Faculty of Humanities and Social Science > Law

জমিজমা সংক্রান্ত আইন ও বিধি

<< < (5/6) > >>

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৯৬ ( অগ্রক্রয়ের অধিকার-)

উপধারা-(১) যদি কোনো প্রজার জোতের খণ্ড অথবা অংশ হস্তান্তর করা হয় তবে ঐ হোল্ডিং-এর এক বা একাধিক সহ-শরীক প্রজাগণ ৮৯ ধারা অনুযায়ী নোটিশ জারীর চার মাসের মধ্যে বা ৮৯ ধারা অনুযায়ী যদি কোনো নোটিশ জারী না করা হয় তবে হস্তান্তর সম্বন্ধে অবগত হইবার তারিখ হইতে চার মাসের মধ্যে তাহার অথবা তাহাদের ঐ ভূমি খণ্ড অথবা অংশ হস্তান্তরের জন্য আদালতে আবেদন পেশ করিতে পারে ও কোনো জোত অথবা খণ্ড বা অংশ হস্তান্তর করা হইলে ঐ হস্তান্তর করা ভূমির সংলগ্ন ভূমি দখলকার প্রজা অথবা প্রজাগণ ঐ হন্তান্তর সম্বন্ধে অবগত হওয়ার তারিখ হইতে চার মাসের মধ্যে তাহার অথবা তাহাদের নিকট ঐ হোল্ডিং অথবা খণ্ড বা অংশ হস্তান্তরের জন্য আদালতে দরখাস্ত দাখিল করিতে পারে ।

তবে শর্ত থাকে যে, কোনো সহ-শরীক প্রজার বা হস্তান্তরিত ভূমির দখলদার প্রজার অত্র ধারা অনুবলে খরিদ করার অধিকার থাকিবে না-যদি না সে এমন ব্যক্তি হয় যাহার কাছে জোত অথবা উহার খণ্ড বা অংশ, সে যাহাই হউক, ৯০ ধারা অনুযায়ী হস্তান্তরযোগ্য ।

উপধারা-(২) একজন সহ-শরীক প্রজা বা সহ-শরীক প্রজাগণ (১) উপধারা অনুযায়ী দরখাস্ত দাখিল করিলে উক্ত দরখাস্তে জোতের অপর সমস্ত সহ-শরীক প্রজাগণকে ও হস্তান্তর গ্রহীতাকে পক্ষভুক্ত করিতে হইবে ও হস্তান্তরিত ভূমির সংলগ্ন ভূমির দখলদার প্রজা দরখাস্ত করিলে ঐ দরখাস্তে হস্তান্তরিত জোতের সমস্ত সহ-শরীক প্রজাগণকে ও হস্তান্তরিত ভূমির সংলগ্ন ভূমির দখলদার সমস্ত প্রজাগণকে এবং ক্রেতাকে পক্ষভুক্ত করিতে হইবে ।

উপধারা-(৩) (ক) (১) উপধারা অনুযায়ী দায়েরকৃত দরখাস্ত খারিজ হইবে যদি দরখাস্তকারী অথবা দরখাস্তকারীগণ উহা দায়ের করার সময় মূল্যের অর্থ অথবা হস্তান্তরিত জোত বা জোতের খণ্ড অথবা অংশের মূল্য হস্তান্তর দলিলে বা ৮৯ ধারার অধীনে নোটিশ বর্ণিত, সে যাহাই হউক, মূল্যের অর্থ তত্‍সহ উহার শতকরা বার্ষিক দশ টাকা হারে ক্ষতিপূরণ আদালতে জমা না দেয় ।

(খ) উক্তরূপ জমাসহ দরখাস্ত পাওয়ার পর আদালত ক্রেতা ও (২) নং উপধারার অধীনে দরখাস্তের পক্ষভুক্ত অপরাপর ব্যক্তিগণকে আদালতে যে সময় ধার্য করেন সে সময়ের মধ্যে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবেন ও হস্তান্তর বাবদ যে মূল্যের টাকা প্রকৃতপক্ষে দেওয়া হইয়াছে তাহা বর্ণনার জন্য এরূপ ব্যক্তিকে নির্দেশ প্রদান করিবেন । হস্তান্তরের তারিখ হইতে খাজনা বাবদ সে আরও কত টাকা পরিশোধ করিয়াছে ও জোত অথবা অংশের দায়মুক্ত করার নিমিত্ত এবং অপর কোনো উন্নয়ন কার্য্য বাবদ সে আর ও কত টাকা খরচ করিয়াছে উহা বলার নিমিত্ত ক্রেতাকে নির্দেশ প্রদান করিবেন । আদালত তখন সমস্ত পক্ষগণকে শুনানীর সুযোগ প্রদান করিয়া প্রকৃত মূল্যের টাকা, খাজনা পরিশোধ ও হস্তান্তরিত সম্পত্তির দায়মুক্তি বা উন্নয়ন বাবদ ক্রেতার খরচ সম্বন্ধে অনুসন্ধান করিবেন । প্রয়োজনবোধে আদালত যাহা যথার্থ মনে করেন সেই সময়ের মধ্যে আরও অর্থ জমা দেওয়ার নিমিত্ত দরখাস্তকারী বা দরখাস্তকারীদিগকে নির্দেশ প্রদান করিবেন ।

তবে শর্ত হইল যে, ক্রেতা কোনো অবস্থাতেই হস্তান্তর দলিলে বর্ণিত অর্থের চাইতে বেশী মূল্যের অর্থ দাবী  করিতে পারিবে না ।

উপধারা-(৪) যখন (১) উপধারার অধীনে কোনো দরখাস্ত দাখিল করা হয় তখন ক্রেতা, তাহাদের মধ্যে যদি কেহ থাকে তাহাকে সহ যে কোনো অবশিষ্ট সহ-শরীক প্রজা ও হস্তান্তরিত সম্পত্তির সংলগ্ন ভূমির দখলকার প্রজাগণ (১) উপধারায় বর্ণিত সময়ের মধ্যে বা (৩) উপধারার খ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দরখাস্তের নোটিশ জারীর তারিখ হইতে দুই মাসের মধ্যে, যাহা আগে ঘটিবে, ঐ দরখাস্তে যোগদানের জন্য দরখাস্ত দিতে পারিবে; কোন সহ-শরীক বা হস্তারিত সম্পত্তির লাগা ভূমির দখলদার প্রজা যে (১) উপধারা বা অত্র উপধারা অনুযায়ী দরখাস্ত করে নাই অত্র ধারা অনুযায়ী তাহার খরিদ করার আর কোনো অধিকার থাকিবে না ।

উপধারা-(৫) (ক) (অ) যদি কোনো সহ-শরীক প্রজা, যাহার স্বত্ব ওয়ারীশসূত্রে উদ্ভব হইয়াছে;

(আ) কোনো সহ-শরীক প্রজা যাহার স্বত্ব খরিদসূত্রে উদ্ভব হইয়াছে এবং

(ই) যদি অত্র ধারা মোতাবেক হস্তান্তরিত সম্পত্তির সংলগ্ন ভূমির দখলকার প্রজ্ঞা আবেদন করে এবং উহার শর্তাবলী পালন করে তাহা হইলে আবেদনকারী বা আবেদনকারীরা অত্র ধারায় বর্ণিত ক্রমানুসারে খরিদ করিবার অগ্রাধিকার পাইবে ।

(খ) যদি অত্র ধারা মোতাবেক হস্তান্তরিত সম্পত্তির সংলগ্ন ভূমির দখলদার প্রজা আবেদন করে তবে আদালত এইরূপ প্রজাগণের মধ্যে নিম্নলিখিত বিবেচনায় অগ্রাধিকার ক্রমিক অনুযায়ী নির্ধারণ করিবেন-

(অ) দরখাস্তকারী প্রজাদের প্রত্যেকের দখলে থাকা মোট জমির পরিমাপ;

(আ) প্রজার সংলগ্ন ভূমি বসত বাড়ীর ভূমি অথবা অন্য প্রকারের ভূমি কিনা;

(ই) সংলগ্নতার বিস্তৃতি;

(ঈ) আবেদনকারীর সংলগ্ন ভূমির দখল লাভের প্রয়োজনীয়তা কতখানি; এবং

(উ) আবেদনকারীর ইজমেন্টের অধিকার, যদি কিছু থাকে ।

উপধারা-(৬) (ক) (৪) উপধারা অনুযায়ী যে সময়ের মধ্যে আবেদন দাখিল করা যাইতে পারে সে সময় অতিবাহিত হইবার পর অত্র ধারার শর্তাবলী অনুসারে আদালত নির্ধারণ করিবেন যে, (১) উপধারা বা (৪) উপধারা অনুযায়ী দায়েরকৃত আবেদনসমূহের মধ্যে কোনটির অনুমতি প্রদান করিবেন;

(খ) যদি আদালত দেখিতে পান যে, অত্র ধারা অনুযায়ী দায়েরকৃত দরখাস্তসমূহের অনুমতির আদেশ একাধিক দরখাস্তকারীর অনুকূলে দিতে হইবে তবে আদালত এইরূপ প্রত্যেক দরখাস্তকারী কতৃক যেই পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করিতে হইবে তাহা নিরূপণ করিবেন ও অর্থ ন্যায়ানুগতভাবে ভাগ করিবার পর আদেশ প্রদান করিবেন যে, দরখাস্তকারী অথবা দরখাস্তকারীগণ যাহারা (৪) উপধারা মোতাবেক মূল দরখাস্তে যোগদান করিয়াছেন তাহার বা তাহাদের দ্বারা পরিশোধযোগ্য অর্থ আদালত যেমন সঙ্গত মনে করিবেন তেমন সময়ের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য আদেশ দিবেন এবং এইরূপ কোনো দরখাস্তকারী যদি উক্ত সময়ের মধ্যে অর্থ জমা না দেয় তাহা হইলে তাহার দরখাস্ত খারিজ হইয়া যাইবে ।

উপধারা-(৭) (ক) (৬) উপধারার (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যে সময়ের মধ্যে জমা, যদি কিছু থাকে, দিতে হইবে সেই সময় অতিবাহিত হইলে আদালত অত্র ধারা মোতাবেক খরিদ করিবার অধিকারী ও ইহার শর্তাবলী পালন করিয়াছে এইরূপ আবেদনকারী অথবা আবেদনকারীগণ দ্বারা দায়েরকৃত আবেদন অথবা আবেদনসমূহ অনুমোদন করিয়া আদেশ প্রদান করিবেন এবং যেক্ষেত্রে এইরূপ আদেশ একাধিক আবেদনকারীর অনুকূলে প্রদান করিতে হয় সেক্ষেত্রে জোতটি অথবা জোতের খণ্ড অথবা অংশকে তাহাদের মধ্যে এইরূপভাবে ভাগ করিবেন যাহা আদালতের কাছে ন্যায়সংগত বলিয়া গণ্য হয় এবং (১) উপধারার অধীন যদি আবেদনকারী বা আবেদনকারীগণ কোন অর্থ ফেরত পাইবে বলিয়া প্রতিপন্ন হয় তাহা হইলে (৬) উপধারার অনুচ্ছেদ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আবেদনকারী বা আবেদনকারীগণ কর্তৃক দেওয়া জমার অর্থ হইতে ফেরত পাইবে ।

(খ) হস্তান্তরের জন্য ক্রেতা কর্তৃক পরিশোধিত মূল্যের টাকা, এইরূপ টাকার উপর শতকরা বার্ষিক দশ টাকা হারে ক্ষতিপূরণসহ, হস্তান্তরের তারিখ হইতে জোতের অথবা খণ্ডের অথবা অংশের খাজনা বাবদ তত্‍কর্তৃক পরিশোধিত টাকা, যদি কিছু থাকে, এবং এইরূপ জোত অথবা খণ্ডের বা অংশের দায়মুক্তি বা উন্নয়নের জন্য তত্কর্তৃক ব্যয়িত টাকা, যদি কিছু থাকে, (৩) উপধারা মোতাবেক দেওয়া জমা হইতে ক্রেতাকে পরিশোধ করার জন্য আদালত একই সময় নির্দেশ প্রদানপূর্বক আদেশ দান করিবেন ।

উপধারা-(৮) (৭) উপধারা মোতাবেক কোনো বিভাগাদেশ জোতের বিভাজন হিসাবে গণ্য হইবে না ।

উপধারা-(৯) (৭) উপধারা মোতাবেক আদেশ প্রদানের তারিখ হইতে -(ক) হস্তান্তরের দরুন জোত অথবা খণ্ডে বা অংশে ক্রেতার উদ্ভুত অধিকার, স্বত্ব স্বার্থ উক্ত উপধারা অনুযায়ী প্রদত্ত যে কোনো আদেশের সাপেক্ষে সমস্ত দায়, যাহা হস্তান্তরের তারিখের পরে সৃষ্ট হইয়াছে, মুক্ত হইয়া, অবস্থাভেদে সহ-শরীক প্রজা বা হস্তান্তরিত সম্পত্তির সংলগ্ন ভূমির দখলকার প্রজা বা হস্তান্তরিত সম্পত্তির সংলগ্ন ভূমির দখলকার প্রজাগণের, যাহাদের খরিদ করিবার আবেদন (৭) উপধারা মোতাবেক মঞ্জুর হইয়াছে, তাহাদের উপর ন্যস্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;

(খ) ক্রেতার হোল্ডিং অথবা খণ্ডের বা অংশের খাজনা বাবদ দায় হস্তান্তরের তারিখ হইতে লোপ পাইবে এবং সহ-শরীক প্রজাগণ অথবা হস্তান্তরিত সম্পত্তি সংলগ্ন ভূমির দখলকার প্রজাগণের যাহাদের খরিদ করিবার আবেদন এইরূপে মঞ্জুর হইয়াছে তাহারা ক্রেতার কাছে প্রাপ্য এইরূপ যে কোনো খাজনার নিমিত্ত দায়ী থাকিবে ।

(গ) আদালত এইরূপ আবেদনকারী বা আবেদনকারীগণের দরখাস্তের প্রেক্ষিতে তাহার অথবা তাহাদের উপর অর্পিত সম্পত্তির দখলে তাহাকে অথবা তাহাদিগকে, সে যাহাই হউক, বহাল করিতে পারিবেন ।

উপধারা-(১০) অত্র ধারার কোনো কিছুই প্রয়োগ করা যাইবে না-

(ক) জমার কোনো সহ-শরীক, যাহার স্বার্থ খরিদসূত্রে ছাড়া অন্য উপায়ে উদ্ভব হইয়াছে, এইরূপ সহ-শরীকের কাছে ভূমি হস্তান্তর করা হইলে; বা

(খ) বিনিময় অথবা বাটোয়ারামূলে, হস্তান্তর করা হইলে; বা

(গ) উইল অথবা দানমূলে স্বামী অথবা স্ত্রীর উইলকারী অথবা দাতা তাহার আনুকূলে বা কোনো উইলকারী অথবা দাতা তাহার তিন ডিক্রির মধ্যে কোনো রক্তের সম্পর্কিত আত্নীয়ের অনুকূলে, (দান অথবা হেবামূলে, আর্থিক বিনিময়ের হেবা বিল এওয়াজ ছাড়া) হস্তান্তর করিলে; বা

(ঘ) সরল বা সম্পূর্ণ খাই খালাসী বন্ধক বা, যতক্ষণ পর্যন্ত বন্ধক মুক্তকরণের অধিকার হরণের চূড়ান্ত আদেশ অথবা ডিক্রি প্রদান করা না হয়, কোনো বন্ধক দ্বারা শর্তাধীন বিক্রয় করা হইলে; বা

(ঙ) মুসলিম আইনের বিধান মোতাবেক সৃষ্ট ওয়াকফ; অথবা

(চ) কোনো ব্যক্তির জন্য আর্থিক সুবিধা সংরক্ষণ ছাড়া কোনো ধর্মীয় অথবা দাতব্য উদ্দেশ্য উত্সর্গ করা হইলে ।

উপধারা-(১১) অত্র ধারা কোনো কিছুই মুসলিম আইনের অধীন কোনো অগ্রক্রয়ের অধিকার হইতে কোনো ব্যক্তিকে বঞ্চিত করিতে পারিবে না ।

উপধারা-(১২) যে আদালতে সংশ্লিষ্ট ভূমির দখল সংক্রান্ত মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করার এখতিয়ার আছে, সেই আদালতে এই ধারার অধীনে দরখাস্ত দাখিল করিতে হইবে ।

উপধারা-(১৩) অত্র ধারাবলে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো আদেশের বিরুদ্ধে সাধারণ দেওয়ানী আপিল আদালতে আপিল দায়ের করা চলিবে । কিন্তু অন্য কোনো আইনে আপাতত অন্যরূপ  কিছু বলবত্‍  থাকিলেও প্রথম আপিল আদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় আপিল দায়ের করা চলিবে না ।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা ৯৭ ( আদিবাসী বা উপজাতীয়দের দ্বারা ভূমি হস্তান্তরে বিধি-নিষেধ )

উপধারা-(১) সরকার সময় সময় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা করিতে পারিবেন যে, এই ধারার বিধানাবলী কোনো জেলা অথবা স্থানীয় এলাকার নিম্নলিখিত আদিবাসী সমাজ অথবা গোত্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে এবং এইরূপ সমাজ এবং গোত্র এই ধারার উদ্দেশ্যে আদিবাসী হিসাবে গণ্য হইবে এবং এইরূপ বিজ্ঞপ্তির প্রকাশ চূড়ান্ত প্রমাণ হইবে যে, এই ধারার বিধানাবলী এইরূপ সমাজ ও গোত্রের বেলায় প্রযোজ্য হইয়াছে যথা : সাঁওতাল, বানিয়াস, ভুঁইয়াম ভূমিজ, দালুস, গণ্ডা, হাদী, হাজং, হো,খারিয়া, খারওয়ার, কোরা, কোচ (ঢাকা বিভাগ), মগ (বাখেরগঞ্জ জেলা), মাল ও সুরিয়া, পাহাড়িয়া, মাচ, মাণ্ডা, মণ্ডিয়া, ওড়াং ও তোড়ি ।

উপধারা-(২) অত্র ধারার যেরূপ বিধান রাখা হইয়াছে উহা ব্যতীত কোনো আদিবাসী রায়ত কর্তৃক তাহার জোত বা উহার অংশে তাহার স্বত্বের কোনো হস্তান্তর বৈধ হইবে না যদি ইহা বাংলাদেশের ডমিসাইল্ড বা স্থায়ীভাবে বসবাসকারী আদিবাসী যাহার কাছে এইরূপ জোত অথবা উহার অংশ ৮৮ ও ৯০ ধারা অনুযায়ী হস্তান্তর করা যায় তাহার কাছে হস্তান্তর করা না হইলে ।

উপধারা-(৩) যদি কোনো ক্ষেত্রে আদিবাসী রায়ত অপর কোনো ব্যক্তি যে এইরূপ আদিবাসী নহে তাহার কাছে জোত অথবা উহার খণ্ড প্রাইভেট বিক্রি, দান বা উইল মাধ্যমে হস্তান্তর করিলে ইহার স্বপক্ষে অনুমতির জন্য যে রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট আবেদন করিতে পারিবে ও রাজস্ব কর্মকর্তার ৮৮ ও ৯০ ধারার বিধানাবলী বিবেচনায় রাখিয়া দরখাস্তের উপর যাহা যথাযথ মনে করিবেন সেইরূপ আদেশ প্রদান করিবেন ।

উপধারা-(৪) (৩) উপধারায় উল্লেখিত প্রত্যেক হস্তান্তর নিবন্ধনকৃত দলিলমূলে করিতে হইবে এবং দলিল নিবন্ধনকৃত হওয়ার আগে জোতটি বা ইহার যে কোনো খণ্ড হস্তান্তরিত হইলে দলিল অনুযায়ী এবং হস্তান্তরের শর্তাবলী অথবা চুক্তি অনুযায়ী রাজস্ব কর্মকর্তার লিখিত সম্পত্তি গ্রহণ করিতে হইবে ।

উপধারা-(৫) একজন আদিবাসী রায়ত তাহার জমি শুধুমাত্র এক প্রকারের বন্ধক যথা সম্পূর্ণ খাইখালাসী বন্ধক প্রদানের ক্ষমতায় সীমাবদ্ধ ।

তবে শর্ত এই যে, কৃষির উদ্দেশ্যে ঋণ প্রাপ্তির জন্য বা কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন বা সমবায় সমিতির নিকট হইতে কৃষির উদ্দেশ্যে ঋণ প্রাপ্তির বেলায় এই উপধারায় কোনো কিছুই প্রযোজ্য হইবে না ।

উপধারা-(৬) একজন আদিবাসী রায়ত অপর কোনো বাংলাদেশী ডমিসাইল্ড অথবা বাংলাদেশে স্থায়ী বসবাসকারী আদিবাসী যাহার সহিত ৯৫ ধারার (১) উপধারা অনুযায়ী সম্পূর্ণ খাইখালাসী চুক্তিবদ্ধ হওয়া যায় তাহার সহিত তাহার জোতের অন্তর্ভূক্ত যে কোনো ভূমিকে যে কোনো ব্যক্তি অথবা অব্যক্ত চুক্তির মাধ্যমে যে কোনো সময়ের জন্য যাহা কোনো মতেই সাত বত্সরের অধিক হইবে না বা হইতে পারে না এইরূপ সময়ের জন্য সম্পূর্ণ খাইখালাসী বন্ধক চুক্তিতে আবদ্ধ হইতে পারে ।

উপধারা-(৭) কোনো আদিবাসী রায়ত এই ধারায় বিধানসমূহ লংঘন করিয়া কোনো হস্তান্তর করিলে উহা বাতিল হইবে ।

উপধারা-(৮) (ক) যদি এই ধারার বিধানসমূহ লংঘন করিয়া কোনো আদিবাসী রায়ত কর্তৃক যদি কোনো জোত বা ইহার অংশ হস্তান্তর করে তাহা হইলে রাজস্ব কর্মকর্তার নিজ উদ্যোগে বা ইহার স্বপক্ষে তাহার বরাবরে পেশকৃত দরখাস্তের ভিত্তিতে লিখিত আদেশবলে এইরূপ হস্তান্তর গ্রহীতাকে জোত অথবা অংশ হইতে উচ্ছেদ করিবেন :

তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ আদেশের আগে হস্তান্তর গ্রহীতাকে এইরূপ উচ্ছেদের জন্য কারণ দর্শানোর সুযোগ দিতে হইবে ।

(খ) (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজস্ব কর্মকর্তা কোনো আদেশ প্রদান করিলে-

(অ) তিনি হয় আদিবাসী বা তাহার উত্তরাধিকারী বা তাহার আইনসংগত প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তরিত ভূমি প্রত্যার্পণ করিবেন; বা

(আ) হস্তান্তরকারী বা তাহার উত্তরাধিকারী বা তাহার আইনসংগত প্রতিনিধি বা পাওয়া গেলে ভূমি সরকারের উপর ন্যস্ত হইয়াছে বলিয়া ঘোষণা দিবেন এবং রাজস্ব কর্মকর্তা উহা অন্য কোনো আদিবাসীর কাছে বন্দোবস্ত দিবেন ।

উপধারা-(৯) আপাতত বলবত্‍ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোনো আদালত কোনো আদিবাসী রায়তের জোত বা ইহার অংশের স্বত্ব বিক্রয়ের নিমিত্ত ডিক্রি অথবা আদেশ প্রদান করিতে পারিবেন না ।

তবে শর্ত এই যে, জোতের বকেয়া ভূমি রাজস্ব আদায়ের জন্য বা সরকার বা কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন বা সমবায় সমিতি কর্তৃক কৃষির উদ্দেশ্যে জোত-এর জামানত সাপেক্ষে প্রদত্ত ঋণ আদায়ের জন্য এই আইনের বিধানসমূহ মোতাবেক সার্টিফিকেট কার্যকর করিবার নিমিত্ত কোনো আদিবাসীর জোত বিক্রি করা যাইতে পারে ।

উপধারা-(১০) সরকার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঘোষণা করিতে পারিবেন যে, এই ধারা কোনো জেলা বা স্থানীয় এলাকার যে কোনো শ্রেণী বা গোত্র যাহার ক্ষেত্রে (১) উপধারা অনুযায়ী ইহা প্রয়োগ করা হইয়াছে তাহার বেলায় এই ধারা প্রয়োগ হইতে বিরত থাকিবে ।

ধারা-৯৮ ( রায়ত এবং অকৃষি প্রজাগণ খাজনা পরিমার্জন )

অত্র অধ্যায়ে বর্ণিত বিধান ছাড়া কোনো রায়ত অথবা অকৃষি প্রজার খাজনা বৃদ্ধি, হ্রাস অথবা পরিবর্তন করা যাইবে না ।

ধারা ৯৮ক (কতিপয় ক্ষেত্রে খাজনা নির্ধারণ অথবা পুনঃনির্ধারণ )

উপধারা-(১) অত্র আইনের অন্যত্র ভিন্নরূপ বিধান থাকা সত্বেও, ভূমির খাজনা নির্ধারণ এবং পুনঃনির্ধারণ করা বৈধ হইবে-

(ক) যে ক্ষেত্রে রায়ত অথবা অকৃষি প্রজা কর্তৃক দখলিকৃত ভূমির খাজনা ৪র্থ অধ্যায় অথবা ১৪৪ ধারার অধীনস্থ নির্ধারণ করা হয় নাই অথবা উক্ত ভূমি সম্বন্ধীয় খাজনা ১০৭ ধারার অধীনে নির্ধারণ করা হয় নাই; বা

(খ) যেখানে কোনো ভূমির খাজনা ক অনুচ্ছেদে উল্লেখিত কোনো বিধান অনুযায়ী কৃষিভূমি হিসাবে নির্ধারণ করা হইয়াছে যাহা পরবর্তীকালে অকৃষি ভূমি হিসাবে ব্যবহার করা হইয়াছে অথবা অকৃষি ভূমি হিসাবে নির্ধারণ করা হইয়াছে যাহা পরবর্তীকালে কৃষি ভূমি হিসাবে ব্যবহার করা হইয়াছে ।

উপধারা-(২) (১) উপধারার অধীন খাজনা নির্ধারণ অথবা পুনঃনির্ধারণের বেলায় জেলা প্রশাসক ২৬ ধারায় উল্লেখিত নীতিসমূহ বিবেচনা করিবেন;

তবে শর্ত থাকে যে, জেলা প্রশাসক এইরূপ এলাকায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন না যেখানে ১৪৪ ধারা মোতাবেক খতিয়ান প্রস্তুত অথবা পুনঃপরীক্ষণ করা হইয়াছে :

আরো শর্ত থাকে যে, রায়ত বা প্রজার উপস্থিত হওয়ার এবং এই বিষয়ের শুনানীর জন্য কমপক্ষে ১৫ দিনের নোটিশ না দিয়া এই ধারা মোতাবেক কোনো  খাজনা নির্ধারণ অথবা পুনঃনির্ধারণ সমাধা করা হইবে না ।

উপধারা-(৩) যে ক্ষেত্রে কোন জোতের একটি অংশ অকৃষি কাজের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয় সেক্ষেত্রে ১০৭ ধারার (৩) উপধারার উল্লেখিত নীতি সমূহের যতখানি প্রযোজ্য হয় ততখানি মোতাবেক উক্ত অংশ পৃথক প্রজাস্বত্বরূপে গঠিত হইবে এবং খাজনা নির্ধারণ এবং পুনঃনির্ধারণ এই ধারা মোতাবেক সমাধা করা যাইবে ।

ধারা -৯৯ (খাজনার হার নির্ধারণ এবং খাজনার তালিকা প্রণয়নের আদেশ )

 উপধারা-(১) সরকার রাজস্ব অফিসারগণকে নির্দেশ প্রদান করিয়া আদেশ দিতে পারিবেন-

(ক) অত্র অধ্যায়ের বিধান এবং এতদ্উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধিমালা অনুযায়ী যে কোনো জেলা অথবা জেলার অংশ অথবা স্থানীয় এলাকার জন্য খাজনার হার নির্ধারণ করা ও নির্ধারিত ফরমে এবং নিয়মে খাজনার হারের ছক প্রণয়ন করাইতে যাহাতে ঐ নির্ধারিত খাজনার হার তত্সহ অপরাপর নির্ধারিত বিবরণসমূহ সুনির্দিষ্ট থাকিবে; এবং

(খ) যে কোনো জেলা, জেলার অংশ অথবা স্থানীয় এলাকার খাজনার হারের ছক অত্র অধ্যায়ের অধীনে প্রণয়ন ও বহালের পর উক্ত জেলা অথবা জেলার অংশ অথবা এলাকার সমস্ত জনগণের জন্য ন্যায্য এবং ন্যায়সংগত খাজনা নির্ধারণ করিতে এবং নির্ধারিত ফরমে এবং নিয়মে খাজনা নির্ধারণ বিবরণী প্রণয়ন করিতে যাহাতে উক্ত নির্ধারিত খাজনা তত্সহ অপরাপর বিবরণসমূহ সুনির্দিষ্ট থাকিবে ।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-১০০ (খাজনার হার নির্ধারণের পদ্ধতি )

উপধারা-(১) যেক্ষেত্রে ৯৯ (১) ধারার (ক) অনুচ্ছেদের অধীনে কোনো আদেশ প্রদান করা হয় সেক্ষেত্রে উক্ত আদেশে উল্লেখিত এলাকার জন্য খাজনার হার নির্ধারণের উদ্দেশ্যে রাজস্ব অফিসার ভূমির অবস্থা ও উক্ত এলাকা যদি কৃষি এলাকা হয় তবে উক্ত এলাকার উত্পন্ন ফসল বিবেচনা করিয়া তিনি যেরূপ প্রয়োজনীয় মনে করিবেন সেইরূপভাবে উক্ত এলাকাকে কয়েকটি সুবিধাজনক ইউনিটে ভাগ করিবেন ও রাজস্ব অফিসার অতঃপর উক্ত প্রতি ইউনিটের ভিন্ন শ্রেণীসমূহের ভূমির খাজনার হারসমূহ নির্ধারণ করিবেন ।

উপধারা-(২) রাজস্ব অফিসার (১) উপধারার অধীনে বিভিন্ন শ্রেণীসমূহের কৃষি ভূমির খাজনার হারসমূহ নির্ধারণের বেলায় নিম্নলিখিত বিষয়াদি বিবেচনা করিবেন-

(ক) যে শ্রেণীর ভূমির জন্য খাজনার হার নির্ধারণ করা হইতেছে উহার মাটির প্রকৃতি এবং সাধারণ উত্পাদন ক্ষমতা;

(খ) নির্ধারিত নিয়মে প্রতি একর ভূমির স্বাভাবিক উত্পাদন নির্ধারণ;

(গ) যে বত্সরগুলিতে ফসলের মূল্য অস্বাভাবিক ছিল সেই বত্সরসমূহ বাদ দিয়া বিগত বিশ বত্সরের ফসলের মূল্য অস্বাভাবিক ছিল সেই বত্সরসমূহ বাদ দিয়া বিগত বিশ বত্সরের ফসলের গড় মূল্যের উপর ভিত্তি করিয়া নির্ধারিত উত্পাদিত ফসলসমূহের গড়মূল্য;

(ঘ) ঐরূপ ভূমি চাষের ক্ষেত্রে সেচ অথবা নর্দমা অথবা অপর কোনো বিশেষ সুবিধা

(ঙ) বিশেষ ইউনিটে সরকারী অর্থ ব্যয়ে কৃষি উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ফলাফল ।

(চ) বাদ দেওয়া হইয়াছে ।

উপধারা-(৩) (১) উপধারার অধীন (যে কোনো শ্রেণীর কৃষি ভূমির ) একর প্রতি খাজনার হার ঐরূপ প্রতি একর ভূমির উত্পাদিত ফসলের মোট মূল্যের দশ ভাগের এক ভাগের বেশী হইবে না যাহা ঐরূপ প্রতি একর ভূমির স্বাভাবিক উত্পাদন (২) উপধারার (২) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত উক্ত উত্পাদিত ফসলের নির্ধারিত নিয়মে হিসাবকৃত গড় দাম দ্বারা বৃদ্ধি করিয়া প্রাপ্ত হয়;

উপধারা-(৪) রাজস্ব অফিসার (১) উপধারার অধীনে বিভিন্ন শ্রেণীর অকৃষি ভূমির খাজনার হার নির্ধারণার্থে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ বিবেচনা করিবেন ।

(ক) অনুরূপ সুবিধার অথবা অনুরূপ বর্ণনা সম্বলিত পার্শ্ববর্তী অকৃষি ভূমির জন্য সাধারণভাবে সরকারকে প্রদত্ত খাজনার হার;

(খ) ৯৯ ধারার অধীন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অব্যবহিত পূর্বে নির্ধারিত নিয়মে হিসাবকৃত ঐ জমির অথবা পার্শ্ববর্তী অনুরূপ ভূমির বাজার দাম;

(গ) প্রজাস্বত্বে বিশেষ শর্তসমূহ এবং অনুসঙ্গ যদি থাকে; এবং

(ঘ) সরকারী খরচে নির্দিষ্ট ইউনিটে উন্নয়নমূলক কার্যের ফলাফলঃ

তবে শর্ত থাকে যে, (১) উপধারার অধীনে নির্ধারিত যে কোনো শ্রেণীর অকৃষি ভূমির খাজনার হার আবাসিক এলাকার বেলায় উক্ত বাজার দামের শতকরা এক চতুর্থভাগের বেশী হইবে না ও অন্য কোনো এলাকার বেলায় উক্ত বাজার দামের শতকরা আধ ভাদের বেশী হইবে না।

উপধারা-(৫) (৪) উপধারার (৪) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত অনুরূপ বর্ণনা সম্বলিত পাশ্ববর্তী ভূমির জন্য সাধারণভাবে প্রদত্ত খাজনার ইউনিটে অবস্থিত ঐ ভূমির বর্তমান খাজনাসমূহ একত্র করিয়া মোট টাকাকে ইউনিটের মোট পরিমাণ দিয়া ভাগ করিয়া হিসাব করা হইবে ।

ধারা-১০১ (খাজনার হারের ছকসমূহ প্রাথমিক এবং চূড়ান্তভাবে প্রকাশ ও নির্ধারিত উর্ধ্বতন রাজস্ব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইহার অনুমোদন )

উপধারা-(১) যেক্ষেত্রে রাজস্ব অফিসার খাজনার হারসমূহের কোনো ছক প্রণয়ন করেন সেক্ষেত্রে তিনি ইহার একটি খসড়া নির্ধারিত সময়ের জন্য ইহার সংগে সম্বন্ধযুক্ত এলাকায় অথবা গ্রামে প্রকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন ।

উপধারা-(২) খাজনার হার সমূহের ছকের কোনো লিখনীর বিরুদ্ধে আপত্তিকারী ব্যক্তি (১) উপধারা অনুযায়ী প্রকাশের ১ম দিন হইতে ৩০ দিনের ভিতর রাজস্ব অফিসারের কাছে দরখাস্ত করিতে পারিবে ও রাজস্ব অফিসার ঐরূপ কোনো আপত্তি বিবেচনা করিবেন এবং ছকের পরিবর্তন অথবা সংশোধন করিতে পারিবেন ।

উপধারা-(৩) উক্ত সময়ের মধ্যে যদি কোনো আপত্তি না জানানো হয় অথবা অথবা যদি আপত্তি জানানো হয় তবে উহার নিষ্পত্তির পর রাজস্ব অফিসার তাহার প্রস্তাবের কারণসমূহের পূর্ণ বিবরণ তত্সহ প্রয়োজনীয় বিবরণ এবং প্রতি শ্রেণীর ভূমির বর্তমান খাজনার হার ও প্রাপ্ত আপত্তিসমূহের সংক্ষিপ্ত সারসহ তাহার কার্যক্রমসমূহ নির্ধারিত রাজস্ব কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিবেন ।

উপধারা-(৪) উক্ত উর্ধ্বতন রাজস্ব কর্তৃপক্ষ (৩) উপধারার অধীনে দাখিলকৃত ছক পরিবর্তনসহ অথবা পরিবর্তন ছাড়া অনুমোদন করিতে পারিবেন অথবা পুনঃ পরীক্ষণের জন্য ফেরত্‍ পাঠাইতে পারিবেন ।

উপধারা-(৫) যেক্ষেত্রে খাজনার হারসমূহের ছক উক্ত উর্ধ্বতন রাজস্ব কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হয় সেক্ষেত্রে অনুমোদনের আদেশকে ইহা প্রণয়নের নিমিত্ত কার্যক্রম অত্র আইন মোতাবেক সঠিকভাবে পরিচালিত হইয়াছে বলিয়া চূড়ান্ত সাক্ষ্যরূপে গণ্য করা হইবে এবং প্রতি শ্রেণীর ভূমির জন্য ছকে দেখানো হার প্রযোজ্য এলাকায় অবস্থিত উক্ত শ্রেণীর জন্য প্রদান যথাযথ ও ন্যায়সংগত হার বলিয়া অনুমান করা হইবে ।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-১০২ (সর্বোচ্চ হার হিসাবে ছকে প্রদর্শিত হার )

১০১ ধারার অধীনে অনুমোদিত খাজনার হারের ছকে দেখানো যে কোন শ্রেণীর ভূমির জন্য খাজনার হার সেই সর্বোচ্চ পরিমাণ হইবে যাহা ঐরূপ শ্রেণীর ভূমির জন্য একজন রায়ত বা অকৃষি প্রজার খাজনা নির্ধারণ করা যাইবে ।

ধারা-১০৩ (খতিয়ানে যে সকল বিবরণ থাকিতে হইবে )

১০০ ধারার (২) এবং (৪) উপধারায় উল্লেখিত একক ও খাজনার হার যাহা অত্র অধ্যায়ের অধীনে উক্ত ইউনিটের অন্তর্গত বিভিন্ন শ্রেনীর ভূমির জন্য নির্ধারিত হয় তদবিষয়ের বিবরণ অত্র খণ্ডের অধীনে পরিচালিত ঐ এককের খতিয়ানের অংশ হিসাবে গণ্য হইবে ।

ধারা-১০৪ (খাজনার হারসমূহের স্থায়িত্বকাল)

যে ক্ষেত্রে কোনো জেলা, জেলার অংশ বা এলাকার এককের জন্য অত্র অধ্যায়ের হার নির্ধারিত হয় এবং ১০০ ধারায় অনুমোদিত খাজনার হারের ছকে প্রদর্শিত হয় সেক্ষেত্রে ঐ অনুমোদনের তারিখ হইতে কুড়ি (২০) বত্সর সময় অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত উহা পরিবর্তন করা যাইবে না ।

ধারা-১০৫ (খাজনা বৃদ্ধির কারণসমূহ ও সীমাবদ্ধতা )

উপধারা-(১) কোনো ভুমির জন্য কোনো রায়ত (অথবা অকৃষি প্রজার) প্রদেয় খাজনা এই জন্য বৃদ্ধি করা যাইবে যে, তদকর্তৃক দেয় খাজনার পরিমাণ যে এককে উক্ত ভূমি অবস্থিত এবং যে এককের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ১১১ ধারা মোতাবেক অনুমোদিত খাজনার হারের ছকভুক্ত সেই এককের অনুরূপ শ্রেণীসমূহের ভূমির জন্য এই অধ্যায়ের অধীনে নির্ধারিত খাজনার হারে হিসাবকৃত খাজনার পরিমাণ মূলত কম হয় ।

উপধারা-(২) যে সমস্ত ক্ষেত্রে অব্যবহিত পূর্ববর্তী বত্সরের দেয় খাজনার চেয়ে শতকরা ৫০ ভাগ বৃদ্ধি করা হয় ও অপর যে সমস্ত ক্ষেত্রে তিনি বিবেচনা করেন যে, তাত্ক্ষনিক খাজনা বৃদ্ধি দুর্ভোগ সৃষ্টি করিবে সেক্ষেত্রে রাজস্ব অফিসার এই মর্মে নির্দেশ দিতে পারিবেন যে, উক্ত খাজনা বৃদ্ধি বার্ষিক হিসাবে এই উদ্দেশ্যে তদকর্তৃক নির্ধারিত কয়েক বত্সরের জন্য কার্যকর হইবে ।

তবে শর্ত থাকে যে, অব্যবহিত পূর্ববর্তী বত্সরের যে সময় হইতে ১১৩ ধারা অনুযায়ী নতুন খাজনা হিসাব করা হয় বিশেষ বত্সরে খাজনা বৃদ্ধি উক্ত বত্সরের দেয় খাজনার শতকরা ৫০ ভাগের বেশী হইতে পারিবে না ।

 

ধারা-১০৬ (খাজনা কমানোর কারণসমূহ)

নিম্নলিখিত এক বা একাধিক কারণে রায়ত কর্তৃক দেয় কোনো জোতের খাজনা হ্রাস করা যাইবে যথাঃ

(ক) যদি কোনো রায়ত কর্তৃক দেয় খাজনা তাহার জোত ভূমি যেই ইউনিটে অবস্থিত সেই ইউনিটের অনুরূপ শ্রেণীসমূহের ভূমির জন্য এই অধ্যায়ের অধীনে নির্ধারিত এবং উক্ত ইউনিটের জন্য প্রযোজ্য খাজনার হারের ছকে অন্তর্ভুক্ত এবং ১০১ ধারায় অনুমোদিত খাজনা অপেক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশী হয় ।

(খ) বালি সঞ্চিত হওয়ার ফলে অথবা অপর কোনো আকস্মিক অথবা নিয়মিত প্রাকৃতিক কারণে যদি জোতের ভূমি খারাপ বা অনুর্বর হয়; এবং

(গ) যদি খাজনা শেষ নির্ধারিত হওয়ার সময় বিদ্যমান কোনো সেচ অথবা জল নিষ্কাষণ ব্যবস্থা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় বা সেই সময় বিদ্যমান কোন বাঁধ অথবা বেড়ী যদি ভাংগিয়া যায় এবং উহার ফলে জোতের ভূমি খারাপ বা অনুর্বর হয় ।

ধারা-১০৬ক (খাজনা হ্রাসের কারণ)

কোনো প্রজা স্বত্বের অকৃষি প্রজা কর্তৃক প্রদানযোগ্য খাজনা এই কারণে হ্রাস পাইতে পারে সে তদকর্তৃক প্রদানযোগ্য খাজনার পরিমাণে যে ইউনিটে ঐ প্রজাস্বত্বের অনুমোদিত খাজনার হারের ছকে অন্তর্ভুক্ত সেই ইউনিটের একই শ্রেণীর জমির এই অধ্যায় অনুযায়ী নির্ধারিত খাজনার হারে হিসাবকৃত খাজনার পরিমাণের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশী থাকে ।

ধারা-১০৭ (যথাযথ ও ন্যায়সংগত খাজনা নির্ধারণ)

উপধারা-(১)  অত্র অধ্যায়ের অধীনে খাজনার হারের কোনো ছক প্রণযন ও অনুমোদনের পর রাজস্ব অফিসার পূর্ববর্তী ধারাসমূহের বিধানবলী মোতাবেক সেই এলাকার খাজনার হারের ছক প্রযোজ্য হয় সেই এলাকার সমস্ত প্রজাগণের ন্যায্য ও ন্যায়সংগত খাজনা নির্ধারণের জন্য ও ৯৯ ধারার (১) উপধারার খ অনুচ্ছেদের নির্দেশ মোতাবেক খাজনা নির্ধারণ বিবরণী প্রণয়ণের জন্য অগ্রসর হইবেন ।

উপধারা-(২) রাজস্ব অফিসারের যথাযথ ও ন্যায়সংগত খাজনা নির্ধারণ এবং খাজনা নির্ধারণ বিবরণী প্রণয়ন করার উদ্দেশ্যে ঐরূপ প্রণয়নকৃত এবং অনুমোদিত খাজনার হারের ছকে বর্ণিত খাজনার হার দ্বারা চালিত হইবেন ।

তবে শর্ত থাকে যে, রাজস্ব অফিসার যদি লিখিত কারণ লিপিবদ্ধসাপেক্ষে বিবেচনা করেন যে, বিশেষ ক্ষেত্রে এবং বিশেষ বিশেষ এলাকায় উক্ত হারের প্রয়োগ অ-যথাযথ ও অন্যায়সংগত হইবে তবে তিনি উক্ত হার ঐ রূপ ক্ষেত্রেঅথবা এলাকায় প্রয়োগ করিতে বাধ্য নহেন ।

উপধারা-(৩) যেক্ষেত্রে অকৃষি ভূমি প্রজাস্বত্বে অন্তভূর্ক্ত অকৃষি ভূমি ছাড়া অন্য ভূমি নিয়া গঠিত হয় বা যেক্ষেত্রে ভূমির শ্রেণী বিন্যাস আংশিকভাবে কৃষি হইতে অকৃষিতে পরিবর্তিত হয় সেক্ষেত্রে রাজস্ব অফিসার ।

(অ) অকৃষি ও কৃষি ভূমির জন্য পৃথক প্রজাস্বত্ব গঠন করিবার জন্য প্রজাস্বত্বকে বিভক্ত করিবেন;

(অ) ঐরূপ গঠিত প্রজাস্বত্বের মধ্যে বর্তমান খাজনা বন্টন করিবেন ।

(ই) অত্র অধ্যায়ের বিধানবলী অনুযায়ী কৃষি এবং অকৃষি ভূমির জন্য ন্যায্য এবং ন্যায়সংগত খাজনা হিসাব করিবেন ।

ধারা-১০৮ (জরিপী খাজনা নির্ধারণ বিবরণীর প্রাথমিক প্রকাশনা ও সংশোধন)

উপধারা-(১) যেক্ষেত্রে খাজনা নির্ধারণ বিবরণী প্রণযন করা হয়, সেক্ষেত্রে রাজস্ব অফিসার নির্ধারিত উপায়ে ও নির্ধারিত সময়ের জন্য ইহার একটি খসড়া প্রকাশনার ব্যবস্থা করিবেন ও উক্ত সময়কালে কোনো কিছু বাদ পড়া সম্বন্ধে আপত্তি গ্রহণ এবং বিবেচনা করিবেন এবং সরকার কর্তৃক প্রস্তুত বিধিমালা অনুযায়ী উক্ত আপত্তিসমূহের নিষ্পত্তি করিবেন ।

উপধারা-(২) রাজস্ব অফিসার স্বীয় উদ্যোগে অথবা ক্ষতি গ্রস্থ পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১০৯ ধারা অনুযায়ী অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট খাজনা নির্ধারণ বিবরণী দাখিল করার আগে যে কোনো সময় উহাতে ভুক্ত খাজনার পরিমার্জন করিতে পারিবেন ।

তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট প্রজাকে হাজির হইবার এবং উক্ত বিষয়ে শুনানীর জন্য যুক্তিসংগত নোটিশ প্রদান না করিয়া কোনো অন্তর্ভুক্তির পরিমার্জন করা যাইবে না ।

ধারা-১০৯ (খাজনা নির্ধারণ বিবরণী অনুমোদন এবং চূড়ান্ত প্রকাশ ও স্বত্বলিপিতে ইহা অন্তর্ভুক্তকরণ)

উপধারা-(১) যেক্ষেত্রে ১০৮ ধারার অধীন সমস্ত আপত্তির নিষ্পত্তি ঘটে সেক্ষেত্রে রাজস্ব অফিসার  তাহার প্রস্তাবসমূহের কারণগুলি পূর্ণ বিবরণ এবং তদকর্তৃক গৃহীত আপত্তিসমূহের, যদি থাকে, সংক্ষিপ্তসার সম্বলিত খাজনা নির্ধারণ বিবরণী অনুমোদনের জন্য নির্দিষ্ট অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করিবেন ।

উপধারা-(২) অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ সংশোধনসমূহ বা সংশোধন ছাড়া খাজনা নির্ধারণ বিবরণী অনুমোদন করিতে পারিবেন অথবা পুনঃপরীক্ষণের নিমিত্ত ফেরত্‍ পাঠাইতে পারিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট প্রজাকে হাজির হওয়ার এবং ঐ বিষয়ে শুনানীর জন্য যুক্তিসঙ্গত নোটিশ প্রদান না করিয়া কোনো অন্তর্ভুক্তি সংশোধন অথবা বাদ অন্তর্ভুক্ত করা হইবে না ।

উপধারা-(৩) অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর রাজস্ব অফিসার চূড়ান্তরূপে খাজনা নির্ধারণ বিবরণী প্রণয়ন করিবেন এবং নির্ধারিত উপায়ে উহা প্রকাশ করিবেন ও এই খণ্ডের অধীনে রক্ষিত খাজনা নির্ধারণ বিবরণীর সহিত সম্বন্ধযুক্ত এলাকার জন্য খতিয়ানে ইহা অন্তর্ভূক্ত করিবেন ও ঐরূপ প্রকাশকে এই অধ্যায় মোতাবেক খাজনা নির্ধারণ বিবরণীর সহিত সম্বন্ধযুক্ত এলাকার জন্য খতিয়ানে ইহা অন্তর্ভুক্ত করিবেন ও ঐরূপ প্রকাশকে এই অধ্যায় মোতাবেক খাজনা নির্ধারণ বিবরণী যথাযথভাবে প্রস্তুত করা হইয়াছে মর্মে চূড়ান্ত সাক্ষ্য হিসাবে গণ্য হইবে ।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-১১০ (উর্ধ্বতন রাজস্ব অফিসারের সমীপে আপিল ও তদকর্তৃক রিভিশন)

উপধারা-(১) যদি কোনো আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল দায়ের করা হয় তবে সেই আদেশের  তারিখ হইতে দুই মাসের মধ্যে ১০৮ ধারার অধীন উত্থাপিত আপত্তির প্রেক্ষিতে রাজস্ব অফিসার কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যেক আদেশের বিরুদ্ধে অথবা ১০৯ ধারার অধীন অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ কতৃর্ক প্রদত্ত কোনো আদেশের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট রাজস্ব কর্তৃপক্ষের সমীপে আপিল করা যাইবে ।

উপধারা-(২) এই অধ্যায়ের অধীনে ভূমি প্রশাসন বোর্ড যে কোনো ক্ষেত্রে ইহার স্বীয় উদ্যোগে বা কোনো দরখাস্তের ভিত্তিতে ১০৯ (২) ধারার অধীন খাজনা নির্ধারণ বিবরণী অনুমোদনের আদেশের বা (১) উপধারা মোতাবেক উর্ধ্বতন রাজস্ব কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত আদেশের, যাহা পরে ঘটে, ছয় মাসের মধ্যে খাজনা নির্ধারণ বিবরণী অথবা উহার অংশ পরিমার্জনের নিমিত্ত নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেন, কিন্তু ইহা দ্বারা বিশেষ জজ কর্তৃক ১১১ ধারার অধীন প্রদত্ত আদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হইবে নাঃ

তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে হাজির হইবার এবং উক্ত বিষয় শুনানীর জন্য যুক্তিসংগত নোটিশ প্রদান না করিয়া ঐরূপ নির্দেশ প্রদান করা হইবে না ।

ধারা-১১১ (বিশেষ জজের নিকট আপিল)

উপধারা-(১)  ১০৮ ধারার অধীন দায়েরকৃত আপত্তির প্রেক্ষিতে রাজস্ব অফিসার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ দ্বারা অথবা ১০৯ ধারা অনুযায়ী অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত আদেশ দ্বারা ক্ষুদ্ধ কোনো ব্যক্তি আপিলের সহিত সম্বন্ধযুক্ত উপায়ে অত্র উদ্দেশ্যে সরকার কর্তৃক নিযুক্ত বিশেষ জজের নিকট আপিল করিতে পারিবে ।

তবে শর্ত থাকে যে, ১১০ ধারার (১) উপধারা অনুযায়ী এই ব্যাপারে নির্ধারিত উর্ধ্বতন রাজস্ব কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করা হয় নাই ।'

উপধারা-(২) হাইকোর্ট কর্তৃক রিভিশন এখতিয়ার প্রয়োগ করিয়া প্রদত্ত আদেশ কোনো আপিলে বিশেষ জজের আদেশ চূড়ান্ত হইবে এবং অত্র ধারায় বিশেষ জজের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করা চলিবে না ।

উপধারা-(৩) ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধির বিধানসমূহ অত্র ধারায় বিশেষ জজের কাছে দায়েরকৃত আপিলের বেলায় প্রযোজ্য হইবে ।

ধারা-১১১ক (ভুলসমূহ শুদ্ধকরণ এবং খাজনার বিবরণী পরিবর্তন)

১০৯ (৩) ধারার অধীন চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত  হওয়ার আগে যে কোনো সময় রাজস্ব অফিসার খাজনা নির্ধারণ বিবরণীতে করণিক ভুল শুদ্ধ করিতে পারিবেন এবং ১১০ এবং ১১১ ধারার অধীনে প্রদত্ত আদেশ কার্যকর করার জন্য যাহা প্রয়োজন করিতে পারিবেন ।

ধারা-১১২ (অত্র অধ্যায়ের অধীনে নির্ধারিত খাজনা সম্পর্কে অনুমান)

এই অধ্যায়ের অধীনে নির্ধারিত সমস্ত খাজনা শুদ্ধরূপে নির্ধারিত করা হইয়াছে এবং যথাযথ ও ন্যায়সংগত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে ।

ধারা-১১৩ (যে তারিখ হইতে কার্যকর হইবে)

যে ক্ষেত্রে অত্র অধ্যায় মোতাবেক কোনো এলাকার খাজনা রাজস্ব অফিসার নির্ধারিত হয় সেক্ষেত্রে উহা ১১০ এবং ১১১ ধারার বিধানসাপেক্ষে ১০৯ ধারার (৩) উপধারার অধীন খাজনা নির্ধারণ বিবরণী, যাহাতে উক্ত খাজনা নির্দিষ্ট করা হয়, চূড়ান্তভাবে প্রকাশের তারিখের পরবর্তী কৃষি বত্সরের প্রথম হইতে কার্যকর হইবে ।

ধারা-১১৪ (নির্ধারিত খাজনা যে সময় পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকিবে)

যেক্ষেত্রে অত্র অধ্যায় অনুসারে কোনো প্রকার খাজনা নির্ধারিত হয় সেক্ষেত্রে কুড়ি (২০ বত্সর) সময়ের মধ্যে উহা বৃদ্ধি করা যাইবে না এবং ১০৬ ধারার (খ) অনুচ্ছেদ অথবা (গ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত কারণ ছাড়া উক্ত সময়ের মধ্যে খাজনা কমানো যাইবে না ।

ধারা ১১৫ (দেওয়ানী আদালতের এখতিয়ারে বিধি-নিষেধ)

অত্র অধ্যায়ের অধীন খাজনার হার নির্ধারণ অথবা কোনো খাজনা নির্ধারণ অথবা খাজনার হার নির্ধারণে অথবা খাজনা নির্ধারণ বাদ সম্বন্ধে কোনো মামলা অথবা অপর কোনো আইনগত কার্যক্রম ১১১ ধারায় বর্ণিত বিষয় ছাড়া কোনো দেওয়ানী আদালতে দাখিল করা যাইবে না ।

ধারা ১১৬ (একই গ্রামে প্রজার জোতের সংযুক্তকরণ)

একই গ্রামের মধ্যে একই প্রজার যদি পৃথক একাধিক ভূখণ্ড থাকে, তবে উক্ত ভূখণ্ডগুলি কিংবা উহার কতিপয় যদি পৃথক প্রজাস্বত্বের অধীন হয়, তবে উক্ত ভূখণ্ডগুলি রাজস্ব কর্মকর্তার আদেশক্রমে একই প্রজাস্বত্বে সংযুক্ত করা যাইবে ।

ধারা ১১৭ (জোতের উপরিভাগ এবং উহাতে বিধি-নিষেধ)

উপধারা-(১) এই অংশের ভিন্ন কিছু থাকা সত্ত্বেও, রাজস্ব কর্মকর্তা- (ক) ১১৬ ধারা অনুযায়ী প্রজাস্বত্বের সংযুক্তির উদ্দেশ্যে, হয় স্বীয় উদ্যোগে না হয় এই উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক সহ-শরীক প্রজা কর্তৃক তাহার নিকট আবেদনক্রমে; বা

(খ) ১১৯ ধারা অনুযায়ী মালিকের জোতের একত্রীকরণের উদ্দেশ্যে, হয় তাহার নিজ উদ্যোগে না হয় এই উদ্দেশ্যে তাহার নিকট আবেদনক্রমে; বা

(গ) খাজনা বন্টনের জন্য এজমালী প্রজাস্বত্বের উপরিভাগের উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক সহ-শরীক কর্তৃক তাহার নিকট আবেদনক্রমে, সহ-শরীক প্রজাদের মধ্যে এজমালী প্রজাস্বত্বের উপরিভাগ এবং উহার বকেয়া খাজনাসহ, যদি থাকে তদকর্তৃক যথাযথ ও ন্যায়সংগত বিবেচিত খাজনার বন্টনের জন্য লিখিত আদেশ দ্বারা নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, ঐরূপ আদেশ প্রদান করা হইবে না যদি সংশ্লিষ্ট পক্ষদিগকে উপস্থিত হওয়ার এবং এই ব্যাপারে শুনারীর জন্য যুক্তিসঙ্গত নোটিশ প্রদান করা না হয়ঃ

আরও শর্ত থাকে যে, যেখানে (গ) দফা অনুযায়ী আদেশ প্রদান করা হয় এবং ইহার কারণে খাজনার বণ্টন প্রজাস্বত্বের অংশের খাজনা এক টাকার নিম্নে আণয়ন করে, সেখানে এক টাকার অংশ একটি পূর্ণ টাকায় পরিণত হইবে ।

উপধারা-(২) ১৯৬৭ সালের ৮ নম্বর অধ্যাদেশ দ্বারা বাদ দেওয়া হইয়াছে ।

উপধারা-(৩) একটি এজমালী জোতকে উপরিভাগ করিয়া যখন (১) উপধারা অনুযায়ী আদেশ প্রদান করা হয়, তখন ঐ উপরিভাগ মাঠে চিহ্ণিত হইতে পারে এবং ক্যাডেস্ট্রাল ম্যাপে প্রদর্শিত হইতে পারে ।

ধারা-১১৮ (এই ধারাটি ১৯৬৪ সালের ৬ নং আইন দ্বারা বাদ দেওয়া হইয়াছে )

ধারা-১১৯ (জোতের একত্রীকরণের জন্য আবেদন করার অধিকারী ব্যক্তি)

উপধারা-(১) একই বা পার্শ্ববর্তী সংলগ্ন গ্রামে জমি ভোগ বা দখলকারী দুই বা ততোধিক রায়ত তাহাদের জোত-জমা একত্রীকরণের জন্য রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন পেশ করিতে পারেন এবং এইরূপ একত্রিকরণের সহিত একটি পরিকল্পনাও পেশ করিতে পারেন ।

উপধারা-(২) কোনো গ্রাম বা সংলগ্ন গ্রামসমষ্টি দুই-তৃতীয়াংশের কম নহে এমন সংখ্যক রায়ত, যদি উক্তগ্রামে বা গ্রামসমূহের তিন-চতুর্থাংশের কম নহে এইরূপ কৃষি জমি ধারণ করিয়া থাকেন এবং তাহাদের জোত-জমাসমূহ একত্রীকরণের জন্য (১) উপধারার বিধান মোতাবেক আবেদন করেন, তাহা হইলে আবেদন উক্তগ্রাম বা গ্রামসমূহের সকল রায়তের পক্ষ হইতে করা হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে ।

ধারা-১২০ (আবেদন গ্রহণ)

উপধারা-(১) ১১৯ ধারা অনুযায়ী একত্রীকরণের  আবেদন পাওয়ার পর রাজস্ব কর্মকর্তা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত আবেদন সম্পর্কে অনুসন্ধান করিবেন এবং যদি অনুসন্ধান করার পর বিবেচনা করেন যে উক্ত আবেদন নাকচ করা জন্য অথবা একত্রীকরণ হইতে কোনো জমি বাদ দেওয়ার জন্য যথাযথ এবং যথেষ্ট কারণ আছে তাহা হইলে তিনি উক্ত আবেদন নাকচ করার আংশিক অথবা অনুমোদিত না হওয়ার কারণ প্রদর্শন করিয়া সুপারিশসহ আবেদনটি নির্ধারিত উর্ধ্বতন রাজস্ব কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করিবেন এবং উক্ত ঊর্ধ্বতন রাজস্ব কর্তৃপক্ষ ঐরূপ সুপারিশ পাওয়ার পর যাহা যথাযথ মনে করিবে ঐরূপ আদেশ প্রদান করিবে ।

উপধারা-(২) যদি রাজস্ব কর্মকর্তা (১) উপধারা অনুযায়ী কোনো সুপারিশ না করেন অথবা যদি উক্ত উর্ধ্বতন রাজস্ব কর্তৃপক্ষ রাজস্ব কর্মকর্তার সুপারিশ পাওয়ার পর রাজস্ব কর্মকর্তাকে আবেদন সম্পূর্ণ বা আংশিক স্বীকার করিয়া লওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করে, তাহা হইলে রাজস্ব কর্মকর্তার উক্ত আবেদন সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে যাহা যেখানে প্রযোজ্য হয় স্বীকার করিয়া লইবেন এবং এই অধ্যায়ের বিধানাবলী এবং এই আইন অনুযায়ী সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধিমালা অনুযায়ী উহা পরিচালনা করিবেন । 

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

[*] Previous page

Go to full version