরের জন্য। 👉 এজন্য Nintendo আজও জনপ্রিয়, এমনকি ৩০–৪০ বছর পরেও।

Source: https://www.linkedin.com/posts/ummay-afia-akhter-55842118b_%E0%A6%9C%E0%A6%AA%E0%A6%A8-%E0%A6%B6%E0%A6%A7-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A6%87-%E0%A6%95%E0%A6%AC-%E0%A6%B8%E0%A6%B6%E0%A6%B0-%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A6%AF%E0%A6%87-%E0%A6%AC%E0%A6%96%E0%A6%AF%E0%A6%A4-activity-7382989444800430080-lSam/?utm_source=share&utm_medium=member_android&rcm=ACoAAADdVS0BU_3bq6QqkzO5KbLBhoTijDhJY4Q
27
শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধা যেভাবে কাজে লাগাতে পারবে আট খাতের প্রতিষ্ঠান


এসএমএসি অ্যাডভাইজরি সার্ভিসেসের পরিচালক স্নেহাশীষ বড়ুয়া

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্প্রতি আংশিক রপ্তানিকারক শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ব্যাংক নিশ্চয়তার বিপরীতে শুল্ক-কর ছাড়া কাঁচামাল আমদানির সুবিধা দিয়েছে। এনবিআরের এই সিদ্ধান্ত রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনবে। বিদ্যমান বন্ড ব্যবস্থাপনার জটিলতার কারণে অনেক আংশিক রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান বন্ডেড ওয়্যারহাউস সনদ বা লাইসেন্স নিতে পারে না। নতুন এই নীতি তাদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি সহজ করবে, যা রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

কারা এই সুবিধা পাবে

যেসব প্রতিষ্ঠানের শিল্প আমদানি নিবন্ধন ও ভ্যাট পরিপালনকারী সনদ থাকবে, সে ধরনের আট খাতের প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা পাবে। খাতগুলো হচ্ছে আসবাব, ইলেকট্রনিকস, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, হালকা প্রকৌশল, ইস্পাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, চামড়াজাত পণ্য ও তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক খাত। এসব খাতকে এই সুবিধা পেতে হলে রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু শর্তও পালন করতে হবে। শর্তগুলো হলো রপ্তানি অবশ্যই এলসি, টিটি বা বিক্রয় চুক্তির মাধ্যমে হতে হবে, বিক্রয় চুক্তি অবশ্যই লিয়েন ব্যাংকের অনুমোদনের পর সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেটে জমা দিতে হবে, ন্যূনতম মূল্য সংযোজন হতে হবে ৩০ শতাংশ।

যা আমদানি করা যাবে না

এই শুল্কমুক্ত সুবিধায় বেশ কিছু পণ্য আনা যাবে না। সেগুলো হলো সিমেন্ট, প্রি-ফ্যাব ভবন, এমএস রড, বার, পার্টিকেল বোর্ড, তার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, এয়ার কন্ডিশনার, ফার্নিচার ও অফিস সরঞ্জাম এবং জ্বালানি পণ্য।

এ ছাড়া এই সুবিধায় শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে বেশ কিছু শর্ত পালন করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো রপ্তানি আদেশ পাওয়ার পর উপকরণ-উৎপাদক সহগ, ব্যাংক নিশ্চয়তাপত্র, আমদানির পর আমদানিসংশ্লিষ্ট দলিলাদি, রপ্তানির পর রপ্তানিসংশ্লিষ্ট দলিলপত্র সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেটে জমা দিতে হবে। পাশাপাশি আমদানি করা কাঁচামালের ব্যবহার মাসিক ভ্যাট রিটার্নের মাধ্যমে জমা, বিক্রয় ও ক্রয় রেজিস্ট্রার সংরক্ষণ করতে হবে। এই সুবিধার আওতায় একই এলসির অধীনে একাধিকবার শুল্ক-করমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানি করা যাবে। তবে তা স্থানীয় বাজারের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

কখন ব্যাংক গ্যারান্টি নগদায়ন করা যাবে

মূসক কমিশনারেট দলিলাদি যাচাই করে অনাপত্তি সনদ দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কাস্টমস হাউস বা শুল্ক স্টেশন ওই আমদানিকে ব্যাংক গ্যারান্টি মুক্ত করবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এই সুবিধা নেবে, তাদের ৯ মাসের মধ্যে রপ্তানি সম্পন্ন করতে হবে। তবে সংশ্লিষ্ট মূসক কমিশনারেট যৌক্তিক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সময় আরও তিন মাস বাড়াতে পারবে। নির্ধারিত সময় পার হলে অথবা আদেশ বাতিল হলে অথবা রপ্তানিতে ব্যর্থ হলে ব্যাংক গ্যারান্টি বাজেয়াপ্ত করা হবে।

এনবিআরের এই উদ্যোগ রপ্তানি বৈচিত্র্য আনার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই উদ্যোগের পুরোপুরি সুফল পেতে হলে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাকে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে। পাশাপাশি রপ্তানিকারকদেরও নিয়মকানুনগুলো যথাযথভাবে পালন করতে হবে।

Source: https://www.prothomalo.com/business/analysis/6v6o46yamu
28
নবীজির নিয়মিত অভ্যাস ‘কায়লুলা’র উপকারিতা


দুপুরের খাবারের পর আমাদের অনেক সময় ক্লান্তি ও আলস্য পায়, তখন অনেকে স্বল্প সময় বিশ্রাম নেন। এ বিশ্রামকে হাদিসের ভাষায় বলে কায়লুলা। বাংলায় ‘ভাতঘুম’ বললে এর কাছাকাছি অর্থ হয়।

কায়লুলা আমাদের দিনের পরবর্তী অংশকে প্রাণবন্ত ও সক্রিয় করে তোলে। বর্তমানে বিজ্ঞান কায়লুলার অনেক উপকারিতা উল্লেখ করছে। এটি নবীজি (সা.) ও সাহাবিগণের নিয়মিত অভ্যাস ছিল। তারা কখনও জোহরের নামাজের আগে আবার কখনও জুমার নামাজের পর কায়লুলা করতেন।

কায়লুলার উপকারিতা
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, দুপুর বেলায় স্বল্প সময়ের ঘুম মানুষের শরীর ও মনকে সতেজ করে, চিন্তা ও মনোযোগ পুনসঞ্চয় ঘটায় ও কাজের সক্রিয়তা বৃদ্ধি করে।

‘সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স’ জার্নালে ২০০২ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় গবেষকরা উল্লেখ করেন, দুপুরে ১০ থেকে ৪০ মিনিটের নিদ্রা শরীরকে যথেষ্ট বিশ্রাম দেয় এবং দিনের শুরুতে মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রমের ফলে রক্তে বেড়ে যাওয়া চাপ-হরমোনের (stress hormones) মাত্রা কমায়। এটা সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট হলে তাতে রাতের ঘুমে কোনো প্রকার প্রভাব পড়ে না। কিন্তু এর চেয়ে বেশি হলে রাতে অনিদ্রা ও ঘুমের ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে।

‘কায়লুলা’ যেমন দিনের বাকি অংশের কর্মশক্তি বৃদ্ধি করে, তেমনি রাতের ইবাদতেও সহযোগিতা করে। শেষ রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করা সহজতর হয়। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা সাহরি খাওয়ার মাধ্যমে দিনের রোজার ব্যাপারে এবং দিনের বিশ্রামের মাধ্যমে রাতের নামাজের জন্য সাহায্য নেবে। (সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস: ১৬৯৩)

মুসলিম জীবনে কায়লুলা
কায়লুলা সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা গুরুত্বের দাবি রাখে। তবে মুসলিম জীবনে তারচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল এটি নবীজির সুন্নাহ। মুসলিমগণ নবীজির এই সুন্নাহ পালনের মাধ্যমের সওয়াব লাভের পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক উপকারিতা লাভ করেন।

নবীজির সময়ে মুসলিমগণ গ্রীষ্মকালে জোহরের নামাজের আগে কায়লুলা করতেন। কায়লুলার পর জামাতের সঙ্গে জোহরের নামাজ পড়তেন। নবীজি (সা.) গ্রীষ্মকালে দেরিতে জোহরের নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আমরা জুমার নামাজ আদায়ের পরেই দুপুরের খাবার খেতাম এবং বিশ্রাম করতাম।
সাহল ইবনে সাদ (রা.) , সুনানে ইবনে মাজা
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যখন গরমের তীব্রতা বেড়ে যায়, তখন তোমরা জোহরের নামাজ দেরীতে আদায় করবে। কেননা গরমের প্রখরতা জাহান্নামের উত্তাপ থেকে সৃষ্টি হয়। (সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস: ৬৭৮)

তবে তারা জুমার দিনে নামাজ পড়তেন আগে, দুপুরের খাবার গ্রহণ ও কায়লুলা করতেন জুমার নামাজের পর।

আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, আমরা প্রথম ওয়াক্তেই জুমার নামাজে যেতাম এবং জুমার পরে কায়লুলা করতাম। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৮৫৯)

সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, আমরা জুমার নামাজ আদায়ের পরেই দুপুরের খাবার খেতাম এবং বিশ্রাম করতাম। (সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস: ১০৯৯)

নিয়মিত কায়লুলা করা সাহাবিদের দৈনন্দিন অভ্যাসের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা কখনও ঘরে কায়লুলা করতে না পারলে মসজিদে কায়লুলা করতেন।

সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি তাঁর কন্যা ফাতিমার ঘরে এলেন, কিন্তু হজরত আলীকে ঘরে পেলেন না। তিনি ফাতিমা (রা.)–কে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার চাচাতো ভাই (মানে আলী) কোথায়? তিনি বললেন, আমার ও তাঁর মধ্যে কিছু ঘটেছে। তিনি আমার সঙ্গে রাগ করে বাইরে চলে গেছেন। আমার কাছে দুপুরের বিশ্রামও করেন নি।

তারপর রাসুল (সা.) এক ব্যক্তিকে বললেন, দেখ তো সে কোথায়? সে ব্যক্তি খুঁজে এসে বলল, আল্লাহর রাসুল, তিনি মসজিদে শুয়ে আছেন। রাসুল (সা.) এলেন, তখন আলী (রা.) কাত হয়ে শুয়ে ছিলেন। তাঁর শরীরের এক পাশের চাদর পড়ে গিয়েছে এবং তাঁর শরীরে মাটি লেগেছে। রাসুল (সা.) তাঁর শরীরের মাটি ঝেড়ে দিতে দিতে বললেন, ওঠ, আবু তুরাব, ওঠ, আবু তুরাব। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৪২৮)

‘তুরাব’ মানে মাটি। আলী (রা.)–এর গায়ে মাটি লেগে থাকায় আল্লাহর রাসুল তাকে ‘আবু তুরাব’ বলে সম্বোধন করছিলেন। এই হাদিস থেকে কায়লুলার প্রতি সাহাবিগণ কতটা গুরুত্ব প্রদান করতেন, তা সহজে অনুমান করা যায়।

নিয়মিত কায়লুলা করা সাহাবিদের দৈনন্দিন অভ্যাসের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তারা কখনও ঘরে কায়লুলা করতে না পারলে মসজিদে কায়লুলা করতেন।
কায়লুলা নবীজির সুন্নাহ
আনাস (রা.)-এর খালা উম্মে হারাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুল (সা.) আমাদের ঘরে এলেন এবং আমাদের এখানেই মধ্যাহ্ন বিশ্রাম করলেন। তারপর তিনি যখন জাগলেন তখন হাসছিলেন...। (সহিহ মুসলিম, হাদিস, ৪৭৮২)

এই হাদিস থেকে প্রমাণ হয়, কায়লুলা নবীজির সুন্নাহ, এটি ছিল তাঁর নিয়মিত অভ্যাস।

কায়লুলা যেমন আমাদের শরীর ও মনকে প্রফুল্ল ও সক্রিয় করে তোলে, তেমনি ইবাদতের প্রতি একাগ্রতা বৃদ্ধি করে। আলস্যহীন নামাজ, ক্লান্তিহীন দোয়া, মনোযোগী তেলাওয়াত আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম।

মুমিন জীবনে কায়লুলা কেবল শারীরিক ও মানসিক উপকারিতার উপায় নয়, বরং এটি নবীজির অনুকরণীয় গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ।

Source: https://www.prothomalo.com/religion/islam/htsgxpooie
29
দীর্ঘদিন সুস্থ শরীর পেতে চাইলে হার্ভার্ডের গবেষণা অনুযায়ী এই ৫ অভ্যাস চর্চা করুন

যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন সুস্থ শরীর পেতে হলে চাই ধৈর্য আর আত্মনিয়ন্ত্রণ। এ ক্ষেত্রে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে পাঁচটি অভ্যাস। জেনে রাখুন সেসব।


কাজের ফাঁকে হাত পা সচল রাখা জরুরিমডেল: সিফাত। ছবি: কবির হোসেন

১. ধ্যান ও মনঃসংযোগ

হার্ভার্ডের গবেষণা বলছে, ধ্যান ও মনঃসংযোগ মানসিক চাপ কমায়, কাজে মনোযোগ বাড়ায়। মানুষকে বর্তমানের সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে সাহায্য করে। অনেকে প্রতিনিয়ত অতীত নিয়ে ভাবতে থাকেন, ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হন। আর এই মানসিক চাপ দেহের কর্টিসলসহ বেশ কিছু হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে।

দিনের পর দিন এসব জটিলতা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা নষ্ট করে মস্তিষ্ক ও ক্ষতি করে হৃৎপিণ্ডের। এ ক্ষেত্রে ধ্যান ও মনঃসংযোগই আপনাকে নির্ভার হতে সাহায্য করতে পারে।

এ অভ্যাসের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোনো আসন বা ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। ছোট ছোট অনেক চর্চায় মন উৎফুল্ল রাখা যায়। যেমন মনোযোগ দিয়ে হাঁটা, গাছপালার দিকে তাকানো, পাখি দেখার মতো অভ্যাসই যথেষ্ট।

আবার খাওয়ার সময় ফোন স্ক্রল না করে কী খাচ্ছেন, তা দেখেবুঝে ধীরেসুস্থে খাওয়ার অভ্যাসেও আপনার মনোযোগ বাড়বে। এ ছাড়া হুট করে স্ট্রেস বেড়ে গেলে ‘বক্স ব্রিদিং’ করতে পারেন। বক্স ব্রিদিং হলো ছন্দের সঙ্গে সঙ্গে শ্বাস গ্রহণ আর ছাড়া।

এ পদ্ধতিতে শ্বাস কিছুক্ষণ ধরে রাখা, আবার ছাড়া ও আবার কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হয়। এই বক্স ব্রিদিং নিয়মিত পাঁচ মিনিট করলে শরীরের স্ট্রেস হরমোন কমে এবং চারপাশ পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতাও বাড়ে।

২. ভালো ঘুম


৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো শরীরের জন্য ক্ষতিকরছবি: প্রথম আলো

ভালো ঘুম মানেই শরীরের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, ভালো ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, ওজন নিয়ন্ত্রণ করে, বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা বাড়ায়, মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। এতে দীর্ঘায়ুর সম্ভাবনাও বাড়ে।

এখন সাধারণ প্রশ্ন হলো, দিনে কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত? হার্ভার্ড গবেষকেরা বলছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের রাতে সাধারণত সাত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। তবে কয় ঘণ্টা ঘুমাচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ঘুমের গুণগত মান।

রাতভর এপাশ-ওপাশ করা, বারবার ঘুম ভাঙা বা স্লিপিং ডিজঅর্ডার থাকলে তেমন কোনো উপকার হয় না। আবার ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমানো শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই ঠিকমতো সাত ঘণ্টার ঘুম আপনাকে রোগ থেকে দূরে রাখবে এবং দীর্ঘায়ু পেতে হবে সহায়ক।

স্লিপিং ডিজঅর্ডার থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সমাধান করতে পারেন। ভালো ঘুম শরীরের কোষগুলোকে পুনর্গঠনে সহায়তা করে এবং হরমোনের ভারসাম্য আনে।

৩. খাবারদাবার

ভালো ঘুমকে যদি আমরা দীর্ঘদিন সুস্থ থাকার কারিগর বলি, খাদ্যাভ্যাস হলো জ্বালানি। হার্ভার্ড এমন খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হওয়ার কথা বলছে, যেখানে প্রাকৃতিক ও গোটা শস্যজাতীয় খাবারকে প্রাধান্য দিতে হবে।

এর মানে হলো ফলমূল, সবজি, ডাল বা বীজ-জাতীয় খাবার খেতে হবে। একই সঙ্গে এড়িয়ে চলতে হবে প্রক্রিয়াজাত খাবার। কারণ, প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকে অনেক লবণ, চিনি, কৃত্রিম ফ্লেভার, কেমিক্যাল ইত্যাদি। এসব খাবার আমাদের হজমশক্তি ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল করে এবং শরীরের প্রদাহ বাড়ায়।

মিষ্টিজাতীয় খাবার মাঝেমধ্যে খেলেও নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস কমিয়ে আনতে হবে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে খাবারের প্রতি। মন কী চাইছে, সেটা না দেখে শরীরের পুষ্টির চাহিদায় মনোযোগ দিতে হবে। এতে ধীরে ধীরে হজমশক্তি ভালো হবে, ঘন ঘন ক্ষুধা পাওয়া বা নির্দিষ্ট খাবারের প্রতি অদম্য টানের ওপর নিয়ন্ত্রণ আসবে।

৪. হাঁটাচলা বাড়ান

ব্যায়ামকে আমরা অনেক সময় কঠিন কাজ হিসেবে দেখি। মনে হয়, এ যেন ৩০ মিনিটের অত্যাচার। তাই হার্ভার্ডের পরামর্শ, ব্যায়ামকে আনন্দের সঙ্গে জীবনযাপনের অংশ করে নিন। শিডিউল করা ব্যায়ামের বাইরেও একটু বাড়তি কাজ করতে পারেন।

এই বাড়তি কাজটুকু আবার খুব কঠিন কিছু নয়। হাঁটতে হাঁটতে কথা বলা, লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার, অফিসের বিরতিতে স্ট্রেচিং, অবসরে বাগান করা, খেলাধুলা অথবা নাচের অভ্যাস থাকলেই চলে।

এসবের মধ্যে আপনার প্রিয় একটা কাজ বেছে নিয়ে, সেটারই চর্চা করতে পারেন। সারা দিন চলাফেরার মধ্যে বা সক্রিয় থাকাই মূল কথা। আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা রক্তনালি, বিপাকীয় তন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। তাই লম্বা কাজের ফাঁকে হাঁটাচলা করতে হবে।

৫. দূষণ থেকে বাঁচা

এই অভ্যাসের চর্চা করা কঠিন বটে। বিশেষত, বাংলাদেশে দূষণ বাড়ছেই। তবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতে, বায়ুদূষণ, মাইক্রোপ্লাস্টিক ও কেমিক্যালে ঝুঁকিও আমরা কমাতে পারি কিছু অভ্যাস রপ্ত করলে।

বাতাসে ভাসমান ক্ষতিকর পদার্থের কণা মানবদেহের ফুসফুস, এমনকি রক্তে মিশে যায়। এরপর ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড ও অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করে। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। এ ক্ষেত্রে এয়ার পিউরিফায়ার, মাইক্রোপ্লাস্টিক থেকে রক্ষায় ফিল্টার করা খাওয়ার পানি এবং প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাচ বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্র ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

এ ছাড়া রান্নায় গ্যাসের চুলা ব্যবহার করলে রান্নাঘরে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা জরুরি। ঘরে ও বাইরে গাছপালা লাগানো যেতে পারে। এসব অভ্যাসে আমরা হয়তো পুরোপুরি দূষণ থেকে মুক্তি পাব না, তবে ক্ষতির মাত্রা কমবে।

Source: https://www.prothomalo.com/lifestyle/health/hh5fi4d0fy
30
ব্যবসায়ীদের টুঁটি চেপে ধরার নিষ্ঠুরতা আর কত


পান-সুপারি, সুই-সুতা থেকে জাহাজ, গার্মেন্টস, রড-সিমেন্ট, আবাসন ব্যবসায় পর্যন্ত পদে পদে বাধা। কেবল বাধা নয়, পেছনে টেনে ধরার ফলে চরম বিপর্যয়ের শিকার ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীরা। একদিকে তাঁদের অর্থনীতির রিয়াল হিরো বলে পিঠ চাপড়ানো হচ্ছে, আরেক দিকে ভিলেন বানানোর অপতৎপরতা। মামলা-হামলা-হয়রানি ও করারোপের তোড়ের নিষ্ঠুর তামাশা তাঁদের সঙ্গে।

এসব মসকরার পরিণতিতে ব্যবসা-বিনিয়োগের প্রায় প্রতিটি খাতেই রক্তক্ষরণ। নতুন বিনিয়োগ দূরে থাক, লগ্নি করা বিনিয়োগই ঝুঁকিতে। এক বছর ধরে নতুন কর্মসংস্থানের বদলে কর্মচ্যুতি-ছাঁটাই চলমান। নতুন নতুন বেকার;  যা দেশে অনিশ্চিত অর্থনীতির এক প্রতিচ্ছবি।

অর্থনৈতিক এ বাস্তবতায় সবচেয়ে বেশি চাপে ব্যবসায়ীরা। প্রণোদনার পরিবর্তে তাঁরা বেদনায় নীল হচ্ছেন করনীতি, ব্যাংকঋণের অপ্রতুলতা ও আমদানি-রপ্তানি জটিলতায়। এমনকি ব্যবসায়ীদের অনেকের ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পর্যন্ত জব্দ। জিন্দা মেরে ফেলার মতো ক্রমাগত ঘটনাগুলোর দহনে তৈরি হয়েছে  আস্থার সংকট।

ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন, আর কত টুঁটি চেপে ধরলে শেষ হবে এ নিপাতন? অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে যাওয়ায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ স্তব্ধ। যেটুকু ছিল সেখানেও ছন্দঃপতন। কর্মচ্যুতি-ছাঁটাইয়ে নয়া বেকার যোগ। এই স্তব্ধতায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তায় ডুবসাঁতার দিয়ে কোনো মতে টিকে আছেন। আর তরুণ প্রজন্মের চাকরির বাজার ছারখার।

অনির্বাচিত, অন্তর্বর্তী, মধ্যবর্তী, অস্থায়ী সরকারে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক কোনো সেক্টরেই স্থিতাবস্থা আসে না, তা স্বতঃসিদ্ধ। বাংলাদেশের বাস্তবতা আরো ভিন্ন। যা ছিল তা-ও রক্ষা হচ্ছে না। সবখানেই খরা। তলানিতে পড়তে পড়তে প্রায় সবই অতলে।  প্রশ্ন উঠছে, এ কি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য, নাকি নীতিনির্ধারণে অদক্ষতা-অনিশ্চয়তার ফল? দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কিন্তু ভিন্ন অভিজ্ঞতা। শ্রীলঙ্কা মারাত্মক অর্থনৈতিক ও ঋণ সংকটে পড়েও উের গেছে। সেখানে ব্যবসায়ীদের ওপর ধকল আসেনি। ব্যবসায়ী বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে মব ভর করেনি।  ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে তব্দা করার  দমননীতি দেখা যায়নি। নেপালেও তাই। দেশটি  দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অস্থিরতায় ভুগেছে। কিছুটা বাংলাদেশের আদলেই রাজনৈতিক পট পাল্টেছে দেশ দুটিতে। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যে এমন প্রাতিষ্ঠানিক দমন-পীড়ন হয়নি কোনো দেশেই। বরং দেশ দুটির নতুন সরকার ব্যবসায়ীদের সহায়তা নিয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে। নিত্যপণ্যের বাজার থেকে পুঁজিবাজারসহ জাতীয় অর্থনীতি গতিময় করেছে ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীদের একান্ত সহায়তায়। বাংলাদেশে ঘটেছে একদম বিপরীত।

অন্তর্বর্তী বা অস্থায়ী সরকারের সময় উন্নয়ন প্রকল্প ধীরগতির হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু এবার সেই ধীরগতি স্থবিরতায় রূপ নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের নাজেহাল করা, মব সওয়ার হওয়া, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা কেবল ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, পুরো বাণিজ্য পরিবেশে আঘাত করা। তা শুধু দেশীয় নয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও দূরে ঠেলে দেয়। দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিকে ভেঙে ফেলছে। এ ক্ষত সারানো বড় কঠিন। ব্যবসা, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান অর্থনীতির প্রাণ। সামাজিক স্থিতিশীলতার ইন্ডিকেটর।  কোনো দেশ বা সমাজের ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ না থাকলে অর্থনীতির শিরায় রক্ত সঞ্চালন হবে না। পুরো অর্থনৈতিক কাঠামোই ঝুঁকিতে পড়বে। শ্রীলঙ্কা বা নেপালের উদাহরণ আমাদের দেখায়, অর্থনৈতিক সংকট কাটানোর অন্যতম দাওয়াই ব্যবসা-বিনিয়োগের নিশ্চয়তা।  ব্যবসায়ীদের টুঁটি চেপে ধরলে দেশ দুটিতেও  বাংলাদেশের দশাই হতো। বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে পুনরুজ্জীবন দিতে হলে এখনই আস্থা ফেরানো, নীতিগত স্বচ্ছতা আনা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা জরুরি। নইলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ যে  অনিশ্চয়তার দোলাচলে পড়েছে, ভবিষ্যতে নির্বাচিত-জনপ্রিয় সরকার এসেও একে লাইনে তুলতে বহুমুখী সমস্যায় পড়বে।

বছরখানেকেরও বেশি সময় ধরে চলা ব্যবসায়ীদের হয়রানি, অ্যাকাউন্ট জব্দ, মববাজি, প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা অর্থনীতিকে আরো অচল করে দিচ্ছে। তা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক ইতিহাসে প্রায় নজিরবিহীন। অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান আস্থা। ব্যবসায়ীরা যখন দেখেন তাঁরা নিজেরা অনিরাপদ, তাঁদের মূলধনও ক্ষতিগ্রস্ত, তখন কোনো মতে নাক ডুবিয়ে টিকে থাকা বা পারলে ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে পালানোকেই উত্তম ভাবেন। কিন্তু চাহিবা মাত্রই ব্যবসার ঝাপি নামানো সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তিল তিল করে যুগের পর যুগ শ্রমে-ঘামে গড়ে তোলা প্রতিষ্ঠান হুট করে বন্ধ করা মুখের কথা নয়। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ ব্যাপারে আরো সতর্ক। পরিস্থিতি এমন থাকলে কলিজা দেওয়ার লোভনীয় অফারেও তাঁরা গলেন না। যার নমুনা আমরা নিয়মিতই দেখছি।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে স্বচ্ছ ও ব্যবসাবান্ধব নীতি আরো বেশি জরুরি। দেশি ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে ভরসা পেলে বিদেশিরা বিনা দাওয়াত বা অফার ছাড়াই ছুটে আসবেন। মায়াবি-দরদি আহবান জানাতে হবে না। এ সরকারের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের আলাপ-সংলাপ নেহাতই কম। প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে অন্যান্য উপদেষ্টাসহ সরকারের অংশীজনরা কত মহলের সঙ্গে বসছেন, কথা বলছেন। কোনো কোনো দল বা মহলের সঙ্গে বারবারও বসছেন। কিন্তু বিজনেস কমিউনিটির সঙ্গে সে ধরনের কোনো সংযোগের খবর নেই।

সরকার ও নীতিনির্ধারকদের শুরু থেকেই উচিত ছিল উদ্যোক্তাদের এভাবে বেখবরে না রাখা। তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলা। সংলাপ করা। শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কার্যকর প্রণোদনা দিতে না পারলেও অন্তত বিনিয়োগকৃত পুঁজির নিশ্চয়তা দেওয়া। তেমনটি হলে উৎপাদন-উন্নয়ন-বিনিয়োগের সমান্তরালে কর্মসংস্থানের একটি জোয়ারও তৈরি হতে পারত। বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় শ্রমশক্তি হচ্ছে তরুণ জনগোষ্ঠী। জনসংখ্যার এক বিশাল অংশই এখন কর্মক্ষম বয়সে। গেল সরকারের বিরুদ্ধে তাদের আন্দোলনটির সূচনা হয়েছিল কর্মসংস্থান প্রশ্নেই। কোটা নয়, মেধার ভিত্তিতে চাকরির দাবি ছিল তাঁদের প্রধান দাবি। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রতিবছর লক্ষাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হলেও সে অনুযায়ী চাকরি তৈরি হয় না। সরকারি চাকরির সংখ্যা সীমিত, আর বেসরকারি খাতও বিনিয়োগ সংকটে ভুগছে। ফলে নতুন চাকরির বাজার স্থবির। তাদের কর্মসংস্থানের মূল বাজার বেসরকারি খাত। সেখানেই এখন আকাল। কর্মদাতারাই সংকটে। পদে পদে নিগৃহীত, অপমানিত। তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না, কী করবেন? এ বেদনা নিয়ে কোথায় কার কাছে যাবেন?

ঢালাওভাবে ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য, দারিদ্র্য ও কর্মসংস্থানের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলা হয়েছে। দুর্বল শাসনব্যবস্থায় অর্থনীতি চলতে পারে না। সঠিক রাজনীতি ছাড়া সঠিক অর্থনীতিও হয় না। তার ওপর ব্যবসায়ীদের গড়পড়তা বা হরেদরে প্রতিপক্ষ বানানো প্রকারান্তরে অর্থনীতিকে চাবুক মারার নামান্তর। গলায় পাড়া দিয়ে বা টুঁটি চেপে ধরে গোঙানির শব্দ বের করা যায়। তা শুনতে কিছু লোকের কাছে গীত মনে হলেও আসলে তা শুধুই বোবা কান্নার শব্দদূষণ। মামলা, হামলাসহ নানা হয়রানিতে ব্যবসায়ীদের কাবু করে তাঁদের দুর্দশায় ফেলে বিকৃত আনন্দ নেয়ার সমান্তরালে অর্থনীতির সর্বনাশও কম করা হচ্ছে না।  প্রবৃদ্ধি ও শ্রমবাজারে এর কী ভয়ানক প্রভাব পড়ছে ভবিষ্যতে সেই পাটিগণিত-বীজগণিত অবশ্যই প্রকাশ পাবে। আর নগদ হিসাব তো অনেকটাই দৃশ্যমান। উৎপাদন বাড়ানো, রপ্তানি সম্প্রসারণ, নতুন ব্যবসা তৈরির অনিশ্চিত নমুনা খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে। ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ না থাকলে বিনিয়োগ-জিডিপি অনুপাত স্থবির থাকে, প্রবৃদ্ধি কমে, কর্মসংস্থান হয় না, বেকারত্ব বাড়ে, সমাজে দেখা দেয় অসামাজিকতা। এগুলো অর্থনীতি না বোঝা মানুষও বোঝে।

এ নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পেতে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করা এবং উদ্যোক্তাদের আস্থায় আনা ও নিরাপদ রাখার বিকল্প নেই। কিন্তু করা হয়েছে তাদের ঠেঙানি দিয়ে, অপমান-অপদস্তে রাখার সহজ কাজটি। এর ফলাফল যে অবধারিত, তা এখন হাড়ে হাড়ে উপলব্ধিযোগ্য। দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি উদ্যোক্তাদের নিরাপত্তা ও আস্থা পুনঃস্থাপন ছাড়া শিল্প ও কর্মসংস্থান চাঙ্গা করা অসম্ভব। সরকার চাইলে ইমার্জেন্সি পাইলট প্রকল্পের মতো তা এখনো করতে পারে। নিতে পারে সময়োপযোগী শটকোর্স উদ্যোগ, যা ব্যবসায়ীদের দেশে থেকে নতুন বিনিয়োগ করতে উৎসাহী করবে, নিশ্চিত উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াবে। দেশের অর্থনীতিতে যতটা সম্ভব ফিরিয়ে আনবে চাঞ্চল্য।’

Source: https://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2025/10/05/1586894
Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 10